১১ দফা দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে নৌযান শ্রমিকরা লাগাতার এই ধর্মঘট শুরু করে।ফলে সকালে ঢাকার সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
অনেকেই ঘাটে এসে কোনো লঞ্চ না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন।তবে দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাত ১২টার আগে ছেড়ে আসা ৪৩টি লঞ্চ সদরঘাটে এসেছে।
সরকার নির্ধারিত কাঠামোয় মালিকরা বেতন না দেওয়ায় এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানান ফেডারেশনের বরিশালের নেতারা।
গতকাল ঢাকায় শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শ্রমিক ফেডারেশন অংশ নেয়নি।
ধর্মঘটের কারণে বরিশাল থেকে ভোলা, মেহেন্দীগঞ্জসহ অভ্যন্তরীন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। লঞ্চগুলোকে মাঝ নদীতে নোঙ্গর করে রেখেছে শ্রমিকরা। তবে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো যথা নিয়মে মঙ্গলবার সকালে ঘাটে নোঙ্গর করেছে।
লঞ্চ মালিক সমিতির সহ সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেছেন, তাদের দাবিগুলো গেজেটে না উঠায় তারা কর্মবিরতি করছে।
অন্যদিকে মোংলায় বন্দর এলাকায় ১১ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে নৌযান (কার্গো, কোস্টার) শ্রমিকদের কর্মবিরতি।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দরা।
এ কর্মবিরতির ফলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলাসহ সারাদেশের নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তীতে পড়বে বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম পটল সাংবাদিকদের জানান ১১ দফা দাবি-
বাল্কহেডসহ সকল নৌযান ও নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ২০১৬ সালের ঘোষিত বেতন স্কেলের পূর্ণ বাস্তবায়ন, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদাণ ও হয়রানি বন্ধ, নদীর নাব্যতা রক্ষা, নদীতে প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপনসহ ১১ দফা দাবিতে মোংলাসহ সারাদেশে নৌযান চলাচল বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করবে নৌযান শ্রমিকেরা।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকল নৌযান শ্রমিকদের এ আন্দোলন কর্মসূচি একাত্মভাবে পালনের জন্য আহবান জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সারাদেশের প্রায় ২০ হাজার নৌযানের প্রায় ২ লাখ শ্রমিক মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করবে।
কর্মবিরতি সম্পর্কে এই নৌযান শ্রমিক নেতা আরও বলেন, শ্রম অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সোমবার যে সভা হয়েছে তাতে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। শ্রমিকদের একাংশের অর্থাৎ জাহাজ শ্রমিক ফেডারেশন ও বাল্কহেড-লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের কিছু লোকজন ছিলেন মাত্র।
তারা প্রত্যাহার কিংবা স্থগিত যাই বলুক না কেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনই মুলই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্মবিরতি শুরু করেছে।
তবে একাংশের যারা কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করেছে সেই সকল লোকজনের সিদ্ধান্তের সাথে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কোন সম্পৃক্তা নেই বলে দাবি এই নেতাদের।