সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের খুঁজে বের তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত একটি চক্র। পরে ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি করত একটি চক্র।
বিভিন্ন নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রক্সি পরীক্ষায় সহযোগি চক্রের সাত সদস্যকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শনিবার রাতে রাজধানীর কাফরুল ও লালবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- মাহমুদুল হাসান আজাদ, মোহাম্মদ নাহিদ, রাসেল আলী, রুহুল আমীন, খালেকুর রহমান টিটু, আহমেদ জুবায়ের সাইমন ও ইব্রাহিম।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি ইলেক্টনিক্স ডিভাইস, ১৬টি মাইক্রো হেডফোন, ১৫টি মোবাইল, ২৫টি সিম, বিভিন্ন পরীক্ষার পশ্নপত্র সমাধানে ব্যবহৃত চারটি বই উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) মাসুদুর রহমান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহন করবে তাদের খুঁজে বের করতে প্রথমে এ চক্রের একটা গ্রুপ কাজ করে। বিশেষ করে ফেসবুক, হোয়াটসআপে গ্রুপ খুলে টার্গেট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। পরে কীভাবে প্রশ্নপত্র দিবে, কীভাবে পাস করিয়ে দিবে এসব নিয়ে আলোচনার শেষে ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। বিশেষ করে বিসিএস পরীক্ষা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার চুক্তি করত এই চক্রটি।
পরীক্ষার আগে চক্রটি জামানত হিসেবে পরীক্ষার্থীর মূল সার্টিফিকেট, মার্কসিট ও সনদপত্র নিজেদের কাছে জমা রাখে। চুক্তি অনুযায়ী ভর্তি বা চাকরি পরীক্ষার্থী হলে প্রবেশের সময় কানের ভিতরে একটি ক্ষুদ্র ডিভাইস দেওয়া হয়। যেটা তল্লাশি বা স্ক্যানিং করলে ধরা পড়ে না। এই ডিভাইসের সঙ্গে তাদের (পরীক্ষার্থী) শরীরে সিমযুক্ত একটি যন্ত্র লাগিয়ে দেওয়া হয়।
পরীক্ষা শুরু পর মোবাইলে প্রশ্নের ছবি তুলে বাইরে পাঠিয়ে দেয় কেউ একজন। এরপর চক্রের সদস্যরা প্রশ্নের সমাধান করে হলে বসে থাকা পরীক্ষার্থীর কানে থাকা ডিভাইসের মাধ্যমে সকল উত্তর বলে দেয়।
এই চক্রের একটা গ্রুপের সাতজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আরো কিছু সদস্যকে আটকের চেষ্টা চলছে।
চক্রটি গত চার-পাঁচ বছর ধরে এই জালিয়াতি চালিয়ে আসছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান ডিসি মাসুদুর রহমান।