পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইএসআই’ ও ভারতের ‘র’ এর দুই সাবেক প্রধানের একসঙ্গে লেখা বই নিয়ে বৈরিতার শীর্ষে থাকা দুই দেশেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। কেননা বইটিতে দুই দেশের গোপন অনেক বিষয় উঠে এসেছে।
পাশাপাশি বহু বছর ধরে থেমে থেমে চলে আসা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধেরও তাগিদ দিয়েছেন বইয়ের লেখকরা।
ইতোমধ্যে পাকিস্তান তাদের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসাদ দুররানির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ও তার বিদেশে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অন্যদিকে ভারতেও প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন র’এর সাবেক প্রধান এ.এস. দুলাত।
ভারতীয় সাংবাদিক আদিত্য সিনহার প্রস্তাবে লেখা গত সপ্তাহে প্রকাশিত ‘দ্য স্পাই ক্রনিকলস: র, আইএসআই অ্যান্ড দ্য ইলিউশন অব পিস’ নামের বইটিতে উঠে এসেছে দু’দেশের সামরিক বিষয়ের নানা অজানা কথা।
বইটিতে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেনের বিরুদ্ধে ইউএস নেভি সিলের অভিযানের বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি আগে থেকেই নাকি জানতেন এ অভিযানের কথা। এমনকি ওই অভিযানের আগে ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটন একটি সমঝোতাও হয়েছিল।
র’এর কাছেও এরকম খবর ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে বইটিতে।
পাঠানকোট বিমানঘাঁটির জঙ্গি হামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে এতে। ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি ওই জঙ্গি হামলা নিয়ে পাকিস্তান বেশ অস্বস্তিতে ছিল। আর তাই অস্বস্তি কাটাতেই কুলভূষণ যাদবকে সামনে আনা হয়। ভারতের পোখরান পরমাণু বিস্ফোরণের ব্যাপারেও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে এই বইয়ে।
এছাড়াও কাশ্মীর, হাফিজ সইদ, পাক-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আমেরিকা-রাশিয়ার ভূমিকা, পাক-ভারত শান্তি প্রক্রিয়ায় সন্ত্রাসের প্রভাবসহ আরও বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়েছে বইটিতে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বইটি লিখে সেনাবাহিনীর কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘন করেছেন দুররানি। আগামী সপ্তাহে দিল্লির একটি অনুষ্ঠানে বইটি নিয়ে আলোচনা করতে ভারতে যাবার কথা ছিল দুররানির। আপাতত বাতিল হয়েছে সেই সফরও।
তবে বইটির অন্য লেখক দুলাত দুররানির পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন তারা দু’জনেই অনেক বছর আগে অবসর নিয়েছেন। তাই বইটিতে সাম্প্রতিক কোন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা নেই।