একটি ম্যাচে এমন বাজে সময় কাটিয়েছেন। দিনের পর দিন বা বছরের পর বছর তো নয়। তিনি দলের প্রধান ত্রাতা। তার ঝলকে আসা জয়ী ম্যাচের সংখ্যা হয়তো হাতে গুণে শেষ করা যাবে না। কিন্তু সেসব যেনো এক লহমাতেই ভুলে বসেছেন সকলে। লিওনেল মেসি এখন তাই সমালোচনার কেন্দ্রে। ফুটবল বিশেষজ্ঞ থেকে সাবেক, সকলে ধুয়ে দিচ্ছে খেলাটাকেই অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া এই মহাতারকাকে।
প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে হেরে গেছে বার্সেলোনা। মঙ্গলবার রাতে কাতালানদের ৪-০ গোলের লজ্জার পরাজয়ে মেসি ছিলেন একেবারেই নিষ্প্রভ। পারফরম্যান্সটা তো অচেনা ছিলই, সঙ্গে বার্সার দ্বিতীয় গোলটিও এসেছে তার ভুলেই। মেসির পা থেকে বল কেড়ে নিয়েই আক্রমণে যায় পিএসজি। সফলও হয়। তাতেই হয়তো ম্যাচের ভাগ্যটা আরো নির্মম পথে যাওয়ার যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে চলছে মেসির কড়া সমালোচনা।
সাবেক ইংলিশ ফুটবলার গ্যারি লিনেকার এদিন একটি টিভি আলোচনার সঞ্চালক ছিলেন। তার অতিথি ছিলেন আরেক সাবেক ইংলিশ রিও ফার্ডিনান্ড। লিনেকার ফার্ডিনান্ডকে মেসির পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন করলে জবাব পান, ‘পুরো ম্যাচে নিষ্প্রভ থাকার অনেক দিনেও মেসি অসাধারণ সব ঝলক দেখিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়িয়েছেন। অথচ এই ম্যাচে তাকে তো লড়াই করতেই দেখলাম না। কোনো পরিকল্পনাতেই যেনো ছিল না সে। দিনটা একদমই মেসির মত ছিল না।’
লিভারপুলের সাবেক মিডফিল্ডার জেরার্ড অবশ্য আরেক কাঠি সরেস! সোজাসাপ্টা বলেছেন, ‘সে তো পুরো ম্যাচেই কোথাও ছিল না। কোনো চেষ্টাই করেনি। ম্যাচে তার কোনো ছাপই ছিল না।’
এমন নয় মেসি কখনো নিজেকে অতিমানব দাবি করেছেন। তার পা থেকে এমনসব ফুটবল ঝলক এসেছে, সেটি দেখে সকলে তাকে অতিমানবের কাতারেই ফেলে থাকেন। অতিমানব ভাবাটা লিওনেল মেসির দোষ নয়। তার খেলাটাই যে এমন, কোনো বিশেষণ খুঁজে পাওয়া যায় না মাঝে মধ্যেই। এই যেমন, ফুটবল জাদুকর কথাটা আর কতবার জুড়ে দেওয়া যায় মেসির নামের সঙ্গে। কিন্তু বলের এমন কারিকুরি করে দেখান, অবিশ্বাস্য সব গোল করেন; যথার্থ উপমা না পেয়ে বারবার একই বিশেষণেই ডাকতে হয় আর্জেন্টাইন তারকাকে।
একটা ম্যাচ খারাপ করে সেই মেসি নিশ্চয় ফুটবল ভুলে যাননি। সামনের কোনো ম্যাচেই হয়তো মেতে উঠবেন অসাধারণ ফুটবল শৈলী নিয়ে। তার আগে নিশ্চয় এসব সমালোচনা পোড়াচ্ছে মেসিকেও। তিনি দলের পরাজয়েই হয়তো বারবার নতুন করে পুড়ছেন গত কয়েকটা ঘণ্টায়। মাঠের খেলাটার অংশই তো ছিলেন তিনি। পরাজয়টা হয়তো তাই মানুষ মেসিকেই খুব বেশি করে পোড়াচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চুলচেরা ব্যবচ্ছেদ। মেসি বিশ্বকাপের ফাইনাল-কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের হতাশার নিয়ে যা করেছিলেন, দুম করে সেভাবে না আবার বিদায় বলে বসেন ফুটবলকেই!