করোনাভাইরাসের ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে প্রতারণার মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের আহবায়ক ডা. সাবরিনা শারমিন ও সিইও আরিফুল হক চৌধুরী সহ আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে দুপুরের পর এ চার্জশিটটি দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
চার্জশিটে সাবরিনা ও আরিফকে মূল হোতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করতে তাদের সহযোগিতা করেছে।
মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন— আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।
ডিবির তদন্তে দেখা যায়, জেকেজি ১৩ হাজার ৫৮৫টি নমুনা সংগ্রহ করেছিল। এরমধ্যে ১১ হাজার ৬৬০টি জেকেজি হেলথ কেয়ার মাধ্যমে করা হয়েছে। বাকি ১ হাজার ৯২৫টি নমুনা তারা ল্যাবে পাঠয়নি, এমনকি সঠিকভাবে নমুনা সংগ্রহও করেনি। গ্রাহকের নমুনা সংগ্রহের ফর্মে দেওয়া ই-মেইল ঠিকানায় তারা একটি ফেইক ইমেইল সার্ভার ব্যবহার করে সেগুলো পাঠিয়ে দিয়েছে। এছাড়াও এমনও হয়েছে যে তারা নমুনা সংগ্রহ করেছে কিন্তু টেস্টের জন্য ল্যাবে না পাঠিয়ে নিজেরাই মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে।
গত ১২ জুলাই জেকেজি’র আহবায়ক ডা. সাবরিনা শারমীনকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও ডিসি অফিসে আনা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এরআগে গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল চৌধুরীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগের দিন আশকোনা থেকে হুমায়ুন কবীর ও তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত এপ্রিলে কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষার জন্য অনুমতি পায় জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা জেকেজি হেলথ কেয়ার। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা সংগ্রহ করার নামে তারা কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তৈরি করতেন ‘করোনার পজিটিভ-নেগেটিভ রিপোর্ট’।
জেকেজি বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের জন্য ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পৃথক ছয়টি স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করেছিল। এসব এলাকা থেকে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করত জেকেজি। শর্ত ছিল, সরকার নির্ধারিত ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠাতে হবে। জেকেজি হেলথ কেয়ার ওভাল গ্রুপের একটি অঙ্গসংগঠন।