জঙ্গি সংগঠন আইএসের কাছে তো বটেই, সব বাঙালির মুখেও এখন আলোচিত এক নাম আবু জন্দাল আল বাঙালি। দেশের মায়া ত্যাগ করে বিদেশে গিয়ে জঙ্গিবাহিনীতে যোগ দিয়ে বেঘোরে প্রাণ হারান এই তরুণ। সাধারণ এক তরুণ হঠাৎ করেই হয়ে উঠেন ভয়ঙ্কর জঙ্গি।
আবু জন্দাল আল বাঙ্গালির জন্ম ঢাকায়। বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত সমৃদ্ধশালী এক পরিবারে তার বেড়ে উঠা। ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে প্রাণ হারান জন্দালের সেনা কর্মকর্তা বাবা।
এরপর থেকেই এক জঙ্গি হয়ে উঠার পরিকল্পনা ছিলো জন্দালের মধ্যে। চলে যেতে চেয়েছিলো দেশের বাইরে, মধ্যপ্রাচ্যে। ভেবেছিলো, কলেজ থেকে একটি কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার কথা বলে কনফার্মেশন লেটার নিবে সে। তারপরই মধ্যপ্রাচ্যে উড়াল। কিন্তু এরই মধ্যে নিজের পড়াশোনাও বাদ দিয়ে দিয়েছিলো জন্দাল। তাই সেটা হবে না বলেই ধরে নিয়েছিলো।
কিন্তু জঙ্গিবাদের নেশা এমন করে তার মনে চেপেছিলো যে অবশেষে সেটা যোগারও করে সে। স্ট্যাম্প ও রেফারেন্স লেটারে নকল সিগনেচার দিয়ে সেই কনফার্মেশন লেটার নিয়ে নেয় জন্দাল। এরপর মধ্যপ্রাচ্যে উড়াল।
জন্দাল কোনো কনফারেন্সে যোগ দিতে মধ্যপ্রাচ্যে যায়নি- এটা জানার পর তার মামা খুব চেষ্টা করেন তাকে ফিরিয়ে আনার। ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত জন্দালের মামা কোনো চেষ্টায় বাকি রাখেন না, কিন্তু ব্যর্থ হন।
দেশে আইএসের মূল বিচরণক্ষেত্র বানানোর ইচ্ছা ছিলো জন্দালের। সঙ্গে দেশকে বানাতে চেয়েছিলো কবরস্থান। সেই প্রচেষ্টাতেই শহুরে জীবন থেকে নিজেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে জন্দাল। মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে জন্দাল সন্ত্রাসবাদের ট্রেনিংও নেয়। ছোট ছোট অপারেশন শেষে বড় অপারেশনও করে সে।
অবশেষে একটি অপারেশনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন জন্দাল। এরপরে জঙ্গিদের কাছেই প্রাথমিক চিকিৎসা পেলেও, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অবশেষে প্রাণ হারায় এই বাংলাদেশী জঙ্গি।
আইএস মুখপাত্র সাময়িকী ‘দাবিক’এর ১৪তম সংস্করণে গতকাল (১৩ এপ্রিল) এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।