চট্টগ্রাম থেকে: বিপিএলের পঞ্চম আসরে চট্টগ্রাম পর্বে সাত বলের একটি ওভার নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে সিলেট সিক্সার্স থার্ড-আম্পায়ারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে আসা নাবিল সামাদ একটি ওভারের জন্য গোটা টুর্নামেন্টকে বিতর্কিত বলতে নারাজ। তার কথা শুনে মনে হল এটিকে তারা নিছক ভুল হিসেবেই দেখছেন।
বিপিএলের মতো আসর ঘিরে সন্দেহজনক কিছু হওয়ার ঝুঁকি সবসময় বেশি থাকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিষয়টি নিয়ে অন্য যেকোনো বারের চেয়ে এবার বেশি সতর্ক।
অন্য ম্যাচগুলোতে এমন বিতর্কিত আর কিছু চোখে পড়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নাবিল বলেন, ‘আমার কাছে পড়েনি। আমরা শুধু আজকের ওই ওভারটির কথা বলছি।’
যেভাবে হল সাত বল
কীভাবে আম্পায়ার সাতটি বল করালেন তা জানতে চেষ্টা করেছে চ্যানেল আই অনলাইন। ওই ওভারের সময় স্কোরার রুমে থাকা কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি। তারা শুধু বলছেন, ওভারের সময় বিষয়টি তাদের নজরে আসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আম্পায়ার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর বিরুদ্ধে তাদের কথা বলার এখতিয়ার নেই।
অন্য এক কর্মকর্তা দাবি করছেন, সাত বলের আগে থার্ড-আম্পায়ার মাঠের আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলেতে চেয়েও পারেননি। কেননা ওই সময় বোলার রাব্বি শেষ বলটি করতে দৌড় শুরু করেন।
রাব্বি আবার দাবি করছেন, ছয় বল করার পর আম্পায়ারকে তিনি বলেন ওভার তো শেষ।
মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে চার উইকেটে হেরে যায় সিলেট। ম্যাচের তখন বাকি ছিল পাঁচ ওভার। জিততে রংপুরের দরকার ৫৩। ক্রিজে ছিলেন মাশরাফী এবং বোপারা।
প্রথম বলে বোপারা চার মেরে দেন। দ্বিতীয় বলে এক রান আসে। তৃতীয় বলে সামিউল্লাহ শেনওয়ারির উইকেট হারায় রংপুর। দারুণ করতে থাকা রাব্বির চতুর্থ বল থেকে এক রান নেন বোপারা। পঞ্চম বলে এক নেন মাশরাফী। ষষ্ঠ বলে বোপারার ব্যাট থেকে আসে দুই রান। ওভারটি সেখানেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিস্ময়করভাবে সপ্তম বলটি করতে হয় রাব্বিকে। বাড়তি বলটিতে আসে এক রান।
বিতর্কিত ওই ওভারে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে আম্পায়ার ছিলেন বাংলাদেশের মাহফিজুর রহমান লিটু। স্কয়ার লেগে ছিলেন শ্রীলঙ্কার রেনমোরে মার্টিনেজ। টিভি আম্পায়ার ছিলেন গাজী সোহেল।
‘ম্যাচ ডে’ হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ওই ওভারের সময় ধারাভাষ্যের কাজে ব্যস্ত থাকা এক ধারাভাষ্যকারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এক সময় তিনি আম্পায়ারিংও করতেন। সাত বলের ওভার দেখে তিনি বিস্মিত, ‘প্রত্যেক ওভারে দুই আম্পায়ার সাধারণত চার বল পর আঙুল উঁচিয়ে নিজেরা বলের সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হন। এমন টুর্নামেন্টে এতগুলো চোখ ফাঁকি দিয়ে সাতটি বল হওয়া আসলেই বিস্ময়কর। তবে দিন শেষে ভুল হতেই পারে। কারণ আমরা সবাই মানুষ।’