নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার অন্যতম আসামী তারেক সাঈদের পক্ষে একটি মামলা বাতিল চেয়ে করা রিট আবেদনের শুনানীতে বিব্রত বোধ করেছেন হাইকোর্ট।
তারেক সাঈদের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘গতকাল এই মামলার শুনানী হয়। আজকে বিচারপতি এমদাদুল হক এবং বিচারপতি এ আর এম নাজমুল আহসানের দ্বৈতবেঞ্চ বলেছেন, “এ বিষয়ে দুটো অর্ডার হয়েছে। তারা আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়েছেন। কারণ একজন বিচারপতি শুনানীতে অপারগতা প্রকাশ করায় বিব্রতবোধ করেছেন।”
‘আইন অনুযায়ী এখন ফাইলটি প্রধান বিচারপতির কাছে চলে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, একই ধারায় একই অপরাধের জন্য দুইবার শাস্তি দেওয়া যায় না, যদি তা হয় তা আইনের পরিপন্থী, আমরা এই বিষয়টাই হাইকোর্টের কাছে তুলে ধরেছি।
সাঈদের আইনজীবী আরো বলেন, চন্দন কুমার হত্যা মামলাটি যে দায়ের করা হয়েছে, তা আইনগত চলতে পারে না। কারণ এটা ১৬১ ধারার জবানবন্দি ছাড়া আর কিছুই না। একই ঘটনার উপর ভিত্তি করে তার আগে সেলিনা হোসেন যে মামলা করেছেন ওটা চলতে পারে। কিন্ত পরবর্তী পর্যায়ে যে মামলাটি হয়েছে সেটার আইনগত কোনো ভিত্তি নাই।’
মামলার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে ওই আইনজীবী আরো বলেন, প্রথম মামলার ঘটানাস্থল এবং দ্বিতীয় মামলার ঘটনাস্থল একই, আসামী একই এবং চার্জশিটও একই, সেই সাথে দুই মামলার তদন্ত ও আলামত একই। একই সঙ্গে প্রথম মামলার সুরতহাল রিপোর্ট এবং দ্বিতীয় মামলার সুরতহাল রিপোর্টও একই। তাছাড়া পোস্টমর্টেম রিপোর্ট একই।’
‘প্রথম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং দ্বিতীয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা একই। প্রথম মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এবং দ্বিতীয় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন একই ব্যক্তি একই ভাষা যেখানে কোন ভাষার পার্থক্য নেই ও একই আসামী।’
‘আমরাও চন্দন কুমার হত্যা মামলার বিচার চাই,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই মামলার বিচারতো প্রথম মামলায় গচ্ছিত আছে, আর ওখানে যদি না থাকতো তাহলে পরের মামলাটি চলতো। যেখানে ওই মামলায় আছে সেখানে একটা আসামীকে কয়বার ফাঁসি দিতে পারে। একজন আসামীকে কয়বার শাস্তি দিতে পারে?’
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুলসহ সাতজন অপহরণের শিকার হওয়ার তিন দিন পর তাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় নজরুল ও তার চার সহযোগী হত্যার ঘটনায় একটি এবং আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় আরেকটি করা হয় মামলা ফতুল্লা মডেল থানায়।
প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।