নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার চার বছর পূর্ণ হলো আজ। এক বছর আগে উচ্চ আদালত এই মামলার রায় প্রদান করলেও এখনো তা কার্যকর না হওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন নিহতদের স্বজনরা। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে সাহায্য সহযোগিতার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে আশ্বাস দেয়া হলেও বাস্তবে তা না হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন অধিকাংশ পরিবার। সরকারের কাছে তাদের একটাই দাবি, উচ্চ আদালতের রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।
২০১৪ সালের ২৭শে এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহৃত হন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার সহ সাতজন। এর তিন দিন পর শীতলক্ষ্মা নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩৫ জনকে আসামী করে চার্জ গঠন করা হয়। ২০১৭ সালের ১৬ই জানুয়ারি মামলার রায়ে প্রধান আসামী নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। আসামীপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করলে নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের মৃত্যদণ্ডাদেশ, ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত। আসামীদের মধ্যে এখনো ৮জন পলাতক রয়েছে।
তবে এই দীর্ঘ চার বছরে চরম হতাশার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছেন নিহত সাত পরিবারের স্বজনরা। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বাস দেয়া হলেও পরবর্তীতে কেউ খোঁজ না নেয়ায় অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় দিন কাটছে অধিকাংশ পরিবারের স্বজনদের।
উচ্চ আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও রায় কার্যকরের ব্যাপারটি বিলম্ব হওয়ায় সংশয় প্রকাশ করেন মামলার বাদি সেলিনা ইসলাম বিউটি। আদালতের এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
তবে মামলার রায় কার্যকরের ব্যাপারে এই ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বাদিপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াৎ হোসেন খান। তিনি দ্রুত রায় কার্যকর করে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালতের এ্যাটর্নি জেনারেল কার্য্যালয় ও সরকারের প্রতি দাবি জানান।
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত হত্যা মামালার রায় ঘোষণার পর বিভিন্ন সময়ে পলাতক আসামীদের মধ্যে ৩ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে এখনো পলাতক রয়েছেন ৮ জন।