প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাক্ষরতায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। দেশের বর্তমান সাক্ষরতার হার শতকরা ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ। আর ২৭ দশমিক ১ শতাংশ জনগোষ্ঠী নিরক্ষর।
শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে মন্ত্রী দিবসটির উদ্বোধন করে বলেন,এসব নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষর করাতে না পারলে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। সাক্ষরতার কোন বিকল্প নেই। দক্ষতা ও যোগ্যতার পাশাপাশি শ্রম উপযুক্ত করতে হলে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিত ভেবে তাদের জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। বর্তমান সরকারের নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সাক্ষরতার হার বেড়েছে।
‘প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে লড়াই করতে হলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিকল্প নেই। এদেশের মানুষ তা প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃত। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের মানুষকে দক্ষতার সঙ্গে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এসব জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরতা প্রদান এবং দক্ষতা উন্নয়নে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৪৫ লাখ নিরক্ষর নারী-পুরুষের জন্য দেশব্যাপী সাক্ষরতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা(এসডিজি-৪) উপানুষ্ঠানিক ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রস্তাবনা তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৩ কোটির প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা নেই। সকলে মিলে এই জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে গড়ে তুললে দেশ সোনারবাংলা হবে। শিক্ষার সুযোগবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকায়ন, দক্ষ মানবসম্পদে পরিণতিকরণ, আত্মকর্মসংস্থানের যোগ্যতা সৃষ্টিকরণ এবং বিদ্যালয় বর্হিভূত ও ঝরে পড়ারোধে শিশুদের শিক্ষার বিকল্প সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন-২০১৪ প্রণীত হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ’৭৫ এর পর যারা বাংলাদেশকে বদলে দিতে চেয়েছিল তারাই দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে। কিন্তু দেশের উন্নয়ন দ্রুত দৃশ্যমান হচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ উজ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন।
মোতাহার হোসেন বলেন- এখন শুধু সাক্ষরতাই নয়, দেশের জনগোষ্ঠীকে কেতাবী শিক্ষা নয়, প্রযুক্তি ও কারিগরী শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আগামী প্রজন্মকে দেশের বোঝা নয়, সম্পদের পরিণত করতে সরকারের পাশাপাশি সকলকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে শিল্পকলা একাডেমি থেকে এক র্যালি বের হয়।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘লিটারেসী অ্যান্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট’। এই প্রতিপাদ্যের আলোকে বাংলাদেশের শ্লোগান ‘সাক্ষরতা অর্জন করি,দক্ষ হয়ে জীবন গড়ি’ নির্ধারণ করা হয়েছে।