টন্টন থেকে: সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস ২২ গজে জুটি বেধে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন খুব কম ম্যাচেই। অথচ বিশ্বকাপের মঞ্চে তাদের মধ্যে জুটির যে রসায়ন দেখা হল, এককথায় অবিশ্বাস্য! সমারসেট কাউন্টি ক্লাব মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১৮৯ রানই বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে সহজ জয়। নিজেদের সর্বোচ্চ ৩২২ রান তাড়া করে জয়টা এসেছে ৭ উইকেট ও ৫১ বল হাতে রেখে।
দলীয় শতরান পাড়ি দেয়ার খানিক পর টানা দুই ওভারে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম আউট হলে শঙ্কার মেঘ জমেছিল টন্টনে। সেই মেঘ সরিয়ে সাকিব-লিটনের চতুর্থ উইকেটে রেকর্ড জুটি, বাংলাদেশকে এনে দেয় স্বস্তির জয়।
অসাধারণ সব শটে ক্যারিবীয়দের পাড়ার বোলারে নামিয়ে এনেছিলেন সাকিব-লিটন। ২২ গজে দুজন দুজনকে দিয়েছেন সাহস। করেছেন শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার প্রতিজ্ঞা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানালেন, ক্রিজে কী ধরণের কথা হচ্ছিল নিজেদের মধ্যে।
‘এটা ভালো একটা উদাহরণ। শুরুতে আমি যখন ব্যাটিং করছিলাম তামিমের সঙ্গে, কমপক্ষে দুইবার বলেছি আমরাই ম্যাচটা শেষ করে ফেলতে পারি, ৫-৬ ওভার আগে শেষ হবে আমরা যদি ব্যাটিং করি। তারপর লিটনের সঙ্গে যখন ব্যাটিং করেছি, চেষ্টা করেছি, অনেকবারই ও(লিটন) আমাকে বলেছে আমি ওকে বলেছি শেষ পর্যন্ত খেলতে হবে, নটআউট থাকতে হবে। যথেষ্ট বাজে বল পাচ্ছিলাম, চার মারতে পারছিলাম সহজেই। ওরকম কোনো চাপ নিতে হয়নি যে ভালো বল মারতে হবে।’
সাকিবের সংবাদ সম্মেলনের পর মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে লিটনও জানিয়েছেন ক্রিজে নিজেদের মধ্যে কি কথা হয়েছে, ‘আমি বলেছিলাম সাকিব ভাই এমন সুযোগ বারবার আসবে না। আপনি অপরাজিত থাকলে আপনার গড়টা বাড়বে। সেই চেষ্টা করেন।’
‘উইকেটটা অনেক সহজ। কিছুক্ষণ খেললে সহজ-স্বাভাবিকভাবে খেলা যায়। জোরাজুরি না করে স্বাভাবিক খেলা খেলো। এছাড়া ওনার ব্যাটিংটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমি স্বাভাবিক হতে পেরেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক রান করলেও কখনোই ফিনিশ করতে পারিনি। এবার সেই চেষ্টা ছিল। ফিনিশ করতে পেরে ভালো লাগছে।’
বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচে লিটন খেলেছেন মাত্র ৬৯ বলে অপরাজিত ৯৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ব্যাটিংয়ে দারুণ ছন্দে থাকা সাকিব করেছেন ৯৯ বলে অপরাজিত ১২৪। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৮৯ রানের জুটি বাংলাদেশকে দেখাচ্ছে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন।