ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টের হতাশা কাটিয়ে ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি সিরিজ জিতে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। আয়ারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলও পেয়েছে সাফল্য। ওয়ানডে সিরিজ ড্র (২-২) হলেও টি-টুয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে সৌম্য-মুমিনুলরা।
আয়ারল্যান্ড সফরে দলের সফরসঙ্গী ছিলেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। তার বরাত দিয়ে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানালেন, বেশ কিছু ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। জাতীয় দলে সাকিব-তামিমদের বিকল্প খেলোয়াড় পেতে তরুণদের নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন সাবেক এ ক্রিকেটার।
দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে সিরিজে মুমিনুল হক একাই খেলেছিলেন ১৮২ রানের ইনিংস। এ বাঁ-হাতির ব্যাটিং নিয়ে আগেই প্রশংসা ঝড়েছিল মিনহাজুলের কন্ঠে। শনিবার সৌম্য সরকারের রানে ফেরা এবং তরুণ কিছু ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স নিয়ে বললেন প্রধান নির্বাচক।
‘সর্বোপরি ওখানে সবার পারফরম্যান্সই দেখা হয়েছে। সৌম্য সরকার সেখানে টি-টুয়েন্টি ভালো খেলেছে। আফিফ ভালো খেলেছে। বিশেষ করে আল-আমিনের (জুনিয়র) পারফরম্যান্স নজরে এসেছে বেশি। পেস বোলারদের মধ্যে খালেদ, শরিফুল, সাইফউদ্দিন ভালো করেছে। সবমিলিয়ে পারফরম্যান্সের যে ফিডব্যাক আমরা চেয়েছিলাম সেটি পেয়েছি। আশা করি সামনে জাতীয় দলে যে ঘাটতি থাকবে এখান থেকে আমরা তা পূরণ করতে পারব।’
মিনহাজুল মনে করেন ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররা নিয়মিত খেলার সুযোগ পেলে জাতীয় দলের পাইপলাইন নিয়ে যে ঘাটতি বিদ্যমান, তা অচিরেই কেটে যাবে, ‘ আয়ারল্যান্ড সফরের দলে যারা ছিল তাদের সবারই সুযোগ থাকবে। যেকোনো জায়গায় যাকে যখন দরকার হবে তখন তাকে সেই জায়গায় খেলানো হবে। ‘এ’ দলের যদি ধারাবাহিকভাবে আরো কয়েকটি প্রোগ্রাম থাকে তাহলে দেখবেন আমাদের যে ব্যাকআপ ক্রিকেটারের ঘাটতি রয়েছে সেটি তাড়াতাড়িই পূরণ হয়ে যাবে।’
আয়াল্যান্ড সফরে ‘এ’ দলের ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি সিরিজের পারফম্যান্স মূল্যায়ন করতে গিয়ে মিনহাজুলের কন্ঠে ঝরেছে সন্তুষ্টিও, ‘আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের যে কন্ডিশন এখানে ভালো খেলা অনেক কঠিন। সেই হিসেবে আমাদের ‘এ দল যথেষ্ট ভালো খেলেছে। আর আয়ারল্যান্ড টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ওদের ক্রিকেট কালচার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে ওয়ানডে সিরিজে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। কারণ ২-২ এ আমরা সিরিজ শেষ করেছি। তবে আমাদের যথেষ্ট ভালো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলা হয়েছে এবং আমাদের ক্রিকেটাররা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছে। বিশেষ করে শেষের দিকে টি-টুয়েন্টি সিরিজে আমাদের যথেষ্ট ভালো গেছে এবং ওরা আমাদের ভালোই প্রতিযোগিতার মুখে ফেলেছিল।’
জাতীয় লিগে প্রতিদ্বন্দিতার আশা
জাতীয় লিগের গায়ে অনেকদিন ধরেই লেগে আছে ‘পিকনিক ক্রিকেটের’ বদনাম। কথিত আছে এখানে জয়-পরাজয় নিয়ে মাথা ঘামান না খেলোয়াড়রা। বদনাম ঘুচাতে লিগের মানোয়ন্নয়ন করতে চায় বিসিবি। মিনহাজুল জানান, শিগগিরই এটি নিয়ে রূপকল্প তৈরি করবেন তারা।
‘এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। টুর্নামেন্ট শুরুর দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে আমাদের একটি মিটিং আছে। এরপরে স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে কাজ করব। এনসিএলের স্ট্যান্ডার্ড ঠিক রাখতে চাচ্ছি আমরা টেস্ট ক্রিকেটে যদি আমরা ভালো ফলাফল চাই তাহলে আমাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে একটি প্রতিযোগিতার মধ্যে আনতে হবে। সেই হিসেবে আমি মনে করি, সবারই প্রচেষ্টা লাগবে এখানে। আশা করছি এ মৌসুম থেকেই আমরা ভালো কিছু শুরু করতে পারব।’
জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক হবে তো!
বিসিবি চাইছে আন্তর্জাতিক সূচি না থাকলে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুলের ভাষ্য, ‘’আগে খেলা শুরু হোক। এটি আমাদের মাথায় আছে। কারণ ভালো ক্রিকেট খেলা হলে এবং প্ল্যাটফর্ম যদি শক্তিশালী থাকে তাহলে যেকোনো লেভেলেই ভালো ক্রিকেট খেলা যায়। সেটি মাথায় রেখেই আমরা এনসিএল শুরু করতে চাই।’