এক বিজেপি আইনপ্রণেতার মেয়েকে বিয়ে করার কারণে প্রাণ সংকটের আশঙ্কায় পুলিশি সুরক্ষায় থাকা অবস্থায়ই দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হলেন এক ব্যক্তি; তাও আবার হাইকোর্টের সামনে!
গত ৪ জুলাই ২৯ বছর বয়সী অজিতেশ কুমারকে বিয়ে করেন উত্তরপ্রদেশের বাড়েলির বিজেপি আইনপ্রণেতা রাজেশ মিশ্রর মেয়ে সাক্ষী মিশ্র (২৩)। তাদের সম্পর্কে আইনপ্রণেতা বাবার মত না থাকায় প্রয়াগরাজে একটি মন্দিরে গিয়ে বিয়ের কাজটা সারেন তারা।
বিয়ের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে সাক্ষী দাবি করেন, নিজ বর্ণের বাইরে গিয়ে বিয়ে করায় তার বাবা ও ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে এবং তার স্বামীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছেন। তাই নিজের এবং স্বামীর জন্য পুলিশি নিরাপত্তার আবেদন জানান তিনি ভিডিওতে।
ভিডিওটিতে বাবাকে ‘পাপ্পু ভারতৌল’ ও ভাইকে ‘ভিকি ভারতৌল’ ডাকনামে সম্বোধন করে সাক্ষী বলেন, বাবা ও ভাইয়ের পক্ষ থেকে নানারকম হুমকি পাচ্ছেন তারা।
‘বাবা ও ভিকি, মানে মাননীয় এমএলএ পাপ্পু ভারতৌল জি ও ভিকি ভারতৌল জি, দয়া করে নিজেরা শান্তিতে বাঁচুন এবং আমাদেরকে শান্তিতে বাঁচতে দিন… আমি সত্যিই বিয়ে করেছি, আমি ফ্যাশনের জন্য সিঁদুর পরিনি,’ ভিডিওতে বলেন সাক্ষী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়ার পরই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং এর ফল হিসেবে সাময়িকভাবে পুলিশ হেফাজতে থাকার অনুমতি পেয়ে যান এই দম্পতি।
সোমবার নয়ডার বিশেষ নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পুলিশের সুরক্ষা নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে পৌঁছান সাক্ষী-অজিতেশ দম্পতি। উদ্দেশ্য বিয়ের প্রমাণপত্র দেখিয়ে আনুষ্ঠানিক পুলিশি সুরক্ষা পাওয়া।
তাদের আইনজীবী জানান, আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছে আদালত কক্ষে ঢোকার ঠিক আগ মুহূর্তে কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এসে পুলিশের নিরাপত্তার মাঝেই তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা শুধু অজিতেশকে মারধর করে পালিয়ে যায়।
গণমাধ্যমকে আইনজীবী বলেন, ‘আমরা জানি না এরা কারা ছিল। কিন্তু এতেই প্রমাণ হলো যে এই দম্পতির জীবন সত্যিই ঝুঁকিতে আছে, আর এ কারণেই তারা সুরক্ষা চাইছেন।’
হামলার পরও আদালতকক্ষে শুনানিতে উপস্থিত হন অজিতেশ ও সাক্ষী। শুনানিতে আদালত তাদের বিয়ের বৈধতা ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। এছাড়াও আদালত রাজেশ মিশ্রর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে দম্পতিকে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।