রাষ্ট্রের কথিত ‘গোপনীয় তথ্য চুরি’র চেষ্টার অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় করা মামলার জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে আজ বৃহস্পতিবার।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ’র ভার্চুয়াল আদালতে তার জামিনের এই শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
রোজিনা ইসলামের আইনজীবীদের একজন প্রশান্ত কুমার কর্মকার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোজিনা ইসলাম প্রথম আলোর একজন পেশাদার সাংবাদিক। তার বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলাটি করা হয়েছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। তাছাড়া তিনি শারীরিকভাবে অনেক অসুস্থ। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা আশা করছি, আজ আদালত জামিন দেবেন।’
গত মঙ্গলবার (১৮ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালত রোজিনা ইসলামের রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর পাশাপাশি জামিনের বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
তার আগেরদিন সোমবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে জানিয়েন তার পরিবার। সেদিন রাতেই কথিত তথ্য চুরির অভিযোগে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়।
রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। পরে জানা যায়, তাকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একটি কক্ষে আটকে রেখেছেন।
রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে তাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি।
একপর্যায়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু নথি সরানোর অভিযোগ এনে পুলিশ ডাকা হয়েছে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয় এবং রাতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশের সাংবাদিকরা বিক্ষােভ দেখান। অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেন। এছাড়াও অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনগুলোও রোজিনা ইসলামের হেনস্তা ও হয়রানির প্রতিবাদ জানায়। পাশাপাশি জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তার গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।