তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিনজনকে জেল দিয়েছে সৌদি আরবের একটি আদালত। সোমবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগিকে হত্যা করে সৌদি আরবের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের একদি দল।
সৌদির পাবলিক প্রসিকিউটর বলেছিলেন, এটি একটি ‘দুর্বৃত্ত অভিযান’ যার ফলে ১১ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়।
জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ দলের দাবি এটি একটি ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’। জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি আগনেস ক্যালামার্ড এক প্রতিবেদনে বলেন: এ বিচারকাজ আন্তর্জাতিক মানের এবং বাস্তবসম্মত হয়নি বলে এই বিচার বাতিলের দাবিও জানিয়ে আসছিলেন তিনি।
প্রথমদিকে সৌদি সরকার অস্বীকার করলেও, পরে সৌদির পক্ষ থেকে কনস্যুলেটের ভেতরে ধস্তাধস্তির সময়ে খাশোগি নিহত হয়েছেন বলে স্বীকার করা হয়।
এবছরের সেপ্টম্বরে হত্যার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন: যেহেতু আমার শাসনামলে এ ঘটনা ঘটেছে, তাই হত্যাকাণ্ডের দায় আমার। তবে এ হত্যাকাণ্ড তার অজান্তেই যে ঘটেছে সে কথাও উল্লেখ করেন যুবরাজ সালমান।
খাশোগি হত্যার পেছনে সৌদি যুবরাজের ভূমিকা রয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্বের অনেকেই দাবি করে আসছিলেন।
খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত চলার সময় সৌদি সরকারের পাঁচজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে অপসারণ এবং সন্দেহভাজন ১৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের সৌদিতে আটক করা হয়।
গত জানুয়ারিতে খাশোগি হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে রিয়াদের ফৌজদারি আদালত ১১ জনকে অভিযুক্ত করে। সরকারি আইনজীবী তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেন। তবে তখনও আসামিদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি আগনেস ক্যালামার্ড গত জুনে বলেন: মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হওয়া পাঁচ জন হলেন ফাহাদ শাবিব আলবালভী, তুরকি মুসারেফ আলশেহরি, ওয়ালিদ আবদুল্লাহ আলশেহরি, মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মেহের আব্দুলাজিজ মুতরেব এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ফরেনসিক চিকিৎসক ডাঃ সালাহ মোহাম্মদ তুবাগি।
মামলাটির বিচারকার্যের সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দিয়েছিল যে তারা রাষ্ট্রের কর্মচারী এবং তাদের উর্ধ্বতনদের আদেশে আপত্তি জানাতে পারেনি তারা।