নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, ধানমণ্ডি ও ঝিগাতলা এলাকায় সাংবাদিকদের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
সোমবার সমিতির সভাপতি আসিফ ত্বাসীন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান। তাঁরা গুজব তৈরির ক্ষেত্র বন্ধে গণমাধ্যমকর্মীদের কাজের স্বাধীন পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে গত তিন দিনে ক্ষমতাসীন দল ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ৩০ জন সংবাদকর্মী আহত ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও মুঠোফোন ভেঙে ফেলা হয়েছে, মেমোরি কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে, ছবি মুছে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছে। বাধা এসেছে টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারে। সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র খুঁজে খুঁজেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকেও গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। যা একটি শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা বলে মনে করি। এর মাধ্যমে একটি কুচক্রী মহল গণমাধ্যমকর্মীদের আন্দোলনকারীদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। এছাড়া সামাজিক যোগাযো গমাধ্যমে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস করারও একটি হীন প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের গুজব তৈরির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
এর আগে গত ২ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন এক ছাত্রলীগ নেতা। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
তারা মনে করছেন, এতে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করছে না।
বিবৃতিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণের জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেন, আমরা সাংবাদিকতার উপযুক্ত পরিবেশ, তথ্যের অবাধ নিশ্চয়তা এবং প্রকৃত সত্যের উম্মোচন চাই। সেটি নিশ্চিত করতে বিচারহিনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের ওপর সংঘটিত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। যেকোনো ধরনের গুজব তৈরির ক্ষেত্র বন্ধে গণমাধ্যমের কাজের স্বাধীন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।