বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে অন্যতম শোকাবহ সময় চলছে। কারণ, বৃহস্পতিবার দেশের সাংবাদিকতার অন্যতম প্রাণপুরুষ শাহ আলমগীর মারা গেছেন।
পিআইবির মহাপরিচালক ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহ আলমগীর এমন সময়ে চলে গেলেন, যখন সাংবাদিকতার উন্নয়নে তাকে আরও বহুকাল প্রয়োজন ছিল।
দেশের প্রিন্ট মিডিয়া এবং টেলিভিশন সাংবাদিকতায় তার অবদান ছিল অপরিসীম। চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান বার্তা সম্পাদক তিনি যেমন ছিলেন, এর আগে ঠিক তেমনই দেশের অন্যতম প্রধান পত্রিকা প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাকালীন সময়েও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক পদে কাজ করা ছাড়াও তিনি একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি শাহ আলমগীর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাংবাদিকতায় তিনি যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকেও সাংবাদিকতার উন্নয়নে দিকপালের ভূমিকায় ছিলেন। ২০১৩ সালের ৭ জুলাই মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেয়ার পর পিআইবি’কে সাংবাদিক সংশ্লিষ্ট করতে নিরলস কাজ করে গেছেন। সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানগুলো ও সাংবাদিকদের পিআইবি’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করতে সফলও হয়েছেন তিনি।
দিনের পর দিন সারাদেশ ঘুরে উপজেলা পর্যায়েও তিনি নিয়ে গেছেন সাংবাদিকতার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ। এছাড়া সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে পিআইবি’র মাস্টার্স কোর্স চালুসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতাকে পেশাদারিত্বের চরম শিখরে নিয়ে যেতে আজীবন চেষ্টা করে গেছেন।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকেও শাহ আলমগীর সবসময় চেষ্টা করে গেছেন ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। এজন্য তিনি তার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করেছেন বিভিন্ন ট্রেনিং কোর্সের আয়োজন। এর আগে কখনো টেলিভিশন বা অনলাইন সাংবাদিকদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা না থাকলেও তাদের জন্যও কোর্সের ব্যবস্থা চালু করেছেন। এছাড়া সাংবাদিকদের সিকিউরিটি ও সেফটি নিয়েও কাজ করেছেন তিনি।
তার এসব অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলেই আমরা মনে করি। সাংবাদিকতার অন্যতম এই প্রবাদপুরুষের মৃত্যুতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।