রুকিয়া হাসান নামের এক সিরিয়ান সাংবাদিকের শিরোশ্ছেদের পর তারই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছে জঙ্গি সংগঠন আইএস। হত্যাকাণ্ড লুকিয়ে মাসের পর মাস ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে তার বন্ধু ও সহকর্মীদের ফাঁদে ফেলতে।
সিরিয়ান বিদ্রোহী দল ফ্রি সিরিয়ান আর্মির হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ৩০ বছর বয়সী রুকিয়া হাসানকে গত সেপ্টেম্বরে হত্যা করে আইএস। কিন্তু হত্যার খবর প্রকাশ করা হয় আরো তিন মাস পর। ওই তিন মাস সময়ে আইএস তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে রুকিয়া সেজে তার বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। উদ্দেশ্য অন্যান্য সাংবাদিক ও আইএস বিরোধী মানবাধিকার কর্মীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ।
রুকিয়া লিখতেন নিসান ইবরাহিম নামে। ‘রাক্কা উজ বিইং স্লটারড সাইলেন্টলি’ নামের একটি মানবাধিকার গ্রুপের সদস্যরা টুইটারে রুকিয়ার মৃত্যুর খবর প্রথম নিশ্চিত করে। ওই গ্রুপের এক সদস্য টুইটারে রুকিয়ার শেষ কথা হিসেবে একটি উক্তি প্রকাশ করেন। ওই টুইট অনুসারে রুকিয়ার শেষ কথা ছিলো:
‘আমি রাক্কায় আছি এবং আমাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। আইএস যখন আমাকে আটক করবে এবং মেরে ফেলবে তাতেও দুঃখ নেই। কারণ তারা আমার মাথা কেটে ফেলবে এবং আমি মর্যাদার সাথে মারা যাবো। আইএসের সঙ্গে থেকে অপমানিত হওয়ার চেয়ে এই মৃত্যু ভালো।’
রুকিয়া হাসান ইউনিভার্সিটি অব আলেপ্পোতে দর্শনে পড়াশোনা করেছেন। ২০১১-এ সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরোধী দলকে সমর্থক ছিলেন।
আইএস সিরিয়ার রাক্কা দখলের পরও সেখানেই ছিলেন রুকিয়া। সেখান থেকেই আইএস শাসনামলে তার শহরে সঙ্গীত, শহরের দুরবস্থা এবং দৈনন্দিন জীবনের চিত্র ফেসবুকে তুলে ধরতেন। আইএস রাক্কায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার কথা বললে তা নিয়েও ফেসবুকে নিয়মিত উপহাস করেন তিনি। কিন্তু ফেসবুকে তার পদচারণা গত ২১ জুলাই হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানায়, গত আগস্টে রুকিয়াকে আইএস সদস্যরা ধরে নিয়ে যায় এবং শিরোশ্ছেদের আগে কিছুদিন তাকে জিম্মি করে রাখে। রাক্কা ইজ বিইং স্লটারড সাইলেন্টলি দলটির এক সদস্যের বরাত দিয়ে মাধ্যমটি জানায়, আইএস গত সপ্তাহ পর্যন্তও রুকিয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।