বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, রাজনৈতিক সহিংসতা ছড়িয়ে নাটকীয় ভোট সন্ত্রাসের পরিস্থিতি দেখলো দেশবাসী । রাজবেতনভোগী কর্মচারী নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিলো তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নন, তারা অবৈধ সরকারের প্রতিনিধি। সুতরাং অবৈধ সরকারের হুকুম তামিল করা ছাড়া তারা অন্য কোন কাজের জন্য নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালন করতে আসেনি।’
সোমবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ব্যাপক তান্ডব, ভোট জালিয়াতির উৎসব, ভোটারদেরকে মারধর, মেয়র প্রার্থীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা, পোলিং এজেন্টদেরকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, অনেক কেন্দ্রে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে না দেয়া ইত্যাদি ঘটনা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সংঘটিত করেছে। এই ব্যাপক তান্ডবের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাদে বিএনপিসহ সব প্রার্থীরাই নির্বাচন বর্জন করেছে। দিনে-দুপুরে ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটার’রা বরিশাল মহানগরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে।
‘আজ একজন আওয়ামী নেতা বলেছেন-উৎসবের আমেজে নির্বাচন হচ্ছে। তিনি ঠিকই বলেছেন-দস্যুদল লুট করার পর উল্লাসে মেতে উঠে। আওয়ামী লীগ লুটের মালের মতো একচেটিয়া জালভোট ও ভোট সন্ত্রাসের কৃতিত্বে আত্মপ্রসাদ লাভ করেছে, আর সেজন্যই তারা উৎসবে মেতে উঠেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়েছে পুলিশ। তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেই একচেটিয়া পুলিশ কর্তৃক নৌকা মার্কায় সিল মারার ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান হয়েছে। এটি আওয়ামী নাৎসীবাদের এক চূড়ান্ত রূপের আত্মপ্রকাশ।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, সকাল থেকেই ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে না দেয়া অথবা ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে জোর করে বের করে দেয়া, এ নিয়ে অভিযোগকারিদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের যৌথ আক্রমণ, ভোটকেন্দ্রে কাউন্সিলদের ব্যালট পেপার পাওয়া যায় কিন্তু মেয়রের ব্যালট পেপার না পাওয়া, ব্যালট নিয়ে আওয়ামী লীগে আওয়ামী লীগে কাড়াকাড়ি, ব্যালট নিয়ে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়া, মেয়র প্রার্থীকে রক্তাক্ত করা, ভোট কেন্দ্রের সামনে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ করে ভোটারদের ভয় পাইয়ে দেয়া, বেলা ১২টার পূর্বেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি অনিয়ম, অনাচার ও সন্ত্রাস পুলিশের সহযোগিতায় সংঘটিত হয়েছে।
রিজভীর অভিযোগ, দায়িত্বরত গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরকেও দায়িত্ব পালনে ব্যাপক বাধা দেয়া হয়েছে এবং তাদেরকে শারীরিকভাবেও আঘাত করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, আবারও প্রমানিত হলো-এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার আজ্ঞাবাহী প্রধান কমিশনারের নেতৃত্বে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। গাজীপুর ও খুলনায় অল্প কিছু লোক ভোট দিতে পারলেও আজকে তিন সিটি নির্বাচনে সেটিও সম্ভব হয়নি।
‘তবে সেদিন আর বেশী দূরে নয়, যখন জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া দখলের রাজনীতির বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ জনতার প্রবল প্রতিরোধ যেকোন মুহূর্তে ধুমকেতুর মতো আবির্ভূত হয়ে সরকারের মসনদকে উল্টে দিবে।’