বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ও বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনসহ নির্বাচন কমিশনকে ২১ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। আর রাজনৈতিক দলগুলো জোটভুক্ত না হয়ে নিজ নিজ প্রতীকে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবং একই প্রতীকে বারবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিধান বাতিলসহ ১৬ দফা প্রস্তাব দিয়েছে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)।
সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আলাদা সংলাপে তাদের প্রস্তাবগুলো তুলে ধরে দল দুটি। সকাল ১১টায় ন্যাপ এবং বিকেল ৩টায় পিডিপি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বসে। উভয় দলের সঙ্গে সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।
ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া ছাড়াও ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেয়। পিডিপির কো-চেয়ারম্যান ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর সহধর্মিনী নিলুফার পান্না কোরেশীর নেতৃত্বে অংশ নেয় দলটির ১৫ জন সদস্য।
সংলাপে লিখিত বক্তব্যে ন্যাপ জানায়, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আর একটি সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় আরেকটি সংসদ নির্বাচন হলে সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা কঠিন। অন্যদিকে শাসকগোষ্ঠী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিতর্কিত করায় সেনাবাহিনীই হচ্ছে জনগণের আস্থার জায়গা।
দলটি অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত, নির্বাচনে অবৈধ অর্থ, কালো টাকা ও পেশী শক্তির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, নিরপেক্ষ স্থানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটার ও প্রার্থীর এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, ভোট গণনা শেষে প্রার্থীর এজেন্টদের স্বাক্ষরসহ ভোটকেন্দ্রে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা।
এছাড়া ‘না’ ভোটের বিধান সংযুক্ত ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার দাবি এবং ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি বাদ দেওয়ার দাবি জানায় ন্যাপ।
পিডিপির দাবিগুলো হচ্ছে, ভোটারদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনা মোতায়েন, নির্বাচনী ব্যয় ও অর্থের অপচয় রোধে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পোস্টার ছাপানোর ব্যবস্থা, ইভিএম পদ্ধতির প্রয়োগ না করা, সব দলের সমান প্রচারণার পরিবেশ তৈরি করা, না ভোটের বিধান রাখা, নির্বাচনকালে সংসদ ও মন্ত্রীসভা ভেঙ্গে দিয়ে এবং প্রধানমন্ত্রীকে ঐচ্ছিক ছুটিতে পাঠিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সরকারের নির্বাহী প্রধান করে নির্বাচন পরিচালনা করা, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সমান সংখ্যক ভোটার নিয়ে বুথ স্থাপন, আইনি কাঠামো সংস্কার প্রভৃতি।
এর আগে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের পর গত ২৪ আগস্ট থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে ইসি। সোমবার পর্যন্ত ১৪টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ করল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
২০ সেপ্টেম্বর সকালে গণফ্রন্ট, বিকেলে গণফোরাম, ২১ সেপ্টেম্বর সকালে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বিকেলে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সঙ্গে ইসির সংলাপ হবে।