কিছু কিছু বন্ধুত্ব হুট করেই শুরু হয়ে যায়। কখনো কখনো টের পাওয়াই যায় না কখন, কি করে সম্পর্কটা শুরু হলো? কিন্তু একসময় সেই স্বল্প পরিচিত মানুষটিই হয়ে উঠে সবচেয়ে পরিচিত, সবচেয়ে আপন। সম্পর্ক কখনোই একজনের চেষ্টায় গড়ে উঠে না, সেজন্য আপনাকেও কিছু কাজ করতে হবে। যেন সহজেই অন্যজনের মনে জায়গা করে নেওয়া যায়। জেনে নিন তেমনই কিছু টিপস যেন খুব সহজেই হয়ে উঠতে পারেন পছন্দের মানুষটির খুব কাছের কেউ।
কপি করুন: মানুষ তেমন মানুষকেই পছন্দ করে যার আচার-আচরণ তারই মতো। এটাকে অনেকটা মিমিক্রিও বলতে পারেন। যখন কারো সঙ্গে কথা বলবেন চেষ্টা করুন তার শরীরিভাষা, নড়াচড়া কপি করতে। দেখবেন যার সঙ্গে কথা বলছেন তার খানিকটা ভালোই লাগবে তার মতোই একজনকে পেয়ে।
একসঙ্গে বেশি বেশি সময় কাটান: যার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে চাইছেন তার সঙ্গে বেশি বেশি সময় কাটান। দেখা যায় ছাত্র জীবনে যার সঙ্গে লাইব্রেরীতে বা ক্যান্টিনে বেশি সময় কাটানো হয় তার সঙ্গে একটা গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। যেটা কিনা পরবর্তী জীবনে বেশ কাজে আসে। যদি আপনাদের বাসস্থান অনেক দূরেরও হয় তাহলে চেষ্টা করেন সপ্তাহে একদিন কফি খেতে বা একসঙ্গে আরো বাড়তি কোনো ক্লাস করা।
অন্যদের প্রশংসা করুন: অন্যকে আপনি কি চোখে দেখেন সেটা দিয়েই সবাই আপনাকে বিবেচনা করে। এই গবেষণা প্রবন্ধের লেখকের মতে, আপনি মানুষকি কিভাবে ট্রিট করেন সেটা দেখেই মানুষ আপনার আচার-আচরণ বিবেচনা করে। তাই চেষ্টা করুন অন্যদের ইতিবাচকভাবে দেখতে।
মুড ভালো রাখুন: মন ভালো তো জগত ভালো। হাসিখুশি মনে থাকুন সবসময়। ওহিও বিশ্ববিদ্যালয় ও হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে হাসিখুশি মানুষকে সবাই পছন্দ করে। যদি আপনি কারো সঙ্গে থেকে তাকে খুশি করতে না পারেন তাহলে তাদের মধ্যে ইতিবাচক আবেগ প্রবাহিত করুন। দেখবেন সবার মনে সহজে জায়গা করে নিতে পারবেন।
তাকে আপনি পছন্দ করেন সেটা বোঝান: ভালোবাসার কথা শুধু মনে রাখা ঠিক নয়। সেটা মুখে আনুন। যাকে ভালোবাসেন চেষ্টা করুন তাকে সেটা বোঝাতে তাহলে তার মনেও আপনার জন্য জায়গা তৈরি হবে।
তার বন্ধুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব: শুধু একজনের সঙ্গেই নয়। চেষ্টা করুন তার বন্ধুদের সঙ্গেও বন্ধুত্ব করতে। তাহলে আপনার প্রতি তার টান আরো বাড়বে বৈ কমবে না। দুজনের মধ্যে কিছু কমন বন্ধু থাকলে দুজনের সম্পর্ক আরো গভীরতর হয়।
সব বিষয়ে মন্তব্য নয়: সব বিষয়ে মন্তব্য করলে সেটা অনেকেই পছন্দ করে না। যেখানে মন্তব্য করা দরকার সেখানে মন্তব্য করুন। যেখানে দরকার নেই সেখানে করবেন না। দেখবেন জীবন অনেক সহজ হয়ে যাবে। আর মানুষের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতাও বাড়বে।
নিজেকে বন্ধুত্বপূর্ণ করে তুলুন: নিজেকে সবসময় প্রতিযোগিতার মনোভাবের মধ্যে রাখবেন না। বরং নিজেকে বন্ধুত্বপূর্ণ করে তুলুন। তাহলে মানুষ সহজে আপনাকে পছন্দ করা শুরু করবে। আপনার যদি অনেক অর্থবিত্ত থাকে এবং সেটা আপনি ক্রমাগত বলতেই থাকেন তাহলে মানুষ আপনার সঙ্গে মিশবে কিন্তু দূরত্ব বজায় রেখেই মিশবে।
সবসময় ভালো কিছু চান: আপনি যদি একজনকে নিজের বন্ধু হিসেবে দেখতে চান তাহলে আপনি আগে তার বন্ধু হন। সহায়তার হাত বাড়ান দেখবেন আপনিও সহযোগিতা পাবেন। নতুন গড়ে উঠা সম্পর্কে সবসময় ভালো কিছু চান। দেখবেন আপনি ভালো কিছু পাচ্ছেন। কোনো ছোট্ট কাজে তাকে সাহায্য করুন। দেখবেন সেও আপনার পাশেই থাকছে।
হালকা করে ছুঁয়ে দিন: কাউকে ছুঁয়ে দিলে সেটা আরো বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে। ভেবে দেখুন আপনি যখন কারো মাথায়, পিঠে বা বাহুতে হালকা করে হাত রাখেন সেটা আপনাদের সম্পর্ককে আরো বেশি গাঢ় করে তোলে কিনা? হয়তো সে সেভাবে উপলব্ধিই করবে না। কিন্তু সেটা ঠিকই পরোক্ষভাবে কাজ করবে।
হাসি: একটি সম্পর্ক সহজ করে তোলার জন্য এটিই সবচেয়ে বড় সমাধান। হাসি অনেক সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে সহজে। মানুষ সবসময় ইতিবাচক মানসিকতার মানুষকে পছন্দ করে। আর ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে সকলেই আগ্রহী হয়।
অন্যকে কথা বলতে দিন: সবসময় নিজের কথা না বলে কখনো কখনো ভালো শ্রোতা হন। শ্রোতা সবাই হতে পারে না। হতে পারে অন্যজন যে বিষয়ে কথা বলছেন সেই বিষয়ে আপনার কোনো ধারণা নেই কিন্তু শুনতে তো কোনো সমস্যা নেই। শুনুন দেখবেন অন্য মানুষটির সঙ্গে আপনার সম্পর্ক আরো গভীরতর হয়ে উঠছে সহজে।
নিজের মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিন: প্রত্যেকটি মানুষেরই কিছু মূল্যবোধ থাকে। চেষ্টা করুন নিজের জায়গায় স্থির থাকতে। এবং সেটা অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিন। দেখবেন মানুষ আপনার মূল্যবোধ উপলব্ধি করছে এবং সেটা যদি তার মূল্যবোধের সঙ্গে মিলে যায় তাহলে সে সেটা আরো বেশি বেশি উপভোগ করবে। এতে করে সম্পর্কটাও গাঢ় হবে। সেটা যে কোনো মানুষের সঙ্গে মেশার ক্ষেত্রেই সত্যি।
অল্প খানিকটা সেন্স অব হিউমার: হাসি খুশি মানুষ যেমন সবাই পছন্দ করে তেমন, মজা করতে পারা মানুষও সবার মন জয় করে নিতে পারে সহজে। অল্প খানিকটা সেন্স অব হিউমার আপনাকে সবার মনে খানিকটা বাড়তি জায়গা করে নিতে সাহায্য করবে। তাই বলে কখনো অন্যকে ছোট করে মজা করার চেষ্টা করবেন না। তাতে করে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে।