বহু পরিচয়ে পরিচিত তিনি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার, পরিচালক এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক। বলছি সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হাসান ইমামের কথা। যদিও এই ‘সর্বজন শ্রদ্ধেয়’ কথাতে আপত্তি আছে তার।
সম্প্রতি এই অভিনেতা এসেছিলেন চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত আয়োজন ‘৩০০ সেকেন্ড’-এ। আর এখানে তিনি কথা বলেছেন তার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবন নিয়ে।
সঞ্চালক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ‘সর্বজন শ্রদ্ধেয়’ সম্বোধনে এই অভিনেতা কথা থামিয়ে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করে ‘সর্বজন শ্রদ্ধেয়’ কথাটা তিরস্কার, পুরস্কার নয়। কারণ সর্বজন শ্রদ্ধেয় সেই মানুষটিই হয়, যিনি সবদিকে তাল মিলিয়ে চলেন।
শিল্পী হয়েও কেন রাজনীতিতে দেখা যায়? এমন প্রশ্নে হাসান ইমাম বলেন, রাজনীতি ছাড়া কিছু নেই। যে বলে যে আমি রাজনীতি করি না, এটাও কিন্তু একটা বড় রাজনীতি। তবে আমি রাজনীতি করে কিছু পাবো, এই আশায় এটা করিনি। আমার জীবনের প্রয়োজনে রাজনীতি করেছি। মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার ছোট কালের অভ্যেস। সেজন্য আমি ছোট থেকেই রাজনীতি সচেতন।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে থেকে কীভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন, কথা কথায় হাসান ইমাম জানালেন সেসব কথাও। বললেন, যে স্বপ্ন নিয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি করেছিলেন সেটার প্রাসঙ্গিকতা এখনো চলমান। উদাহরণ হিসেবে সম্প্রতি হোলি আর্টিজান হামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আইএস সংশ্লিষ্টতার কথা বলেন তিনি।
হাসানের ইমামের জন্ম বর্ধমানে। ছেলেবেলা কেটেছে পশ্চিমবঙ্গেই। ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশে আসেন তিনি। সেবছরই প্রথমে দর্শনার সুগার মিলে এবং পরে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে কাজে যোগ দেন। এরপর শুরু করেন মঞ্চে অভিনয়। প্রতিবাদী শিল্পী সমাজের নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৯৬১ সালে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রবীন্দ্র জন্ম শতবর্ষের আয়োজন করেন। রক্তকরবী, রাজা ও রানী, তাসের দেশ নাটকে অভিনয় করেন।