মহামারীর শুরুর দিকে করোনাভাইরাস ছড়ানো বন্ধ করতে যুক্তরাজ্যের ব্যর্থতা ছিল জনস্বাস্থ্যের অন্যতম খারাপ ব্যর্থতা, এমপিদের দেওয়া এক রিপোর্টে এমন কথা বলা হয়েছে।
তারা বলছে, বিজ্ঞানীদের অনুমোদিত সরকারি পদ্ধতি দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছিলো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার এবং বাস্তবে সংক্রমণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করার।
এর ফলে প্রথম লকডাউন দিতে অনেক দেরি হয়ে যায়, যেটা কেড়ে নেয় অনেক প্রাণ। ওই রিপোর্টে কিছু সফলতার কথাও উঠে এসেছে, বিশেষভাবে বললে ভ্যাকসিন প্রদানের কথা বলা হয়েছে।
তারা গবেষণা এবং বিকাশ থেকে শুরু করে ভ্যাকসিন বিতরণ পর্যন্ত পুরো পদ্ধতির বর্ণনা দিয়েছে- ‘যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের অন্যতম কার্যকর উদ্যোগ’ হিসাবে।
দেশের সব দলের এমপিদের সমন্বয়ে গঠিত স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা কমিটি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমিটির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রতিবেদনে ফলাফলগুলো বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
কমিটির ১৫০ পাতার ওই প্রতিবেদনে মহামারীকালে বিভিন্ন ধরনের সফলতা ও ব্যর্থতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এই সময়ে দেড় লাখ মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে এবং সেটাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে শতাব্দীর শান্তির সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে।
এই কমিটির প্রধান টরির দুই এমপি জেরেমি হান্ট এবং গ্রেগ ক্লার্ক বলেন, মহামারীর প্রকৃতিই হচ্ছে, কোনোকিছু ঠিকঠাকভাবে পাওয়া কঠিন হবে। যুক্তরাজ্য কিছু বড় বড় অর্জনের সঙ্গে কিছু বড় বড় ভুলও করেছে। তাই দুই জায়গা থেকেই শিক্ষা নেওয়া জরুরি।
দেশটির সরকারি মুখপাত্র বলেছে, শিক্ষা গ্রহণ করা হবে। এর ফলে আগামী বছরে পুরোপুরি সরকারি তদন্ত করা হবে।
তিনি যোগ করেন, জীবন বাঁচাতে এবং আমাদের এনএইচএসকে সুরক্ষিত করার জন্য দ্রুত এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে আমরা কখনও পিছপা হইনি, যার মধ্যে বিধিনিষেধ এবং লকডাউন প্রবর্তনও রয়েছে।
‘একটি সম্মিলিত জাতীয় প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ, আমরা এনএইচএস পরিষেবাগুলো অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাওয়া এড়াতে পেরেছি।’
কিন্তু লেবার পার্টির ছায়া স্বাস্থ্য সেক্রেটারি জোনাথন অ্যাশওয়ার্থ বলেন, ফলাফলগুলো ‘জঘন্য’ ছিল এবং দেখিয়েছে যে ‘স্মারক ত্রুটি’ কী করা হয়েছিল।
এমপিদের এই দলটি করোনাভাইরাস মহামারীতে যারা নিজেদের প্রিয়জন হারিয়েছেন তাদের পরিবারের কারও সাথে কথা না বলার জন্য সমালোচনা করেছেন। তাছাড়া ওয়েলস, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের নেওয়া আলাদা আলাদা পদক্ষেপের দিকে নজর দেয়নি কমিটি।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে, ২৩ মার্চ সেখানে প্রথম লকডাউন ঘোষণা করা হয়, পরে ৮ ডিসেম্বর দেশটিতে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হয়।