একসঙ্গে তিনটি সিনেমা নির্মাণ করবেন বলে জানিয়েছিলেন এক সময়ে বাংলা চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা ফারুক। গেল অক্টোবরে শোনা গিয়েছিল, ২০১৮ সালের শুরুতেই ছবিগুলোর কাজ শুরু করবেন। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টেছেন।
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে ফারুক বলছিলেন, সিনেমা বানিয়ে দর্শকদের দেখাবো কোথায়? প্রপারলি সিনেমা বানিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বলবো, আমার ছবি দেখুন?আমি তেমন মানুষ নই। সিনেমা বানালে হলে প্রদর্শনের ভালো ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত আমি সিনেমা নির্মাণ করব না।
ফারুক বলেন, আমাদের যেসব হল রয়েছে সেগুলো ব্যক্তিগতভাবে কব্জা করে রেখেছেন গুটিকয়েক মানুষ। আমি তাদের ভালো করে চিনি। তাদের কর্তৃত্বে হলে ছবি চলে। আমার নির্মিত সিনেমা তাদের কর্তৃত্বে কেন চলবে? অন্য মানুষকে প্রজেক্টর ভাড়া দিয়ে ছবি কেন চালাবো? সরকার হলে প্রজেক্টর না দিলে সিনেমা বানাবো না। তাছাড়া সিনেমা হলের পরিবেশ ঠিক করতে হবে। ডিজিটালাজইড, শব্দের উন্নতি, স্ক্রিন পরিবর্তন; এসব কিছু করতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এই সামান্য বিষয়টি সরকার চাইলেই সমাধান করতে পারেন।
কিন্তু সরকারী অনেক লোক, কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মনোযোগী হতে চান না। সরকার প্রধানকে চিঠি পাঠালে, সেই চিঠি ঠিকভাবে পৌঁছায় না। যেখানে লাগবে প্রজেক্টর, সেখানে আনা হচ্ছে ক্যামেরা। হলের উন্নতি না করে কবিরপুরে শতাধিক একর জমিতে ফিল্ম সিটি তৈরি হচ্ছে। সেখানে কোটি কোটি টাকা খরচা করা হচ্ছে, কেন? এসব করে কী হবে? আর কেন এমন করা হচ্ছে সেটা আমার জানা নেই।-এভাবেই একের পর এক হতাশার কথা বলতে থাকেন ‘সারেং বৌ’ খ্যাত এই চিত্রনায়ক।
উদাহরণ টেনে ফারুক আরো বলেন, আমি জেনেছি গত বছরের আলোচিত সিনেমা ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সাত কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। কিন্তু এই ছবির প্রযোজক আমাকে জানিয়েছেন, তিনি এক কোটির বেশি টাকা ফেরত পেয়েছেন। তাহলে বাকি টাকা কই গেল? তাই সবার আগে বলতে চাই, আগে প্রজেক্টর মেশিন আর সিনেমা হল নির্মাণের জন্য মালিকদের দীর্ঘমেয়াদি লোন দেয়া। এরপর আর কোনো কথা থাকতে পারেনা। তাহলেই ফিল্মের সুদিন ফিরে আসবে।
কথায় কথায় মিয়াঁভাই খ্যাত এই অভিনেতা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেছিলেন, আমার তিনটি ছবির গল্প ও স্ক্রিপ্ট তৈরি করা আছে। একটি ছবির গল্প দেশ ভাগাভাগি নিয়ে, একটি মানবতার অন্যটি অটিস্টিক মানুষদের নিয়ে। তিনটি নির্মিত হবে আমার প্রডাকশন হাউজ থেকে। তবে হাউজের নাম এখনও ঠিক করিনি। এই ছবির সঙ্গে আরো কিছু মানুষ জড়িত থাকবেন। আমার ছবিতে গান করবেন গাজী মাজহার। সি ছবি বানাতে হলে মিউজিক লাগবে। বানানো মিউজিক দিয়ে আমি সিনেমা করবো না। আলাউদ্দিন আলী, শেখ সাদী, আলম খানের মতো মানুষ আছেন, মিউজিক নিয়ে তাদের সঙ্গে আমি কথা বলবো। এইসব ট্যালেন্ট মানুষদের নিয়ে আমি কাজ করতে চাই। তবে আগে সরকারীভাবে হলে প্রজেক্টর দিতে হবে, হল উন্নত করতে হবে।