দেশের বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির বিষয়টি নতুন নয়। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং যখন যে দল রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে সেই দলের নানা স্তরের নেতাকর্মীদেরই অধিকাংশ সময়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে দেখা যায়।
বাংলাদেশের এখন দুর্নীতিতে টানা কয়েকবারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্ক না থাকলেও পরিস্থিতির যে খুব একটা বদল হয়েছে তা নয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যে দুর্নীতি বন্ধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা যুগান্তকারী। এরই অংশ হিসেবে কয়েক দফায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন বাড়ানো হয়েছে।
দুর্নীতিতে যাতে সরকারি চাকরিজীবীদের জড়াতে না হয় এজন্যই তাদের চাহিদার আলোকে বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছিল। তবে এরপরও দুর্নীতি কমেনি বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
‘জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচার: নীতি ও চর্চা’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়লেও দুর্নীতি কমার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
ওই প্রতিবেদনে জনপ্রশাসনের নিয়োগ, পদোন্নতি, ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা), চুক্তিভিত্তিক নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয়। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির খবরে তোলপাড় হয়েছে।
আমরা বরাবরই বলে আসছি, জনপ্রশানসহ দেশের বিভিন্ন খাতে এমন অনিয়ম কখনোই কাম্য নয়। তাই নতুন করে উঠে আসা এসব অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের গুরুত্ব সহকারে আমলে নিতে হবে। দুর্নীতি করে কেউ যে পার পাবে না, এই কঠোর বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ের দুদকের একজন উদ্ধর্তন কর্মকর্তা দুর্নীতির অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ, এধরণের ঘটনা উদ্বেগজনক।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচন পরবর্তী সময়েও তিনি তার বিভিন্ন বক্তব্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন।
আমরা মনেকরি, প্রধানমন্ত্রীর একার পক্ষে কোনোভাবেই দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এমনকি সাধারণ জনগণের সহযোগিতাও এক্ষেত্রে প্রয়োজন। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে এগিয়ে আসতে আমরা সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।