নানামুখি সমালোচনা হলেও গত ৯ বছরে ব্যাংকিং খাতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান।
বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার হোটেল সোনারগাঁয় ‘ফাস্ট মুভিং কনস্যুমার গুডস মাইক্রো-মার্চেন্টস ল্যান্ডসকেপ অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এফবিসিসিআই এবং ইউএন ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ) যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
সভায় এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্যানেল আলোচনায় আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন বহুজাতিক ও স্থানীয় বিপনন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ইউনুসুর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে সমালোচনা হলেও বর্তমান সরকারের ৯ বছরে এ খাতে অনেক উন্নতি হয়েছে। ২০০৮ সালে ব্যাংক খাতে নগদ টাকা ছিল ৩ লাখ কোটি টাকার কিছু কম, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১০ লাখ কোটি টাকা। এছাড়া ওই সময় ব্যাংকে আমানত ছিল আড়াই লাখ কোটি টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮ লাখ কোটি টাকা। ব্যাংকে হিসাব সংখ্যাও বেড়েছে আগের তুলনায় প্রায় ৩শ শতাংশ।
এজেন্ট ব্যাংকিং আরো বাড়ানোর প্রতি জোর দিয়ে তিনি বলেন, শহরে ও গ্রামে প্রতি সাড়ে ১৭ হাজার মানুষের জন্য একটি করে সরকারি কিংবা বেসরকারি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। তবে শহরের চেয়ে গ্রামে ব্যাংকের শাখা কম। সেক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকিং সেবা পৌছে দিতে এজেন্ট ব্যাংকিং আরো প্রসার করা যেতে পারে।
আর্থিক বিভাগের সচিব বলেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে যে হারে সমালোচনা হচ্ছে সে অর্থে আসলে এ খাতের অবস্থা এত খারাপ নয়। সমালোচনা করা ভাল। কিন্তু এত বেশি সমালোচনা উচিত নয় যেটা এ খাতের ক্ষতি করবে।
‘তবে হ্যাঁ কিছু সমস্যা আছে। সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। দোষীদের সনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইউনুসুর রহমান বলেন, দেশে চরম দারিদ্র সীমা বর্তমানের ১০ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে বর্তমান প্রশাসন কার্যকর উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার পর বাকিটা দূর করা কষ্টসাধ্য হতে পারে।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, তাদের ব্যবসার জন্য ঋণের মাধ্যমে মাত্র ১৩ শতাংশ অর্থ পান ব্যাংকিং খাত থেকে। বাকি ৮৩ শতাংশ ঋণ পান বিভিন্ন ব্যক্তি বা এনজিও থেকে। তাই এ খাতে ব্যাংকের ঋণ প্রদান বাড়ানোর বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সিনিয়র সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, দেশের অর্থনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্র। সেক্ষেত্রে তাদের প্রতি সংশ্লিষ্টদের নজর বাড়াতে হবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ইউএনসিডিএফের আঞ্চলিক উপদেষ্টা ভিনসেন্ট উইয়েরদা, এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ এবং শিফ্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রকল্প সমন্বয়ক আশরাফুল আলম প্রমুখ।