চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সব জায়গাতে সিন্ডিকেট আছে, আমি ভুক্তভোগী: মুক্তি

‘আমার সিনেমা করার ইচ্ছে আছে। তবে সেটা গল্প নির্ভর কাজ হতে হবে। সবকিছু মিলে গেলে অবশ্যই আবার সিনেমা করবো।’

মডেলিং, নাটকের পরিচিত মুখ আয়েশা সালমা মুক্তি। নৃত্যশিল্পী হিসেবে শোবিজে পথচলা শুরু। একটু একটু করে মডেলিং, নাটকে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন। কাজ করেছেন তিনটি চলচ্চিত্রে। তবে মুক্তির সবচেয়ে বেশি পরিচতি এনে দিয়েছিল সালাউদ্দিন লাভলুর জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘রঙের মানুষ’। এ অভিনেত্রীর আরেক সিরিয়াল মাবরুর রশিদ বান্নাহর ‘বদমাশ পোলাপান’ সম্প্রতি আলোচিত হয়েছে। সমসাময়িক নাটক, সিনেমার নানা বিষয় নিয়ে মুক্তির সাথে কথা হয় চ্যানেল আই অনলাইনের…

বর্তমানের কাজের আপডেট কী?
‘বদমাশ পোলাপান’ সিরিয়াল করলাম। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে এর ‘সিজন ২’ আসছে। কিছু বিজ্ঞাপনে কাজের কথা চলছে। এছাড়া তৌসিফের সঙ্গে মেহেদী হাসান হৃদয়ের পরিচালনায় একটি কাজ করেছি। বেছে বেছে কাজ করি। ভালো না লাগলে করি না। সংখ্যায় বিচার করে কেন জানি আমার কাজ করা হয়না।

‘বদমাশ পোলাপান’ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
এই সিরিয়ালটা থেকে অনেক ভালো রেসপন্স পেয়েছি। অনেকদিন পর কাজে কলেজ, টিচার, স্টুডেন্টসদের ফ্লেবার ছিল। অন্য নাটকে পাওয়াই যায়না। ওই লাইফের ফান, স্বপ্নগুলো এ নাটকে এসেছে। আমিও একসময় ওই লাইফটা ফেলে এসেছি। এ কাজের মাধ্যমে কিছুটা হলেও সেইসময়ের ফিলগুলো পেয়েছি। এর আগে বান্নাহর পরিচালনায় ‘আমি বিয়ে করবো না’ নামে একটি ফিকশন করেছিলাম। তারপর এটা। এতো চমৎকার একটি কাজের সঙ্গে আমাকে রাখার জন্য পরিচালককে ধন্যবাদ।

‘রঙের মানুষ’ করে যেমন রেসপন্স পেয়েছেন, বদমাশ পোলাপানে তেমনটা পেয়েছেন?
‘রঙের মানুষ’ এর রেসপন্স ছিল পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত। তখন ডিস লাইন খুব কম মানুষের বাসায় থাকতো। তারপরেও প্রচুর রেসপন্স পেয়েছিলাম। এখন ইউটিউবে যাওয়ার ফলে অন্যরকম রেসপন্স পাচ্ছি। সবার হাতে হাতে ওপেন মার্কেট। ভালো মন্দ মন্তব্য সরাসরি দর্শক জানাচ্ছেন। আমি বিষয়টি খুব উপভোগ করছি।

সেই শিশু নৃত্যশিল্পী থেকে আজকের অবস্থান। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে চারপাশের কাজের পরিবর্তনে কোনটা বেশি অনুভব করেন…
আগে কাজটাকে আমরা শ্রদ্ধার জায়গায় রাখতাম। গুছিয়ে, রিল্যাক্স হয়ে কাজ করতাম। এতে কাজের মান অনেক ভালো হতো। এখনকার মতো এক-দুই দিনে মাথার উপর ছুরি চালানোর মতো কাজ হতো না। এখন কিছু মানুষ বা শিল্পীরা ঢুকে গেছে যে তারা অভিনয়ের এই জায়গাটাকে এলোমেলো করে ফেলেছে। এদিক থেকে অসুবিধা রয়েছে। এখন গোছানো ও ভালো মানের কাজ খুব খুব খুব কম হয়। বলতে গেলে নেই। এরমধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে। কিছুই করার নেই। তবে আশা করবো নাটক বা সিনেমা দুই মাধ্যমেই পরিবেশ গোছানো এবং রিচ হোক। গল্প ভিত্তিক কাজ বেশি হোক, সম্প্রতি যেসব ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো নিয়ে কাজ হোক। যেসব গল্প দেখলে মানুষ নিজের সঙ্গে রিলেট করতে পারবে সেসব কাজ বেশি হোক। কারণ, ইন্টারনেটের কল্যাণে মানুষ এখন খুবই সজাগ। বোদ্ধার কোনো অভাব নেই। তাই কপি করলেই রেহাই নেই।

নাটক সংশ্লিষ্ট অনেকের অভিযোগ, এখন সিন্ডিকেটে কাজ হচ্ছে। সত্যি কি তাই?
আমি এটা ফিল করি। খুব সম্প্রতি এটার সম্মুখীন হয়েছি। আগে আমি বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু ইদানিং সিন্ডিকেটের মুখোমুখি হচ্ছি। সিন্ডিকেটের বাইরে কাস্টিং হতে গেলে সমস্যা হয়ে যায়। এটা নিয়ে তারা কলকাঠি নাড়ে। কতটা ট্যালেন্ট সেটা গুরুত্ব পাচ্ছে না, কতটা সম্পর্ক দিয়ে কনভিন্স করতে পারেন সেটা গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু আমি বলবো ট্যালেন্টদের জায়গা দেয়া উচিত।

সিন্ডিকেট কারা করে?
শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালক সব জায়গাতেই সিন্ডিকেট আছে। নাম জানাতে চাই না। তবে আমি বলবো, যারা ইনসিকিউর তারা সিন্ডিকেট বা গ্রুপিং করে। সিন্ডিকেটের কাজ হচ্ছে এর সঙ্গে কাজ করা যাবে, ওকে নেয়া যাবে না; প্রচুর সমস্যা এটা। আমি নিজে কখনই সিন্ডিকেট গ্রুপিং করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না। তবে আমি ভুক্তভোগী। আমাদের শুরুর সময়টা এই বিষয়গুলো ছিল না। কিন্তু এখন বিরাজ করছে।

কয়েকটি সিনেমাও করেছেন। আপনার একটি সিনেমার নায়ক ছিলেন শাকিব খান। পরে আর সিনেমা করলেন না কেন?
আমি তিনটি সিনেমা করেছি। প্রথম সিনেমা ‘তুমি আছো হৃদয়ে’ যখন করেছি তখন অশ্লীল সময় ছিল। ফিল্মে কাটপিস চালিয়ে দেয়া হতো। ওই সময়ে সিনেমাটা একেবারে বেমানান ছিল। একটু বেশি আপগ্রেটেড সিনেমা ছিল। তখন আমার মনে ভয় কাজ করতো ভুলভাবে যেন ফেঁসে না যাই। গল্প পছন্দ করে কাজ করা কঠিন হচ্ছিল। এরপর শাকিবের সঙ্গে অ্যাকশন ফিল্ম ‘জোর করে ভালোবাসা হয়না’ করলাম। আবার সিনেমার অবস্থা খারাপ হতে থাকলো। বছরে সিনেমার সংখ্যা কমে যেতে থাকলো। এরমধ্যে আমি ফিল্মে কাজ করছি দেখা যায় পাঁচদিন শুটিং করার পর আমি বাদ যাচ্ছি। কেন বাদ দেয়া হচ্ছিল আমি নিজেও জানি না। এভাবে আট-দশটা সিনেমা থেকে আমাকে বাদ দেয়া হয়। এরপর আশরাফ শিশিরের ‘আমরা একটি সিনেমা বানাবো’তে কাজ করলাম, যেটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমা। বিভিন্ন উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। তবে অবশ্যই আমার সিনেমা করার ইচ্ছে আছে। তবে সেটা গল্প নির্ভর কাজ হতে হবে। ফিল্ম হচ্ছে টিমওয়ার্ক। সবকিছু মিলে গেলে অবশ্যই আবার সিনেমা করবো।