যে কোনো আন্দোলন সফল করতে, যে কোনো অন্যায়ের বিচার পেতে চাইলে- সত্যের বিকল্প নেই। মনে করুন, কেউ একজন আপনার লেখা চুরি করে পোস্ট করে ধরা পড়লো। তখন তার অন্যান্য লেখা নিয়েও কি আপনার সন্দেহ হবে না?
লংগদুর তিনশো ঘরে যখন আগুন দেওয়া হয়, তখন আমি বেশ কিছু ছবি পোস্ট করার পর একটি ছবি নিয়ে আমার দুই বন্ধু আপত্তি জানায় যে, ছবিটা টঙ্গী থেকে তোলা। আমি সাথে সাথে ছবিটি সরিয়ে ফেলি। লংগদুর অনেক হৃদয় বিদারক ছবি থাকতেও কে বা কারা অন্য জায়গার ছবি পোস্ট করেছে! এর ফলে কি হয় জানেন? এর ফলে সত্যি ঘটনাকেও মিথ্যে মনে হতে পারে। আসল ফোকাস সরে যায় অন্যদিকে। অতি আবেগে একটি ভুল করে ফেললে পরে তার কড়া মাশুল দিতে হবে।
দেশে একের পর এক ধর্ষণ ঘটে চলছে, ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়া সহজ নয়। কারণ, কেউ সাক্ষী রেখে ধর্ষণ করে না। গ্যাং রেইপিস্টদের মধ্যে তো পুরো দলটাই দায়ী। এমনকি সেখানে উপস্থিত কেউ যদি সক্রিয় অংশ না-ও গ্রহণ করে, তবুও সে বাধা না দেওয়ার ফলে একজন সহযোগী হিসেবেই পরিগণিত হবে।
বনানীর দ্বিতীয় ধর্ষণের অভিযুক্ত ব্যক্তির মতে, সেই মেয়েটি নাকি টাকার বিনিময়ে তার কাছে গিয়েছিল। এখন ব্যাপার হচ্ছে, নিজেকে বাঁচাতে সে এরকম কথা বলতেই পারে। কিন্তু এই কথা সত্যি হলে তো মহা বিপদ! যে কোন অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধের প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ বলেই বিবেচিত হবে। কিন্তু এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে অন্যান্য যারা অভিযোগ করেছেন তাদের দিকেও লোকে সন্দেহের চোখে তাকাতে পারে!
কাজেই যে কোনো প্রতিবাদ, নালিশ করার আগে সত্যের সাথে থাকুন। কারণ একবার বিশ্বাস হারালে সেটা আর সহজে উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। সত্য সাদাকালো হলেও সত্য, আর যতো রঙিনই হোক মিথ্যা মিথ্যাই।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)