চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘সত্যের মৃত্যু নেই’ দিয়ে পর্দা নামছে সালমান শাহ জন্মোৎসবের

রাজধানীর মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহে চলছে সপ্তাহব্যাপী ‘সালমান শাহ জন্মোৎসব-২০১৯’। ১৯ সেপ্টেম্বর জমকালো উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এই উৎসবের যাত্রা হয়।

২০ সেপ্টেম্বর উৎসবের প্রথম ছবি হিসেবে প্রদর্শিত হয় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। অন্যদিকে আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) উৎসবের পর্দা নামছে ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ ছবিটি দিনব্যাপী প্রদর্শনের মাধ্যমে।

মাঝের দিনগুলোতে প্রদর্শিত হয়েছে সালমান শাহ’র জনপ্রিয় ছবি ‘তোমাকে চাই’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ ও ‘অন্তরে অন্তরে’। শো টাইম- বেলা ১২টা, ৩টা, সন্ধ্যা ৬টা ও রাত পৌনে ৯টা। টিকিট মূল্য ১০০ ও ১৫০ টাকা।

ঢুলি কমিউনিকেশনস আয়োজিত ও টিএম ফিল্মস নিবেদিত প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই উৎসবের প্রথম দিন থেকেই দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহে। শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও সালমান ভক্তরা ছুটে এসেছেন বড় পর্দায় অমর নায়কের সিনেমা দেখার জন্য।

উৎসব প্রসঙ্গে ঢুলি কমিউনিকেশনস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ মানজুর বলেন, ‘চোখের পলকে উৎসবের সমাপনী দিন চলে এলো। অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের। সাধারণ মানুষের যে পরিমাণ সাড়া আমরা পেয়েছি, সেটি এক কথায় অবিশ্বাস্য। আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই সালমান শাহ ভক্তদের। তারাই আমাদের উৎসবকে প্রাণবন্ত রেখেছে পুরো সপ্তাহ জুড়ে। আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই টিএম ফিল্মস, মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহ, গান বাংলা ও মিডিয়া কর্মীদের। যাদের সহযোগিতা ও সমর্থন ছাড়া এত বড় উৎসব সফল করা সম্ভব হতো না। আমরা স্বপ্ন দেখি সালমান শাহ-এর ৫০তম জন্মবার্ষিকী দেশজুড়ে আরও বর্ণিল আয়োজনে করার। সেই প্রস্তুতি আমরা এরমধ্যে শুরু করেছি।’

উৎসবের সমাপনী ছবি ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। যার মাত্র ৭দিন আগেই (৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান স্বপ্নের এই নায়ক।

ছবিটি পরিচালনা করেছেন ছটকু আহমেদ এবং যৌথভাবে রচনা করেছেন ছটকু আহমেদ ও পানাউল্লাহ আহমেদ। এতে আরও অভিনয় করেছেন আলমগীর, শাবানা, শাহনাজ, রাইসুল ইসলাম আসাদ ও রাজীব। ছবিটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আলাউদ্দিন আলী। গীতরচনা করেছেন মাসুদ করিম।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই নায়ককে অকালে হারিয়ে যেভাবে দেশবাসী ও ভক্তরা শোকে মুহ্যমান ছিলেন এবং কান্নায় বুক ভাসিয়েছেন, ঠিক এক সপ্তাহ পর ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ সিনেমাটি মুক্তি পাবার পর তা দেখতে এসেও ঠিক একইভাবে ভক্তদেরকে কাঁদতে দেখা গেছে।

আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহে আবারও সেই ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে। এই সিনেমা দেখতে আসা দর্শক-ভক্তদের মধ্যে হয়তো আবারও কান্নার রোল উঠবে। এমনটাই মনে করেন সালমান শাহ স্মৃতি সংসদের প্রধান মাসুদ রানা নকীব।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৪ সালে ঢুলি কমিউনিকেশনসের উদ্যোগে রাজধানীর বলাকা প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হয় ‘সালমান শাহ স্মরণ উৎসব’। সে বছর ৬ সেপ্টেম্বর এই নায়কের মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে আয়োজিত উৎসবটি ব্যাপক সাড়া ফেলে সারাদেশে।

৯০ দশকের শ্রেষ্ঠতম নায়ক সালমানের প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। এ অভিনেতা মাত্র ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। যার বেশিরভাগই ছিল তুমুল জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল। মাত্র তিন বছরের অভিনয় জীবনে এমন দর্শকপ্রিয়তা চলচ্চিত্র ইতিহাসে বিরল।

১৯৯৩ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‌‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ মুক্তি পায়। এরপর থেকেই বাংলা চলচ্চিত্রে ভরসার প্রতিশব্দ হয়ে ওঠেন এ নায়ক। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনে নিজ ফ্ল্যাটে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় এই নন্দিত নায়কের লাশ। এ মৃত্যুর রহস্য আজও উন্মোচিত হলো না।