যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত হওয়া অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য নতুন প্রজাতির করোনাভাইরাসটি শনিবারের মধ্যে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং লেবাননে এ প্রজাতির বিস্তার রোধে ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও বৈশ্বিক ভ্রমণ ও চলাচলে ব্যাপক সীমিতকরণের মাধ্যমে এর বিস্তারকে আটকাতে চেষ্টা করেছে দেশগুলো।
কিছু দেশে যখন কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে ঠিক তখনিই এ নতুন প্রজাতির ভাইরাসটি দ্রুত বিস্তার ছড়িয়ে পড়তে শুরু করায় আশঙ্কার তৈরি হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বর্তমানের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনগুলির তুলনায় ব্রিটিশ করোনার নতুন রূপটি মারাত্মক প্রাণঘাতী বা প্রতিরোধী নয়।
নতুন এ ভাইরাস ইতিমধ্যেই ইউরোপের ফ্রান্স, ডেনমার্ক, স্পেন, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি এবং ইতালিতে শনাক্ত করা হয়েছে।
কানাডার অন্টোরিও এর চিফ মেডিক্যাল অফিসার শনিবার ঘোষণা করেন, তারা নতুন আক্রান্ত দু’জনকে শনাক্ত করেছে। নতুন প্রজাতির আক্রান্ত প্রথমটি শনাক্ত করা হয় দেশটির নর্থ আমেরিকা রাজ্যে। শনাক্ত হওয়া দু’জনের কোনো ভ্রমণ ইতিহাস নেই। তাই ধারণা করা হচ্ছে এটি সামাজিক বিস্তারের মাধ্যমে ছড়িয়েছে।
তবে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি হওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনো এ প্রজাতির ভাইরাস শনাক্তের কথা জানা যায়নি। সতর্কতা হিসেবে গত সোমবার থেকে যুক্তরাজ্যে থেকে আসা সকল যাত্রীর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যদিও করোনা মহামারি শুরুর দিকে দেশটি চীন ও ইউরোপে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
শুক্রবার জাপানের টোকিওতে প্রথম নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ জনকে শনাক্ত করা হয়। আক্রান্ত হওয়া ওই পাঁচজনই যুক্তরাজ্য ভ্রমণ করেছিলেন। তারপর থেকেই জাপান সকল বিদেশিদের একমাসের জন্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রজাতির ভাইরাসের বিস্তার রোধে ইউরোপের বেশকয়েকটি দেশের পাশাপাশি অন্যান্য মহাদেশের কয়েকটি দেশ যুক্তরাজ্যে থেকে আসা ভ্রমণকারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা অথবা ভ্রমণ সীমিত করেছে।
ফ্রান্স প্রথমে যুক্তরাজ্যে থেকে আসা ভ্রমণকারীদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করেছিল। কিন্তু গত বুধবার থেকে ইইউ নাগরিকদের প্রবেশ করার অনুমতি দেয়। তবে আশার কথা হলো প্রথম ইইউ এর দেশ হিসেবে শনিবার হাঙ্গরি প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের কার্যক্রম শুরু করে। এরপরে রোববার থেকে ফ্রান্স, জার্মানি এবং স্পেন ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করে।
গত ১৪ ডিসেম্বর ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা একটি নতুন ধরণের করোনাভাইরাস স্ট্রেন শনাক্ত করেন, দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে উচ্চ সংক্রমণের জন্য দায়ী হতে পারে।
১৯ ডিসেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনার এই নতুন স্ট্রেন ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক হতে পারে।