ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অগ্রণী ও অপরিসীম বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
তিনি আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২১ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
বুধবার সন্ধ্যায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক মো. নূর ইসলামের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিন বাঙালি জাতির জন্য এক মাহেন্দ্রক্ষণ। এ বছর মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতির পিতার জন্মদিন উদ্যাপন সকলের কাছে অনন্য ঐতিহাসিক মাত্রা যোগ করেছে।বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে হয়তো আজও এদেশ স্বাধীন হতো না। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অগ্রণী ও অপরিসীম।
‘‘১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ এর ছয়দফা আন্দোলন, ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান পেরিয়ে’ ৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’’
তিনি বলেন, বিশ্ব রাজনৈতিক পরিমন্ডলেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাধারনের মধ্যে অসাধারন। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী কুটনৈতিক। তার অবস্থান ছিল সবসময় শোষন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। বিশ্ব মানবতার জন্য তার ভালোবাসা ছিল প্রবল। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার প্রচেষ্টা ছিল নিরন্তর।
ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাওয়া যায় ছেলে বেলা থেকে আমৃত্যু তার চরিত্রে সকল মানবিক গুণাবলির সন্নিবেশ ঘটেছিল- যা আমাদের সকলের জন্য, বিশেষ করে এ দেশের শিশু-কিশোরদের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। পরিশেষে তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শকে লালন করে দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে সকলকে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে তিনি আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপনের লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মন্ত্রণালয় প্রাঙ্গণে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
পতাকা উত্তোলন শেষে সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতির পিতার জন্মদিনের কেক কাটা হয়। অতিরিক্ত সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিকের সভাপতিত্বে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২১’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনু্ষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খোকা থেকে জাতির পিতা ও বিশ্বনেতা হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন এ দেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন।
আলোচনা সভা শেষে মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ভিত্তিক ভিডিও ক্লিপিংস/ফুটেজ প্রর্দশন করা হয়।
পরে সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল মন্ত্রণালয়ের গ্রন্থাগারে স্থাপিত ‘মুজিব কর্নার’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সম্পর্কিত ডকুমেন্টেশন সেন্টার’ এর শুভ উদ্বোধন করেন।
এরপর বাদযোহর গণভবন জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে দিনের কর্মসূচির সমাপ্তির ঘোষণা করা হয়।