গোটা বিশ্বের ঘুম হারাম হয়ে গেছে সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো অভিবাসীদের নিয়ে। ২৯ মে সেই সমস্যা নিয়ে থাইল্যান্ডে আলোচনায় বসেছে সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা। সবার মতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারাই হচ্ছে এই সমস্যার মূল কারণ। সেই মিয়ানমারের সংসদে বসে এমপিরা ঘুমাচ্ছেন, এমন একটি ছবি পুরো ইন্টারনেট জগত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
এই সপ্তাহে সাংবাদিকরা মিয়ানমারের সংসদের চেয়ারে বসা দুজন মন্ত্রীর ঘুমের ছবি তুলে ফেলে। এবং সেটা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়।
ফলাফল? সাংবাদিকরা সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ সংসদের ভেতরে। এর পর থেকে সংসদের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া কেবল টিভি স্ক্রিনের মধ্যে দিয়ে নজর রাখার অনুমতি দেয় সংসদ।
ফেসবুকে ছড়ানো ছবিটির মন্তব্যে কেউ বলছেন ‘বিষয়টা খুবই হাস্যকর।’ আবার কেউ বলছেন ‘বাস্তবতা হচ্ছে এই গ্রহের সবগুলো মানুষ ক্লান্ত।’
মিয়ানমার সাংবাদিক নেটওয়ার্কের অং থাউরা বলেন, আমাদের কাজ হলো চিত্রগ্রহণ করা, সে সময় তারা ঘুমাক অথবা মারামারি করুক।
দেশব্যাপী চলা প্রবল হট্টগোলের মধ্যে অবশেষে সংসদ আগামী সোমবার থেকে আবার সাংবাদিক এবং ক্যামেরা পার্লামেন্ট হাউজে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছে।
মিয়ানমারের আইনপ্রণেতাদের বিব্রতকর ছবির এটি হলো নতুন আপগ্রেড। এর আগে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায়, একজন এমপি ভোটিং মেশিনের বাটনে চাপ দিচ্ছেন তার পাশের জনের অনুপস্থিতিতে। আর তার আগে একটি ছবিতে দেখা যায়, চারপাশে নানান বিতর্কের মধ্যেও একজন এমপি তার ট্যাবলেট নিয়েই ব্যস্ত।
মিয়ানমারের সাংবাদিক এবং সরকারের মধ্যে সম্পর্ক সবসময়ই অম্ল। এর আগে এক সাংবাদিককে আটক করা হয়েছিলো ফেসবুকে ব্যাঙ্গাত্মক পোস্ট দেয়ার জন্য। গত বছর ভুল খবর প্রকাশ করে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বয়ে আনার অভিযোগে জেল দেয়া হয় ১০ সাংবাদিককে।
মিয়ানমারের আইন অনুযায়ী, আতঙ্ক সৃষ্টিকারী যেকোনো খবর প্রকাশের জন্য গণমাধ্যম দণ্ডিত হতে পারে এবং আইন এবং আদেশের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে। গত বছর মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন বলেছিলেন, যদি এমন কোনো গণমাধ্যম থাকে যেটা কিনা দেশের স্বার্থে খবর প্রকাশ না করে বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করছে এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে তাহলে তার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২০১৫ সালের রিপোর্টার উইথআউট বর্ডারের হিসাবমতে, স্বাধীন গণমাধ্যমের তালিকায় ১৮০ টি দেশের মধ্যে মিয়ানমারের অবস্থান ১৪৪ তম।