সার্বিক বিবেচনায় জাতীয় সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ বলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি। দশম জাতীয় সংসদের পাঁচটি অধিবেশন নিয়ে করা গবেষণা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী ডক্টর ইফতেখারুজ্জামান দায়িত্ব নিয়ে বর্তমান সংসদকে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিতর্কের ঊর্দ্ধে উঠতে নতুন নির্বাচনের কথাও বলেন তিনি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের ৫টি অধিবেশনে কোরাম সঙ্কটের কারণে ক্ষতি ৩২ কোটি ৪২ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
সংসদ এবং সংসদীয় কার্যক্রম নিয়ে ২০০১ সাল থেকে নিয়মিত গবেষণা করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, টিআইবি। ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ শিরনামের ওই গবেষণায় এবার উঠে এলো দশম জাতীয় সংসদের ৫টি অধিবেশন। যেখানে ১শ ১২ দিনের কার্যদিবসের হিসেব উল্লেখ করে টিআইবি বলছে, প্রতি কার্যদিবসে গড়ে উপস্থিত ছিলেন ২৩৯ সদস্য।
গতবারের চেয়ে সার্বিক উপস্থিতি এক শতাংশ বেশি হলেও তিন-চতুর্থাংশ কার্যদিবসে সরকারী দলের সদস্যদের উপস্থিতি কমেছে; ৫২ থেকে নেমে দাড়িয়েছে ৪০-এ। তবে নবম সংসদে বিরোধী দলের সদস্যরা তিন-চতুর্থাংশ কার্যদিবসে একজনও উপস্থিত না থাকলেও এবার উপস্থিতি ৬৩%।
তবে অন্য সদস্যদের চেয়ে সংসদ নেতা উপস্থিতি ছিলো বেশি, মোট কার্যদিবসের ৮৩ শতাংশ সময় সংসদে ছিলেন তিনি। যেখানে বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন মাত্র ৫৭ ভাগ সময়। মন্ত্রীদের মাত্র ১৮ শতাংশ তিন-চতুর্থাংশের বেশি কার্যদিবসে উপস্থিত। প্রয়োজনীয় ৬০ জন সদস্য উপস্থিত না থাকায় কোরাম সংকট হয়েছে প্রায় ৪৮ ঘন্টা ৪১ মিনিট; তাতে আর্থিক ক্ষতি ৩২ কোটি ৪২ লাখ ৩১ হাজার টাকার।
পাঁচ অধিবেশনে ছয়বার ওয়াকআউটের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে টিআইবি জানায়, মূলত আইন প্রণয়ন সংসদদের কাজ হলেও মোট সময়ের মাত্র ৬ শতাংশ সময় ব্যয় হয়েছে এই কাজে। আর বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে ৩৬ শতাংশ সময়।
টিআইবি জানায়, নোটিসের হিসাবে সবচে বেশি ৪৩৯ বার আলোচনায় ছিলো স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়। আর প্রশ্ন সবচে বেশি এসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় নিয়ে। সংসদে প্রশংসা বা স্তুতি এবং সমালোচনা বেড়ে যাওয়ায় মূল কাজ কমেছে বলে জানায় টিআইবি। সমালোচনা করা হয় স্পিকার, বিরোধী দল এবং সংসদীয় কমিটির কার্যক্রমের।
টেলিভিশনে প্রচারিত অধিবেশন কার্যক্রম, সংসদ সচিবালয় ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য এবং অধিবেশনে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে তারা এই তথ্য পেয়েছে বলে জানায় টিআইবি।