রাজধানীর বনশ্রীতে গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যুর প্রতিবাদে এলাকাবাসী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পুরো এলাকা উত্তালে পরিণত হয়েছে।এলাকাবাসীর হামলায় মতিঝিল জোনের এডিসি ছাইফুল ইসলামসহ ২০ থেকে ৩০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ছাইফুলকে উদ্ধার করে বনশ্রী এলাকার আল-রাজী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে বনশ্রীর জি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাসার সামনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
এর আগে বিকেল তিনটার দিকে ওই বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে নিহতের আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা গেট ভেঙ্গে বাসার ভেতরে ঢুকে যায়। তারা ওই বাসার বিভিন্ন রুমের আসবাবপত্র ও জিনিসপত্র ভাংচুর করে।
এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসী। পরে বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়তে থাকে।
সংঘর্ষে পুরো বনশ্রী এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। এলাকাটির বিভিন্ন অলিগলি ও রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধান সড়কেও কোনো যানবাহন চলছে না। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ চলছিল।
শুক্রবার সকালে ওই বাসায় থেকে গৃহকর্মী লাইলীর লাশ উদ্ধার করে তার স্বজনরা। লাইলীর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার কাশিপুর গ্রামে। তিনি তার স্বামী নজরুল ইসলামের সঙ্গে মেরাদিয়া হিন্দুপাড়ায় থাকতেন এবং বিভিন্ন বাসা বাড়িতে গৃহকমীর কাজ করতেন।
লাইলীর স্বজন আফরোজা জানান, লাইলী ওই বাসায় প্রায় এক বছর ধরে কাজ করছিল। কাজের সুবাদে তার কিছু টাকা বকেয়া ছিল। শুক্রবার সকালে সেই পাওনা টাকা চাইতে গেলে বাসার মালিক মইনুদ্দিন তাকে গলাটিপে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুঁলিয়ে রাখে। পরে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসার মালিক লাইলীকে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে।
খিলগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবদের জন্য গৃহকর্তা মইনউদ্দিন ও বাড়ির দারোয়ানকে থানায় আনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শুক্রবার সকালে বনশ্রীর জি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাসার নিচতলায় গৃহকর্তা মইনউদ্দিনের বাসায় গৃহকর্মী লাইলীকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বাসার সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।