চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সংকট কাটিয়ে সম্ভাবনার দুয়ারে বাংলাদেশ

প্রসঙ্গ: পেস আক্রমণ

সিলেট থেকে: ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশের দাপটের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পেসারদের। ঘরের মাঠে চার পেসার খেলানোর সাহসও দেখিয়েছেন মাশরাফী। তিন পেসার নিয়ে খেলতে তো অভ্যস্তই হয়ে গেছে দল। টেস্টেও লাগতে শুরু করেছে সেটির ছোঁয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলেছেন তিন পেসার। সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টের একাদশে তিন পেসার দেখলেও অবাক হওয়ার থাকবে না। সময়টা আবার নতুনদের জাগরণে টাইগারদের পেস ইউনিটে সমৃদ্ধের আবহের।

টেস্ট স্কোয়াডে চার পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহি, খালেদ আহমেদের সঙ্গে আছেন পেস-অলরাউন্ডার আরিফুল হক। স্কোয়াডে পাঁচ পেসার রেখে নির্বাচকরা একটা বার্তা দিয়েই রেখেছেন, লাল বলেও পেস আক্রমণে এখন ভরসা রাখতে পারে বাংলাদেশ।

মাশরাফী টেস্ট খেলেন না ২০০৯ সালে পাওয়া চোটের পর থেকে। দীর্ঘদিন ধরে আল-আমিন হোসেন দলের বাইরে। ইনজুরি প্রবণতার কারণে রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলাম থাকেন আসা-যাওয়ার মধ্যে। চোট ও অস্ত্রোপচারের পর শাহাদাত হোসেন রাজিব ও মোহাম্মদ শহীদ নিজেদের ফিরিয়ে আনতে পারেননি আন্তর্জাতিক মঞ্চে। তাসকিন আহমেদকে ঘিরে যে প্রত্যাশা ছিল, সেটি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন চোট ঘিরে থাকায়। টেস্টে পেসারদের নিয়ে হতাশা যখন চরমে। তখনই আশার বাতি হয়ে জ্বলে উঠেছেন নতুনরা।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দাপট দেখিয়ে আবু জায়েদ রাহি এসেছেন দলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নিজেকে প্রমাণও করেছেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো দলে এসেছেন খালেদ আহমেদ। জাতীয় দলে আসার অপেক্ষায় রাজশাহীর বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। ছিলেন বাংলাদেশের প্রাথমিক দলেও। নতুন পেসারদের দিকে নির্বাচকদের চোখ পড়ছে, তাতে পাওয়া যাচ্ছে পেস সংকট কাটিয়ে ওঠার আওয়াজ।

টেস্টে বাংলাদেশের পেসার সংকট অনেক পুরনো। দেশের মাটিতে কুলীন এ ফরম্যাটে বাংলাদেশের ভরসা স্পিনাররা। তবে পেস-স্পিনের মিশেলে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং ধারাল বোলিং আক্রমণ না হলে তো প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেয়ার কথা চিন্তা করা যায় না। সংকটের কারণেই ২০১৫ সালে ফতুল্লা টেস্টে মাত্র এক পেসার খেলিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

ওই বছরই মোস্তাফিজুর রহমানের আগমনে সে সংকট কাটার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। চোটের কারণে এ বাঁহাতি কিছুদিন বাইরে থাকায় পরখ করা হয় কামরুল ইসলাম রাব্বি, শুভাশিষ রায়দের। তারা সেভাবে প্রমাণ করতে না পারলেও থেমে থাকেনি নতুনদের আগমন। অফসিজনে হচ্ছে পেস বোলিংয়ের বিশেষ কয়েকটি ক্যাম্প। সেখানে নিজেদের শানিত করে নিজেদের মেলে ধরছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। আলো ছড়িয়ে জায়গা পাচ্ছেন জাতীয় দলেও।

টেস্টে পেসার সংকটে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, সেটি কেটে যাবে এমন কথা জোর দিয়েই বললেন দুটি টেস্ট খেলা আবু জায়েদ রাহি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ বাড়ায় পেসারদের উন্নতি টের পাচ্ছেন সিলেটের এ পেসার।

‘এখন কিন্তু অনেকগুলো ফার্স্ট ক্লাস (জাতীয় লিগ ও বিসিএল) ম্যাচ হয় বাংলাদেশে। যে কারণে পেস বোলার বেরিয়ে এসেছে। যেমন ধরেন খালেদ, রাজশাহীর শরিফুল, আমি, মোস্তাফিজ। টেস্টের জন্য খুব ভালো হবে। টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আমরা কথাবার্তা বলি, যে অনেকক্ষণ ধরে বোলিং করতে হবে। অনেক বড় স্পেলে বোলিং করতে হবে, এই গ্রুপটার মাধ্যমে শিখতে পারছি। এখন অনেক পেস বোলার বেরিয়ে আসছে শৃঙ্খলিত পথ ধরে। প্রায় ১০-১৫জন পেস বোলার নিয়মিত কাজ করছে। আশা করি যে শূন্যতা ছিল সেটি পূরণ হচ্ছে এবং হবে।’

দেশের মাটিতে টেস্ট হলেই স্পিনে ঝুঁকে যায় বাংলাদেশ। সেটি পেস বোলারদের জন্য আক্ষেপের। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পেসারদের মেলে ধরার জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটে দুই ধরনের উইকেট বানানোর পরামর্শ রাহির।

‘আমাদের কিন্তু দুই ধরণের উইকেটেই খেলতে হবে। আমরা যখন এশিয়ার মধ্যে খেলবো ফ্ল্যাট উইকেট থাকবে, বাইরে গেলে ঘাসের উইকেট থাকবে। আমার মনে হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উচিত দুই ধরনের উইকেটে খেলা। দশটা ম্যাচর মধ্যে ৪-৫টা ঘাসের উইকেট ও ৪-৫টা ফ্ল্যাট উইকেট যেন পাই।’