প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শ্রমিক-কৃষকদের কল্যাণের জন্য আমার রাজনীতি। শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আওয়ামী লীগ সরকার। রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রমিক দিবসের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা দেশের কল্যাণ করতে এসেছি, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। কারণ আমরা শ্রম দিয়েছি, কাজ করেছি। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে ১৮৮৬ সালে শিকাগো শহরে নিহত শ্রমিকদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অধিকার আদায়ের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর শিল্প কারখানা আর শ্রমিকের দুর্দশা লাঘবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর শিল্প কারখানা বন্ধ ছিল। মায়ের মতো মমতা দিয়ে জাতির পিতা বন্ধ কলকারখানা চালু করেন। শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম পহেলা মে সরকারী ছুটি ঘোষণা করেন।
শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের সুবিধার জন্য হাসপাতাল, ডরমেটরি, শ্রমিকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নারী শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নারী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাস্তবায়ন করেছে। কারণ নারী শ্রমিকরা তাদের শ্রম দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। এছাড়াও আমরা ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধ করেছি।
বিএনপি-জামায়াত শ্রমিকের উন্নয়নের পথে বাধা বলে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যখন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের শ্রমিকের কোনো উন্নতি হয়নি উল্টো প্রাণ হারিয়েছে শ্রমিকরা। ন্যায্য দাবী আদায়ে রমজান মাসে যখন শ্রমিক রাস্তায় নামেন তখন ১৭ শ্রমিককে হত্যা করা হয়। এর পরে আরও ১৮জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করে বিএনপি-জামায়াত সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে বলেন, আমাদের সরকার অনেক বন্ধ কলকারখানা চালু করেছে, শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি শ্রমিকের শ্রমের শক্তিতে যে উৎপাদন, কৃষক রোদে পুড়ে যে উৎপাদন করে তা অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে।
শিল্পায়নের জন্য বিশেষ জায়গায় একশ’টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, যে সব জেলায় কাঁচামাল বেশি উৎপন্ন হয় ওই জাতীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান ওই অঞ্চলগুলোতে গড়ে তোলা হচ্ছে।
প্রতিবছরের মতো এবারও রাষ্ট্রীয়ভাবে মে দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বিকেলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সরকারের মন্ত্রী, সাংসদ, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছাড়াও অংশ নেন শ্রমিক লীগ ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। এতে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মুজিবুল হক চুন্নু।