ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন একজন ত্বক বিশেষজ্ঞ। সুস্থ ত্বক ও সৌন্দর্যের আধুনিক চিকিৎসার স্পর্শ দিতে চান প্রতিটি সাধারণ নাগরিককে। ডা. ইরিন ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন।
এরপর তিনি ডার্মাটোলজি ও ডার্মাটো সার্জারি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য থাইল্যান্ডে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে মেডিক্যাল বিজ্ঞানে ভর্তি হন এবং সফলতার সঙ্গে কৃতকার্য হন। তিনি নাইজেরিয়া সরকারের একমাত্র সনদপত্রধারী নারী চিকিৎসক যিনি দশ বছর যাবৎ এই পদে আসীন রয়েছিলেন। ডা. ইরিন অস্ট্রেলিয়া থেকে রিজেনারেটিভ মেডিসিনের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
ডা. ইরিন বলেন, দেশের পড়াশোনা শেষ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য আফ্রিকায় যাই। আফ্রিকাতে গিয়ে দেখি সেখানে প্রচুর স্কিন রিলেটেড সমস্যা। রোগী যারাই আসেন ত্বকের সমস্যা নিয়ে আসেন। যেহেতু সার্জারিতে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব হচ্ছে না আবার ওখানকার বেশিরভাগ মানুষ ত্বকের সমস্যায় ভুগছে, এটা দেখেই এই সেক্টরে পড়াশুনা করার অনুপ্রেরণা জাগে।
বাংলাদেশে প্রথম বিভিন্ন ধরণের বিউটি ক্যাম্পেইন এবং ত্বকের সৌন্দর্য ও সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার বিষয়ে ব্যাপক কাজ করেছেন এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকায়নে নতুন ধারা উন্মোচন করেছেন ডা. ইরিন। উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয়ে রোগীদের বিভিন্ন রোগের দ্রুত সমাধান দিয়ে থাকেন। অভিনয় শিল্পী ও সংগীতশিল্পীদের ত্বক ও চুলের চিকিৎসা সেবা দিয়ে তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। ডা. ইরিন রিজেনারেটিভ মেডিসিনের মাধ্যমে স্টেম সেল এবং পিএ পিআরপি থেরাপি প্রক্রিয়ায় বয়স ধরে রাখা, ত্বক ও চুলের যত্নের এক অভিনব চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তিনিই বাংলাদেশে প্রথম ইন্ট্রাভেনাস নিউট্রিশনাল থেরাপি নিয়ে আসেন চিকিৎসা ব্যবস্থায়।
কাজের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইরিনের ডাক পড়ে। ফ্রান্স, ইটালি, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াতে সেমিনারে অংশ নিয়েছেন। নিয়মিতই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেমিনারে আমন্ত্রণ পান।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, স্বনামধন্য ম্যাগাজিনে নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ে লিখে ও স্বাস্থ্য বিষয়ক টক শোতে অংশগ্রহণ করে ইতোমধ্যে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তার বাচনভঙ্গি ও লেখনি শক্তি দিয়ে উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত করেছেন সকল শ্রেণীর, প্রজন্মের পাঠক এবং দর্শকদের।
নিজের বিভিন্নধারার কাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইরিন বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেক উইনার, অংশগ্রহণকারী এবং মডেলদের গ্রুমিং করেছি এবং সেই সাথে অংশগ্রহণ করেছি। জাজ ও মেন্টর হিসেবে মিসেস ইন্ডিয়া, মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ, মিসেস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ, মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ, মিস পাতায়া, থাইল্যান্ড। তাদেরকে গ্রুমিং করার পর যারা উইনার হয় তারা তো একটা এচিভমেন্ট নিয়ে আসেই আর যারা পার্টিসিপেন্ট থাকে তারাও বেশ কনফিডেন্ট থাকে।’
সাম্প্রতিককালে তিনি কোভিড ১৯ মহামারি নিয়ে সিডিসি এবং সেফটি নেট আয়োজিত তথ্যচিত্র “করোনাকাল” এর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি অনলাইনে বিনোদন এবং লাইফস্টাইল নিয়ে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের প্রযোজক ও নির্দেশক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরামের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত আছেন।