১১ জানুয়ারি সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে বিবিসি বাংলার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। তের বছর আগে এই দিন সকালের দ্বিতীয় অধিবেশন ‘প্রত্যুষা’-র যাত্রা শুরু হয়। কাকতালীয়ভাবে, তের বছর পর একই দিন, অর্থাৎ ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি ‘প্রত্যুষা-র শেষ পর্ব প্রচারিত হল। এক যুগ পার হল, বলা যায় একটি যুগের অবসান হল।
তের বছর পর এই অধিবেশন বন্ধের মধ্য দিয়ে সকালে বিবিসি বাংলার উপস্থিতি পুরোপুরিই গুটিয়ে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? বিবিসি বাংলা তাদের সংবাদে এই সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে কিছু কারণ উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশে দু’একটি প্রতিষ্ঠান নির্ভরযোগ্য জরিপ করে থাকে, যেখান থেকে মিডিয়া ব্যবহারের একটি বিশ্বাসযোগ্য চিত্র পাওয়া যায়। চিত্রটি রেডিওর জন্য দিনকে দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
গত বছর বিবিসির জন্য করা এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে এক কোটির কিছুটা বেশি মানুষ সপ্তাহে অন্তত একবার রেডিও শুনছেন। এই সংখ্যা দু’বছর আগে ১৩ শতাংশ বেশি ছিল। খুব বেশি সময় না, মাত্র ২০ বছর আগেও বাংলাদেশের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ রেডিও শুনতেন। আজ সেই সংখ্যা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ১২ শতাংশে।
আর যারা রেডিও শুনছেন, তাদের বেশির ভাগই রেডিও খোলেন রাতে- ৭টা থেকে ১২টার মধ্যে। সকালে শ্রোতা নেই বললেই চলে।
বিবিসি বাংলার সংবাদ তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে শুধুমাত্র একটি মাধ্যমের ব্যবহার দিনকে দিন বাড়ছে, আর তা হল ডিজিটাল মাধ্যম। সামাজিক মাধ্যম, বিশেষ করে একদিকে ফেসবুক অন্যদিকে ভিডিও-নির্ভর ইউটিউব ওপর ভর করেই এই মাধ্যম দ্রুত এগিয়ে চলছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ডিজিটাল মাধ্যম খবর দেখার, শোনার এবং পড়ার সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম হতে যাচ্ছে।
বিবিসি বাংলা সেজন্য বছর খানেক আগে ডিজিটাল কনটেন্ট বাড়ানোর জন্য সকালের প্রভাতী এবং রাতের পরিক্রমা বন্ধ করে দেয়। তাতে আমাদের ডিজিটাল আউটপুট বৃদ্ধি পায় ঠিকই। কিন্তু রেডিও শ্রোতা সংখ্যায় রীতিমত ধ্স নামে!
এর ফলে আমাদের স্ট্রাটেজীতে কোন পরিবর্তন আনা হয় নাই। কারণ, লক্ষ্য হচ্ছে ডিজিটালে সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখা। ভবিষ্যৎ তো সেখানেই। অনলাইন টেক্সট এবং ভিডিও, আর সামাজিক মাধ্যম অডিয়েন্সের কাছে সেগুলো পৌঁছে দেবার তরী।