জাতীয় শোক দিবসের নিরাপত্তায় সুনির্দিষ্ট কোন হুমকি নেই জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো.আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন: রাজধানীজুড়ে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি।
ধানমণ্ডি ৩২ কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন: ১৫ আগস্ট ঘিরে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে ব্যাপক সমন্বিত সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে। ৩২ নম্বর ও আশপাশের এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রবেশ পথে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে তল্লাশির মাধ্যমে সবাইকে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে হবে।
তিনি বলেন: ধানমণ্ডি ৩২ ও বনানী কবরস্থান এলাকা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাধ্যমে সুইপিং করা হবে। ডিএমপি ও র্যাবের ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমেও সুইপিং করা হবে। ৩২ নম্বরে পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে।
শ্রদ্ধা নিবেদনে আসার সময় কেউ হ্যান্ডব্যাগ, ভেনিটিব্যাগ, ব্যাকপ্যাক, দাহ্য পদার্থ, ছুরি-কাঁচি বহন করতে পারবেন না। চারপাশ দিয়ে প্রবেশের সময় তল্লাশি করা হবে, আবার অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের সময় আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। অভ্যন্তরীন নিরাপত্তায় এসএসএফ দায়িত্ব পালন করবেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন: ১৫ আগস্ট ঘিরে সুস্পষ্ট কোন হুমকি নেই, তারপরেও আমরা কোন আশঙ্কাই উড়িয়ে দিচ্ছি না। একটি স্বার্থান্বেষী মহল সেই ১৯৭১ সাল থেকেই সক্রিয়। অতীতেও সেই স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা আমরা কঠোরভাবে দমন করেছি।
এবারো কোন হুমকি না থাকা সত্ত্বেও গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক ব্লকরেইড, তল্লাশি চলছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কোন কারণ নেই। সারা শহরে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্লকরেইড চলছে। গতকালও ২ হাজার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে আগারগাঁও, ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ এলাকায় ব্লকরেইড চালানো হয়েছে। রাজধানীজুড়ে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গত বছর ১৫ আগস্ট ধানমণ্ডি ৩২ সংলগ্ন হোটেল ওলিওতে একটি জঙ্গি তৎপরতা নস্যাৎ করার বিষয়ে তিনি বলেন: জঙ্গিরা একেক সময় একেক নামে সামনে আসলেও এদের রুট আসলে একটাই। গত বছরের এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এ পর্যন্ত আমরা ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি, যার মধ্যে ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
তাদের পরিকল্পনা ছিলো ১৫ আগস্ট ধানমণ্ডি ৩২ এ শোক দিবসের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠির দৃষ্টি আকর্ষণ করা। কিন্তু আমাদের তৎপরতায় তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন: সকাল সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পুস্পার্ঘ্য অর্পণের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সাধারণরা রাসেল স্কয়ার হয়ে প্রবেশ করে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করে পশ্চিম পাশ দিয়ে বের হয়ে যাবেন।
‘বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কেউ সেলফি তুলে সময় নষ্ট করবেন না। নিজে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ করে অন্যকে শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ করে দিবেন।’
ভিভিআইপি মুভমেন্টের সময় সোনারগাঁও ক্রসিং থেকে রাসেল স্কয়ার, ধানমন্ডি ২৭ থেকে রাসেল স্কয়ার, সিটি কলেজ থেকে রাসেল স্কয়ারে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
বিভিন্ন মহল্লায় কাঙালি ভোজের আয়োজন করা হবে। সেসব স্থানের নিরাপত্তা নিয়েও আমরা আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রয়োজনে সেসব স্থানেও আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে এবং সিসিটিভি বসানো হবে। অনুষ্ঠানে যে কোন যে কোন ত্রুটি এবং নাশকতা এড়াতে আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশ কাজ করবে।