একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ১১ ডিসেম্বর থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছিল, শুক্রবার সকাল ৮টায় তা শেষ হচ্ছে। প্রথম দিকে তেমন কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া গেলেও কিছু কিছু জায়গায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেটা দেশব্যাপী উৎসবে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এরপরও গত ১৬ দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নানাভাবে প্রচারণা চালিয়ে গেছেন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে। এই প্রচারণার মাধ্যমে কে কত বেশি ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন তার ফল পাওয়া যাবে ৩০ ডিসেম্বর।
এবার নির্বাচনী প্রচারণায় নতুনত্বের ছোঁয়া ছিল লক্ষ্যণীয়। এবারই প্রথম ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ভোট চেয়েছেন প্রার্থীরা। যা আগে কখনোই বাংলাদেশের নির্বাচনে দেখা যায়নি। ডিজিটাল প্রচারণায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সব চেয়ে বেশি সরব থাকলেও অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও একেবারে পিছিয়ে ছিলেন না। বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও এবার ডিজিটাল প্রচারণা চালিয়েছেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে ১ জানুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোনো নির্বাচনী এলাকায় যেকোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রা করা যাবে না।
আমরা আশা করি, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সব প্রার্থীরা এই বিধিনিষেধ এবং অন্যান্য সকল আচরণবিধি মেনে চলবেন। এছাড়া প্রার্থীরা যাতে নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারেন, এ বিষয় নিশ্চিত করা সকল প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।
আমরা বরাবরের মতো দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, নির্বাচন মানে সহিংসতা, আচরণবিধি লঙ্ঘন আর ভয়ের সংস্কৃতি নয়। নির্বাচন মানে হোক অবাধ ও উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সংস্কৃতি। এমন সংস্কৃতি গড়ে তোলা শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সব প্রার্থীসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে আরও কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।