আগের বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেন ডেভিড মালান। শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যানটিও ফিরলেন সাজঘরে। উইকেটে আফগান মুজিব উর রহমান। শেষ বলে জিততে চাই ৩ রান। লিয়াম প্লাঙ্কেট হয়তো ইয়র্কার করতে চেয়েছিলেন, বল পড়লো ফুলটস। মাত্রই উইকেট আসা মুজিব সেই বল অন সাইড দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে শেষ বলে এনে দিলেন রুদ্ধশ্বাস এক জয়!
শেষ চারে যেতে হলে এখন প্রতিটি ম্যাচেই জয় পাওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প খোলা নেই। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের সামনে বেশ কঠিন এক সমীকরণ দাঁড়িয়ে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া দলটি নিজেদের অষ্টম ম্যাচে এসে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় শেষ বলে এসে সফল। শীর্ষে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ২ উইকেটে হারিয়ে শেষ চারে নিজেদের জন্য খানিকটা জায়গা বাঁচিয়ে রাখলো ডেভিড মালানের দল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে লেন্ডন সিমন্সের ফিফটিতে ভালোই সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল চট্টগ্রাম, ৬ উইকেটে রান তুলেছিল ১৫৯। জবাবে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একাই যেন লড়লেন কুমিল্লা অধিনায়ক মালান। ৪ ছক্কা ও ৫ চারে তার ৫১ বলে ৭৪ রানের কল্যাণে অষ্টম ম্যাচে নিজেদের তৃতীয় জয় পায় কুমিল্লা।
মঙ্গলবার শুরুতে ব্যাট করা চট্টগ্রামের রানটা বড় হতে পারতো আরও। দুই ওপেনার সিমন্স ও জুনায়েদ সিদ্দিকী মিলে স্কোর বোর্ডে রান উঠান ১০৩।
দ্বাদশ ওভারে ৩৪ বলে ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৪ করে সিমন্স ফেরার পরের ওভারেই ফিরে যান ৩৭ বলে ৪৫ করা জুনায়েদও। তাতেই থমকে যায় চট্টগ্রামের রানের চাকা। শেষদিকে ৪ ছক্কায় জিয়াউর রহমান ৩৪ রান যোগ করায় ভদ্রস্থ চেহারা পায় দলের ইনিংস।
চট্টগ্রামের মত না হলেও কুমিল্লার শুরুটাও খুব একটা খারাপ ছিল না। ৭০ রানে ৩ উইকেট পড়লেও ডেভিড মালান যতক্ষণ ছিলেন ম্যাচটা হেলে ছিল তাদের দিকেই। তবে অন্যপ্রান্তে দেশি-বিদেশী ব্যাটসম্যানরা যেভাবে এলেন-গেলেন আর বলের অপচয় করলেন তাতে কাজটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় কুমিল্লার জন্য। শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ১৬ রানের।
লিয়াম প্লাঙ্কেটের করা শেষ ওভারে স্ট্রাইকে মালান থাকায় ভাবা হচ্ছিল ১৬রানও কঠিন কিছু না, কিন্তু মালান প্রথম বলে ১ রান নেয়ায় স্ট্রাইক পান আবু হায়দার রনি যিনি মূলত বোলার!
তবে পরপর দুই বলে চার-ছক্কায় দশ রান তুলে ম্যাচ হাতে নিয়ে আসেন আবু হায়দার রনি। চতুর্থ বলে এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন মালানকে। ইংলিশ ব্যাটসম্যান অনসাইডে ঠেলে দিয়ে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন কিন্তু এক রান তুলতেই আউট। সমস্ত নাটক জমা হয় শেষ বলের জন্য। তবে মুজিবের চারে শেষ পর্যন্ত জয় হাতে এলো কুমিল্লার।
৮ ম্যাচে ৬ পয়েন্টে টেবিলের পাঁচে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। শেষ চারে যেতে হলে বাকি চার ম্যাচে জয়টা খুব জরুরী দলটির জন্য। অন্যদিকে ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্টে এখনও টেবিলের শীর্ষে চট্টগ্রাম।