গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন: রক্তের উত্তরাধিকার ও আদর্শের উত্তরাধিকার যখন সম্মিলিত হয় তখন অনন্য, অসাধারণ, বর্ণাঢ্য অবস্থান সৃষ্টি হয়। সেটাই হচ্ছেন শেখ হাসিনা। মিয়ানমারের মানুষদের বিপন্ন অবস্থায় যখন সারা বিশ্ব শুধু বিবৃতি দিয়ে, উদ্বেগ প্রকাশ করে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেছে, সমুদ্রের বিশালতার মতো হৃদয় আর পাহাড়ের মতো উচ্চতার দৃঢতা ধারণ করা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তখন নির্দেশ দিলেন, বর্ডার খুলে দাও।
তিনি বলেন: বিপন্ন মানুষদের মৃত্যুপুরী থেকে রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। সারা বিশ্ব দেখলো উন্নয়নশীল একটি ছোট্ট রাষ্ট্র, সেই রাষ্ট্রের স্টেটসম্যান, সারা দুনিয়ার স্টেটসম্যানদের অতিক্রম করে মানবতার একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সুষ্টি করলেন। সে কারণেই তাকে বলা হয় ‘‘মাদার অব হিউম্যানিটি’’।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে কিছু ঘটনা ও রটনা’ এবং ‘মাদার অব হিউম্যানিটি জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক দুটি গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন: কীর্তির মধ্য থেকে যারা অমরত্ব লাভ করতে পারেন তেমন মহৎ মানুষের আলোচনা থেকে নিজের জ্ঞান অর্জন করা যায়। অবক্ষয়ের স্রোত থেকে আমাদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে রক্ষা করার জন্য আমাদের স্মরণীয় ও বরণীয় মানুষদের জীবনকে অনুসরণ করা দরকার। আমাদের পূর্ব পুরুষ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এ জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য বিভিন্নভাবে অবদান রেখে গেছেন। তাদের রাজনীতি যাকে ঘিরে বিকশিত হয়েছে, তিনি হলেন ইতিহাসের বরপুত্র, সমকালীন বিশ্বে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি, আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
‘‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জঘন্যতম মিথ্যাচার হয়েছে। একসময় প্রমাণিত হলো সেটি সত্য নয়। তাত্ত্বিক রাজনীতির কেউ কেউ বলেছিলেন শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আস্ফালন করছেন। কিন্তু ইতিহাসের বর্ণাঢ্য ধারায় উজ্জ্বল হয়ে থাকলো, শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দেয়ার পরও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বললেন, ‘আমি চাই বাংলার মানুষের অধিকার। রাজনীতি হতে হবে নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য, অপরের কল্যাণে, দেশের মঙ্গলের জন্য। সে রাজনীতির ধারাবাহিকতা শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা।’’
শ ম রেজাউল করিম বলেন: ইতিহাসের বরপুত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার ধারাবাহিকতা যদি লক্ষ্য করি, তাহলে বলতে পারি ৩০ লাখ মানুষ যে স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধ করে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদের সেই স্বপ্নের লক্ষ্য ছিলো, বাঙালিরা দুবেলা দুমুঠো খেতে পারবে, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের অভাব থাকবে না, বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াবে। সে বাংলাদেশে আজকে আমরা পৌঁছেছি। আজ উন্নয়শীল দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে আমরা পৌঁছে যাচ্ছি। এমন একটি সময়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে কিছু ঘটনা ও রটনা’ এবং ‘মাদার অব হিউম্যানিটি জননেত্রী শেখ হাসিনা’ গ্রন্থ দুটির প্রকাশনা অত্যন্ত সময়োপযোগী।
‘‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যতবার পড়া হয়, ততবার তার ভেতর থেকে দার্শনিক চিন্তা বেরিয়ে আসে। একটি ভাষণে অতীতের কথা বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে কী করতে হবে সেটাও বলা হয়েছে। এটা বিশ্বের বিস্ময়। অপরদিকে মায়ের ভূমিকায় দেখি শেখ হাসিনাকে। রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষকে যখন তিনি বুকে টেনে নেন। তখন দেখি তিনি একজন মানবতাময়ী মা।’’
সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, বশর গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও আবুল বশর আবু।