গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামির ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে পেপার বুক পাঠের মধ্য দিয়ে এই শুনানি শুরু হয়।
হত্যাচেষ্টার এই মামলায় গত ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জনকে ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের যাবজ্জীবন ও তিনজনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। আর মামলায় খালাস পান ১০ জন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান মেহেদী হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদ। আর ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও সরওয়ার হোসেন মিয়া।
একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় নয়জনকে ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন আদালত।
২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ইউসুফ ওরফে মুসা ওরফে আবু মুসা (পলাতক), আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস, মেহেদী হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদ ওরফে মেহেদী হোসেন ওরফে গাজী খান, ওয়াসিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন ওরফে মারফত আলী, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশীদ, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে শিমন খান, শাহনেওয়াজ ওরফে আজিজুল হক ও শেখ মো. এনামুল হক (পলাতক)।
বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চারজন খালাস পেয়েছেন।
২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের জন্য মঞ্চ নির্মাণের সময় মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পাওয়া যায়। পরদিন ৮০ কেজি ওজনের আরেকটি একটি বোমা উদ্ধার করা হয় কোটালীপাড়ার হেলিপ্যাড থেকে। এর একদিন পরই নিজের নির্বাচনী এলাকায় দাদার নামে প্রতিষ্ঠিত ওই কলেজ মাঠে জনসভায় শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল।
ওই ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক নূর হোসেন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা করেন। ২০১০ সালে এই মামলা ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামির মধ্যে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি অন্য একটি মামলায় কার্যকর হওয়ায় তার নাম এই মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।