চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সাদামাটা জীবনযাপন

চেতনায় অম্লান দীপ্তি: শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব

শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব একটি নাম, একটি ইতিহাস, একটি অধ্যায়ের অভ্যুদয়, আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেরণার উৎস। ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ব্যক্তিত্ব, শালীনতা, সাদাসিধে জীবন, সবাইকে আপন করে নেওয়ার সম্মোহনী শক্তি ব্যক্তি রেণুকে সকলের ভালবাসা ও শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে তৈরি করেছিল। নিজেকে যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার যে সক্ষমতা ছিল রেণুর তা বলাবাহুল্য। যুদ্ধের কঠিন সময়েও স্বামীর কোন খোঁজখবর না পেলেও তিনি তার সন্তানদের ঠিকই সান্তনার বাণী শোনাতেন।

অহংবোধ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি বিষয়গুলো ফজিলাতুন নেছা মুজিবের চরিত্রের সাথে বেমানান ছিল। আড্ডাপ্রিয় ছিলেন, কিন্তু চরিত্রের মধ্যে কখনও সে বিষয় ফুটে উঠতো না। বাড়িতে সন্ধ্যায় ননদদের সাথে আড্ডায় দেশীয় খুনসুটিতে মেতে উঠতেন, পানের বাটা সাথে থাকতো সর্বক্ষণ। বাড়িতে যেকোনো অতিথি আসলে সবাইকে নিজের আপনজনের মতোই সমাদর করতেন। ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সাদামাটা জীবনের কারণে শেখ মুজিব রাজনৈতিক মাঠে নির্ভার হয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। উচ্চবিলাসী না হওয়ায় রাজনৈতিক কর্মীদের কাছেও ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ব্যক্তিগত জীবন ছিল গ্রাম বাংলার চিরাচরিত জননীর ন্যায়। নিজে স্বল্প সাধ্যের মধ্যে পরিপাটি থাকতেন, সুচারুরূপে পরিপাটি করে রাখতেন ঘরের আসবাসপত্র, বাহুল্য-জৌলুসতা ছিল না কিছুতেই। ঘর-দোয়ার ছিল খুব ছিমছাম, সাজানো গোছানো ও আকর্ষণীয়, তবে আভিজাত্যের ঘাটতি ছিল না। সাধারণের ন্যায় ঘরে তার আসবাসপত্র থাকতো, কখনো বাহুল্যতা প্রকাশ পেত না নিজের পরিবারের সামগ্রিক পরিবেশের মধ্যে। অতি সাধারণ পরিবেশে বসবাস ছিল ফজিলাতুন নেছা মুজিবের, সাধারণ জিনিসপত্র দিয়ে অসাধারণত্ব প্রকাশ পেত ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সৌন্দর্যে ও ক্যারিশমায়।

উজ্জ্বল ও চকচকে পোশাক-পরিচ্ছদ সবসময় বর্জন করার চেষ্টা ছিল বঙ্গবন্ধুর আদরের রেণুর। বর্তমানের ন্যায় বিদঘুটে বিকৃত রুচির বাইরে সবসময় চিন্তাধারা ছিল ফজিলাতুন নেছা মুজিবের। নিজের ন্যায় ছেলেমেয়েদের আচার আচরণকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রিয় পোশাক ছিল শাড়ি। তারই অনুসরণে বর্তমানে জীবিত দুই সন্তানের আচরণেও প্রভাব লক্ষ্যণীয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা মায়ের দেখানো রুচিতেই নিজেদের তৈরি করেছেন বাঙালিয়ানা ভঙিমায়। রাষ্ট্রীয় পরিবেশে এমনকি দেশের বাইরেও শেখ হাসিনার চরিত্রায়ণে ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রভাব লক্ষ্যণীয়।

শেখ ফজিলাতুন নেছার ছেলেদের পোশাক-আশাকে সাধারণের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে। শেখ কামালের সাধারণত্ব বর্ণনা করে শেখ রেহানা বলেন, ‘আমাদের সময়ে জামা-কাপড়ের সংখ্যা তো কারোরই বেশি ছিল না। কামাল ভাই, জামাল ভাই, কারোরই না। কামাল ভাই খুব শৌখিন ছিলেন। খুব গুছিয়ে রাখতেন সবকিছু। কিন্তু বেশি কিছু চাইতেন না। আমার কাছেই এসে হয়তো কোনো দিন বললেন, দশটা টাকা দিবি। বিড়ি-সিগারেট কোনো দিন খাননি। খরচ তো কিছু ছিল না। কত যে তার গুণ ছিল। আমি তো বলি, আমাদের ছেলেমেয়েরা যদি তাদের মামার একটা গুণও পায়, সেও হবে অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার।’

ফজিলাতুন নেছা তার ছেলেদের বাঙালির সংস্কৃতির মিশেলে অধিকাংশ বাঙালির জীবনাচরণের সাথে অভ্যস্ত করে তুলেছিলেন। ছেলেমেয়েদের তিনি আপন মহিমায় বড় করতে চেয়েছিলেন, সততার সাথে তিনি কখনো আপোস করতেন না। এমনকি বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। ছেলেমেয়েদেরকেও নজরদারিতে রাখতেন সর্বক্ষণ যেন তাদের ভেতরে অহংবোধ চলে না আসে।

বর্তমান সময়ের প্রধানমন্ত্রী এবং তাদের স্ত্রীদের দেখা যায়, বাড়িতেই বিউটিশিয়ানদের টিম রেখে দেয় নিজেদের সাজসজ্জার জন্য। সার্বক্ষণিক প্রসাধনী সামগ্রী নিয়ে নিজেদের রূপচর্চায় ব্যস্ত থাকেন তারা। প্রসাধনীর সাথে সাথে কাপড় চোপড়ের জন্য ডিজাইনার রেখে দিয়ে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের জন্য সুনির্দিষ্ট পোশাক বানিয়ে নেয়। সে তুলনায় শেখ মুজিবের সহধর্মিণী ছিলেন একেবারেই আলাদা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পত্নী চলন-বলনে ছিলেন সাধারণের মধ্যে সাধারণ, গতানুগতিক বাংলাদেশি শাড়ী-ব্লাউজেই তিনি ছিলেন অনন্য। যেখানে মহিলাদের একটি বিরাট অংশ গ্রামেই বসবাস করেন সাদাসিধে পরিবেশে, তাই তিনি তাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন কখনো তথাকথিত আধুনিক হওয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি।

তবে সামর্থ্যের সর্বোচ্চ থাকত তার কর্মপ্রচেষ্টায়। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাবস্থায় সাদা শাড়ি পরিধান করতেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। অন্য সময়ে পরিধেয় শাড়ির ধরণ ছিল এমন- জমিন থাকত সাদা, পারে সুতি ও জরির নকশা। রঙিন শাড়ি পরতেন বঙ্গবন্ধু ঘরে থাকা অবস্থায়, উৎসবের সময় পরতেন শিফন জর্জেট নাইলন। হাতে পরতেন চুরি আর গলায় সরু চেইন, কানে থাকত ছোট্ট দুটি মুক্তা।

তবে বঙ্গবন্ধু তার প্রিয় সহধর্মিণীর সাজসজ্জার ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। যদিও শ্বশুর, শাশুড়ী, দেবর, ননদসহ বাড়ি ভর্তি মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে বউয়ের জন্য সাজসজ্জার কোন কিছু নিয়ে আসাটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। তারপরও সুযোগ বুঝে শেখ মুজিব তার সুযোগ্য সহধর্মিণীর জন্য শখের জিনিস নিয়ে আসতেন সুযোগমতো। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৫৪ সালে ফ্রান্সে সফরের শেষে দুখানা শাড়ি নিয়ে এসেছিলেন, একটি গাঢ় কমলা রঙের ও অন্যটি পীচ ফলের রঙের। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় স্ত্রীর পছন্দের বা শখের বিষয় ছিল বিলাতি সাবান ও গন্ধদ্রব্য। ঠিক তেমনি একবার আমেরিকা সফরের পরে সবার জন্য নাইলন শাড়ি আনলেও স্ত্রীর জন্য জরির পারসহ কালো রঙের শাড়ি নিয়ে এসেছিলেন। এরকম স্ত্রী অন্তঃপ্রাণ স্বামীর জন্য অনেকেই ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। এরকম গুণবতী ও পুণ্যবতী রমণীর জন্য বঙ্গবন্ধুও নিজের সর্বোচ্চটা করেছেন মৃত্যু অবধি।

শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব খুব সুসজ্জিত হয়ে কোথাও যেতেন না, এমনকি কোন দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে সাধারণের মতই যেতেন। বিশেষ করে স্বাধীনতার পূর্বে কখনো কোথাও দেখা যায়নি রেণুকে। তবে, আন্দোলন-সংগ্রামকে বেগবান করতে চুপিসারে অনেক সময় রাস্তায় বেরিয়েছেন, লিফলেট বিতরণ করেছেন আন্দোলনের সমর্থন আদায়ে। ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পরে অনেকেই প্রথমবারের মত বঙ্গবন্ধুর পত্নীকে দেখেছিলেন ছবিতে কিংবা মানুষের জানার আগ্রহ জন্মেছিল বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীকে নিয়ে।

কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হলো ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে নিয়ে কোন কবিতা কিংবা আত্মজীবনী কখনো লেখা হয়নি, কোন বিশিষ্ট লেখক, নাট্যকার বা ঔপন্যাসিকের মাধ্যমে। তারপরও মানুষের আগ্রহের কমতি নেই বেগম মুজিবকে জানার জন্য। আমাদেরও সে আগ্রহের কমতি ছিল না, সে বিবেচনাতেই ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। সর্বপ্রথম ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে বাড়ির বাইরে প্রকাশ্যে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে জনগণের সামনে দেখা যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেখানে তিনি স্বামী-পুত্র সহ ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বসেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও ফজিলাতুন নেছা’কে সাধারণের বেশেই দেখা গিয়েছিল উদ্যানে।

পারিবারিক জীবনে খুব সাংসারিক মনোভাবের ছিলেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব, অন্যদের কাজগুলো আগে শেষ করে পরে নিজের ব্যক্তিগত কাজে হাত দিতেন। আলমারির মধ্যে থরে থরে সাজানো থাকতো শাড়িগুলো, আসবাসপত্রগুলো ছিল ছবির মত সাজানো গোছানো। বিভিন্ন রঙের শাড়িগুলো ভিন্ন ভিন্ন তাকে অত্যন্ত সুবিন্যস্তভাবে সাজিয়ে রাখতেন। কোন বাক্সে সাদা শাড়ি, আবার কোন বাক্সে সুতি সিল্ক আবার কোন বাক্সে রঙিন শাড়ি থাকত সুবিন্যস্তভাবে। শুধু কী নিজের ব্যবহার্য জিনিসপত্র, পরিবারের প্রত্যেকের ব্যবহার্য সামগ্রীগুলো অত্যন্ত যত্ন ও মমতায় সাজিয়ে রাখতেন পরম ভালবাসায়।

তবে বড় দুই ছেলের বিয়ের পরে পরিবারের দায়িত্ব কিছুটা কমেছিল ফজিলাতুন নেছা মুজিবের। সদ্য বিবাহিতা দুই বউয়ের কাঁধে পরিবারের দায়িত্ব বণ্টন করে পরম শান্তি ও তৃপ্তি লাভ করেছিলেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তবে শেষ পর্যন্ত ছোট্ট সোনা শেখ রাসেলের সব দায়দায়িত্ব ছিল ফজিলাতুন নেছা মুজিবের উপরে।

খাবার দাবারে বঙ্গবন্ধুর আদরের রেণু খুবই সাধারণ ছিলেন, খুব আটপৌরে নয়, আর দশ-বিশটা বাঙালি গৃহবধুর মতো ছিল তার চাহিদা।

বাহুল্যতার কোন ছোঁয়া ছিল না, মাছ ও সবজি বেশি পছন্দ করতেন মাংসের চেয়ে। তবে ভাতের প্রতি আগ্রহ ছিল বেশি পরিমাণে। পানের খুব ভক্ত ছিলেন, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এলে পানের বাটা আর হরেক রকমের জর্দার বাহার দেখে সবারই পানের প্রতি লোভ হত। তিনিও সবাইকে পান খাওয়ানোর মাধ্যমে পরিতৃপ্তি পেতেন। সন্ধ্যার পরে ননদদের সঙ্গে নিয়ে গল্পের পাশাপাশি পানের জম্পেশ আড্ডা হতো। রেণু খুব চা খেতেন, সাংসারিক পরিশ্রমের কারণে। কেননা তিনি খুব বেশি পরিশ্রম করতেন, এত বড় সংসার দেখভাল করতেন একাই সম্পূর্ণ নিজের দায়দায়িত্বে। শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও কখনো সামান্য পরিমাণে ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা যায়নি রেণুর পরিচালনায়।

ব্যক্তিজীবনে খুব রসিক এবং মানুষের সাথে মেশার অদ্ভূত ক্ষমতা ছিল বঙ্গবন্ধু পত্নীর। অন্যদের মত হৈ চৈ, হাসাহাসি বা রসিকতা করতেন না, কিন্তু আড্ডার মধ্যমণি হয়ে উঠতেন আপন মহিমায়, উজ্জ্বল্যে। নীলিমা ইব্রাহিমের ভাষ্যমতে- একদিন খুব গম্ভীর মুখে রেণু বললো- ‘আপা, আমি আপনাদের উপর খুব রাগ করেছি’। শান্ত হয়ে বললাম, বেশ? কী করেছি আমরা?’ বললেন, ‘নিজের ভাইকে বানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আর আমাকে ‘বঙ্গমাতা’, বেশ আমি বুঝি ‘বঙ্গবান্ধবী’ হতে পারি না? এতোই কি বুড়ো হয়েছি’। তখন মনোরম পরিবেশের রোমন্থন হয়েছিল আড্ডাস্থলে, সকলের মধ্যে হাসির স্ফুরণ উঠেছিল। মাঝে মধ্যেই এমন প্রাণোচ্ছ্বল হাসির রসদ জোগাতেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। এমনিভাবে, সকলের মধ্যমণি হয়ে প্রাণবন্ত আড্ডার জ্বালানী সরবরাহ করতেন। এরকম আনন্দময় সহাবস্থানে বঙ্গবন্ধুর ছেলেমেয়েরাও বড় হয়ে উঠেছিল সৌহার্দ্যময় পরিবেশে।

বঙ্গজননী খুব সাদামাটা জীবনযাপন করতেন এবং নিজের পছন্দের জিনিসগুলোকে সেভাবে আগলিয়ে রাখতেন। ফজিলাতুন নেছার পছন্দের মধ্যে অন্যতম ছিল পান আর পানের বাটা। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে এখনো ফজিলাতুন নেছার পানের বাটা সাজানো রয়েছে। একবারের ঘটনা- ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ঢাকায় আসছেন এবং তার সম্মানার্থে রেসকোর্স ময়দানে নির্মিত হলো ‘ইন্দিরা মঞ্চ’। সেই প্রথম এবং শেষবার অনেক চেষ্টা তদবির করে বেগম সাহেবাকে মঞ্চে আনতে পেরেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই অনুষ্ঠানেও দেখা গিয়েছে এক হাতে কাতান শাড়িটি সামলেছেন অন্যহাতে পানের বাটা।

গ্রাম বাংলার সহাস্য জননীর ন্যায় অপরূপ অবয়াভবে তিনি ছিলেন সাধারণের চেয়েও সাধারণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, আচার-আচরণে খাঁটি বাঙালির প্রতিমূর্তি। এ ব্যক্তিক ও আদর্শিক গুণের কারণেই তিনি সকলের কাছে জনপ্রিয় ও বাঙালি জাতির নিকট অমরত্ব লাভ করেছেন। পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি লাভের পর থেকে বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরত আসার পূর্ব পর্যন্ত অনেক দেশি বিদেশি সাংবাদিক ধানমন্ডির ১৮ নং রোডের বাড়িতে এসেছিলেন। সেই বাড়িতে ভালোভাবে বসার কোন ব্যবস্থা ছিল না। তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম সোফাসেট আনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অত্যন্ত বিনয়ের সহিত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি বলেছিলেন এ বাড়িতে যারা আসবেন তারা মোড়া আর চেয়ারেই বসবেন। আগে বঙ্গবন্ধু আসুক পরে সব কিছু এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। খুব সাধারণে যাপিত জীবনে অভ্যস্ত ফজিলাতুন নেছা মুজিব কখনো জৌলুস জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন না। তিনি ছিলেন সারা বাংলার সহজ সরল মানুষের প্রতিচ্ছবি, বাঙালিয়ানার স্বচ্ছ প্রতিমূর্তি।

চলবে…