শুকনো মৌসুমে কুড়িগ্রামের দুধকুমার নদীর পানি কমে গেলেও অব্যাহত রয়েছে ভাঙ্গন। ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি ও স্থাপনা। সহায় সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে ও বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে ভাঙন কবলিত মানুষ।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দুধকুমার নদীতে এখন তেমন কোন পানি প্রবাহ নেই। তারপরও প্রতিদিনই ভাঙ্গছে নদীর দুপাড়ের গ্রাম। অব্যাহত ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারাচ্ছে নাগেশ্বরীর কালিগঞ্জ ইউনিয়নের ১০ টি গ্রামের বাসিন্দারা। নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও কয়েক হাজার বিঘা আবাদী জমি।
ভাঙ্গন রোধ করতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে কয়েক দফা যোগযোগ করেও প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী। ভাঙ্গন কবলিত মানুষরা বলেন, সহায় সম্পতি যা ছিলো তা সবই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এখন বাচ্চা-কাচ্চাদের নিয়ে কোথায় আশ্রয় নিবো?
ফসলী জমি ও বসতভিটার সাথে উঁচু বাঁধগুলোও ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাওয়ায় শেষ আশ্রয়টুকুও আর থাকছে না তাদের। ভাঙ্গন কবলিত মানুষরা আরো বলেন, এখনই এই জায়গায় যে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে এই অবস্থা থাকলে ভরা মৌসুমে কয়েক হাজার মানুষ নদী ভাঙ্গনের শিকার হবে।
১৯৯৮ সালে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম আলাদা হয়ে গেলেও দুধকুমার নদীটি লালমনিরহাটের আওতায় রয়ে গেছে এখনো। সে কারণে কুড়িগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর অফিস থাকলেও তাতে তালা ঝুলছে। লালমনিরহাটের পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ইতিমধ্যেই এলাকা ভাগ করে কাজ শুরু করেছি। ওই এলাকার নদীটির ভাঙ্গন রোধের জন্য দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা চেয়ে বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
বছরের পর বছর নদী ভাঙ্গনের শিকার এ মানুষগুলোর এখন একটাই দাবি বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ভাঙ্গন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ ।