পুলিশের বিরুদ্ধে শিশু রাজন হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের রক্ষা করা, দায়িত্বে অবহেলা ও রাজনের বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগসহ নানা বিষয়ে ৪১৬ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে কমিটির সদস্যরা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
সিলেটের অনলাইন পত্রিকা সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এম রুকন উদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিতে অন্য দুই সদস্য হলেন উপকমিশনার মুশফেকুর রহমান ও উপকমিশনার (দক্ষিণ) জেদান আল মুসা।
তদন্ত কমিটির প্রধান এসএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রোকন উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে তারা চারশ’ ষোল পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তবে প্রতিবেদনে কী আছে এ ব্যাপারে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন রোকন উদ্দিন।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আমার অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আমি অফিসে নেই। তাই বিস্তারিত কিছু বলতে পারবো না।
গত ৮ জুলাই নির্যাতন করে শিশু রাজনকে হত্যা করা হয়। দুপুর ১টার দিকে মাইক্রোবাসযোগে তার লাশ গুম করার চেষ্টা করার সময় নগরীর কুমারগাঁও এলাকায় জনতা গাড়িসহ আসামি মুহিতকে আটক করে। পরে রাজনের বাবা গাড়িচালক আজিজুর রহমান ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। লাশের শরীরে ৬৪টি আঘাতের চিহ্ন ছিলো বলে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় আসামি মুহিতকে বাঁচাতে এবং মুহিতের সৌদিপ্রবাসী ভাই কামরুলকে পালিয়ে যেতে সিলেটের জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলাম সহযোগিতা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন রাজনের বাবা। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলা ও রাজনের বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহারেরও অভিযোগ ওঠে পুলিশে এই দুই সদস্যের বিরুদ্ধে।
পরে রাজনের বাবার এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো. কামরুল আহসানের নির্দেশে ১৪ জুলাই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটি গঠনের তিন দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদনে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হলেও পরে তা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আরও পাঁচদিন বাড়ানো হয়। আর বর্ধিত সময়ের শেষ দিনেই প্রতিবেদন জমা দিলো তদন্ত কমিটি।