প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, ছড়াকার, শিশু সংগঠক, নাট্যকার ও প্রবীণ সাংবাদিক রফিকুল হক দাদু ভাই মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রোববার সকাল ১১টায় নিজ বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
রফিকুল হক দাদু ভাই এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
১৯৩৭ সালের ৮ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া রফিকুল হকের গ্রামের বাড়ি রংপুরের কামালকাছনায়। তার ২ ছেলে ১ মেয়ে।
যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক দাদু ভাই ১৯৭৪ সালে শিশু কিশোরদের সংগঠন ‘চাঁদের হাটে’র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এর আগে তার পরিকল্পনায় এবং তত্ত্বাবধানে দৈনিক পূর্বদেশে ‘চাঁদের হাট’ নামে ছোটদের একটি পাতা বের হতো। তখন থেকে তিনি ‘দাদু ভাই’ নামে পরিচিতি পান।
তিনি যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক ছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে ছিলেন। নব্বই দশকে প্রতিষ্ঠিত দৈনিক রূপালীর নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে দৈনিক জনতার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। কাজ করেছেন দৈনিক লাল সবুজ, আজাদ, বাংলাদেশ অবজারভারে। সত্তর দশকে শিশু কিশোরদের জনপ্রিয় ‘কিশোর বাংলা’ নামের সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন তিনি।
আশির দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ‘নিধুয়া পাথার কান্দে’ নামে একটি নাটক লিখছিলেন তিনি, যা পরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ‘বর্গি এলো দেশে’ সহ তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭টি।
বাংলা শিশু সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রফিকুল হক দাদু ভাই ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একই বছর বাংলাদেশ শিশু একাডেমী পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, চন্দ্রাবতী একাডেমি পুরস্কার, নিখিল ভারত শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন।
জানা গেছে, গত বছর পরপর দু’বার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সুস্থ হয়ে কর্মস্থল যুগান্তরে যোগ দিলেও বার্ধক্যসহ নানা জটিলতায় প্রায় ৬ মাস আগে মুগদার বাসায় পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি।