বাবা মায়ের উচিত সন্তানকে যতটা সম্ভব কম কফ সিরাপ দেওয়া। তার বদলে বরং তাদের পুরনো মধু আর লেবুর রস খেতে দেওয়াই ভালো বলে মন্তব্য করেছেন এক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।
লন্ডনের সাউথঅ্যাম্পটন চিলড্রেন হসপিটালের সিনিয়র শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. অলিভার বেভিংটন সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, যদি এই ওষুধ বেশি মাত্রায় গ্রহণ করা হয় তাহলে সেটা থেকে বিষক্রিয়া হতে পারে।
গবেষণার শেষের লাইনে তিনি বলেছেন: এসব কফ সিরাপের ব্যবহারের কারণে যেসব উপকার হয় বলে এর আগে বলা হয়েছে, তার খুব কম কাজ এগুলো করে বরং এর থেকে বেশি ক্ষতি করে। বেশ কিছু কফ সিরাপে প্যারাসিটামল থাকে, ফলে খুব সহজেই বেশি পরিমাণে ওষুধ খাওয়া হয়ে যায়।
বেশি বেশি কফ সিরাপ খাওয়ায় ৬ বছরের কম বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। হিপোক্রেটিক পোস্ট মেডিকেল ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত একটি লেখায় ড. বেভিংটন জানিয়েছেন: এখন কাশি, ঠাণ্ডা আর জ্বর নিয়ে অনেক অনেক শিশুকে দেখে ব্যস্ত সময় পার করছি আমরা। এসব কাশি ও ঠাণ্ডার বেশিরভাগই হচ্ছে ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে। এসব সমস্যা কোন অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই বিশ্রাম, তরল খাবার আর খুব বেশি হলে প্যারাসিটামল খেলেই সেরে যায়। তারপরও কিছু বাবা মা দুশ্চিন্তায় পড়ে শিশুর জন্য কফ সিরাপ নিয়ে নেন।
তিনি বলেন: ইনফেকশন চলে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরও কাশির সমস্যা যেতে যেতে পারে। কিন্তু বাবা-মা মনে করেন এতে সন্তানের কোন না কোনভাবে ক্ষতি হচ্ছে। তাই তারা সন্তানের জন্য কফ সিরাপ কিনে নিতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। যদিও কফ সিরাপের ব্যবহার বিষয়ে পরস্পর বিরোধী পরামর্শ পাওয়া যায়। তাতে আরো বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন তারা।
কফ সিরাপ ও ঠাণ্ডা ওষুধগুলোতে বেশ কিছু উপাদান যেমন নাক খুলে দেওয়ার মতো উপাদান, অ্যান্টিহিস্টামিন ইত্যাদি থাকে। আর এর সবগুলোই বেশি পরিমাণে খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ৬ বছরের কমবয়সী শিশুদের জন্য। এসবের কারণে তাদের এলার্জির সমস্যা বা অজানা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
সমস্যা থেকে বাঁচতে বাবা-মাকে আবার সেই পুরনো যুগে ব্যবহৃত লেবু-মধুর উপর নির্ভর করারই পরামর্শ দেন এই ডাক্তার। সঙ্গে প্রচুর বিশ্রাম, তরল খাবার ও পরামর্শমতো প্যারাসিটামল। তবে কয়েক সপ্তাহ সমস্যা থেকে গেলে বা অন্য কোনো দুশ্চিন্তা করার মতো লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।