চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

শিল্প, ব্যবসা আর কর্মসংস্থানের অমিত সম্ভাবনার দেশ কম্বোডিয়া

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ কম্বোডিয়া। ব্যবসা, বাণিজ্য, আমদানী ও রপ্তানী বাণিজ্যে দিনে দিনে এশিয়ার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে দেশটি। কম্বোডিয়ার উত্তর-পূর্বে লাউস। পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে ভিয়েতনাম, পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ পশ্চিমে থাইল্যান্ড উপসাগর। প্রায় দেড় কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ কম্বোডিয়া বাংলাদেশের তুলনায় আয়তনে কিছুটা বড়। কম্বোডিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এর নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে সেই দেশের অর্থনীতি। আর এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্বোডিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক, ব্যবসা বাণিজ্য ও দুই দেশের পারষ্পরিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সম্প্রতি সফর করেছেন দেশটি।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের পরই খুলে গেলো কম্বোডিয়া বাংলাদেশের সম্পর্কের নতুন দরজা- এমনটাই মনে করছেন কম্বোডিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। সম্প্রতি কম্বোডিয়া বাংলাদেশের আন্তঃদেশীয় ব্যবসা, বাণিজ্য, সমস্যা, সম্ভাবনা ও   সেই দেশের অর্থনীতির গতি প্রকৃতি সরেজমিন প্রত্যক্ষ করতে কম্বোডিয়া সফরে যাই। সেখানে কম্বোডিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও উন্নয়ন উদ্যোক্তার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কম্বোডিয়া সফরের পর নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে দুই দেশের

আকতারুজ্জামান শানু, এডভাইজার, রয়েল গর্ভমেন্ট অব কম্বোডিয়া

 আপনি রয়েল গর্ভমেন্ট অব কম্বোডিয়ার উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ কম্বোডিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির প্রেসিডেন্ট।  কম্বোডিয়াতে বাংলাদেশের কোন এম্বাসি নেই। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কম্বোডিয়া সফরে এসেছিলেন। আপনাদের মত অনেক বাংলাদেশি এই দেশে দাপটের সাথে কাজ করছেন। কম্বোডিয়া বাংলাদেশের সম্পর্ক, ব্যবসা বাণিজ্য, উন্নয়ন সম্ভাবনা এবং সার্বিক বিষয়ে জানতে চাই?

আকতারুজ্জামান শানু : আমি কম্বোডিয়াতে ১৬ বছর ধরে আছি। এখানকার ন্যাশনাল কমিটি ফর ষ্টাফ এর এডভাইজাইর। সরকারের বিভিন্ন পলিসি এবং প্রজেক্টের সাথে আমি জড়িত টেকনিক্যাল এক্সপার্ট হিসেবে এবং আপনাদের জেনে আরও ভাল লাগবে ২০০৪/২০০৫ এ কম্বোডিয়ায় ডাব্লিউটিও মেম্বার হয়েছি। আমি ছিলাম এর  একজন টেকনিক্যাল এক্সপার্ট। লাউঞ্জ হয়েছে ২০১২ তে। আমার মনে হয়, বর্তমান সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দরতম সময়। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে নতুন করে বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার সম্পর্ক উজ্জীবিত হচ্ছে। একটু পেছনের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, ৯০ দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশের মিলিটারী পুলিশ শান্তিতে কাজ করেছে। তখন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রচন্ডভাবে উজ্জ্বল হয়েছে। ওই সময় বাংলাদেশের একটি বাজার তখন তৈরি হয়েছিল কিন্তু যে কারণেই হোক ওই সুযোগ বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারেনি। সম্প্রতি বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর এবং বাংলাদেশ এম্বাসির উদ্যোগে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এটাকে ঠিক রাখার জন্যে আমাদের একটা যৌথ উদ্যোগ সরকারের পরামর্শ সহযোগিতা যাকে আমরা বলি স্ট্যাটিজিক অ্যাপ্রোচ- এটি থাকলেই আমাদের উদ্যোগের ফলপ্রসু দিক হিসেবে দেখতে পারবো।

আপনি কম্বোডিয়াতে আছেন ১৫ বছর। এখানে বসবসকারী মানুষের কর্মসংস্থান, তাদের সমস্যা কী আছে এবং এই দুই দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্যে কী কী উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন আছে?

আকতারুজ্জামান শানু : এখানে আমাদের সম্ভাবনা অসীম। কিন্তু কোন সম্ভাবনায় উন্মোচিত হয় না যদি না তাকে উন্মুক্ত করা হয়। যেমন, ধরেন এখানে বাংলাদেশের বেশ কিছু মানুষ গার্মেন্টস শিল্পে কাজ করছেন। কয়েক শত লোক আছে এখানে এই সেক্টরে। কিন্তু এখানে সাধারণ কর্মীও দরকার নাই। কর্মীর দরকার যারা ষ্কিল বা হাই ষ্কিল লেভেলে কাজ করেন। যেমন, ধরেন ম্যানেজমেন্ট লেভেলে কাজ করতে পারেন এই রকম কর্মীর প্রয়োজন। গার্মেন্টস সেক্টরের মধ্যে কম্পোজিট টেক্সটাইল এর ফ্যাসিলিটিজ এখানে এখনো ভালভাবে গড়ে ওঠেনি। এই জায়গায় কিন্তু বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কিন্তু প্রমাণিত অবস্থায় আছে। এই সুযোগ এই দেশে কাজে লাগানো যেতে পারে। আবার এগ্রিকালচার সেক্টরে বাংলাদেশের সাথে কম্বোডিয়ার সরকারের টেকনিক্যাল পর্যায়ে আদান প্রদান চলছে  কিন্তু তাকে কমার্শিয়াল পর্যায়ে নেওয়া এখনো সম্ভব হয়নি। এই দেশে প্রচুর জমি আছে। বাংলাদেশের কেউ যদি কয়েক হেক্টর জমি দীর্ঘ মেয়াদী লিজ নিয়ে তিন ফসলি করে তাহলে কয়েকটা সুবিধা হবে- প্রথমত বাংলাদেশ তৈরি ফসল পাবে এবং বাংলাদেশের মানুষ কাজের সুযোগ পাবেন এবং কম্বোডিয়ানরা শিখবে যে তিন ফসল সম্ভব। আপনারা শুনলে অবাক হবেন কম্বোডিয়া এখনো প্রায় এক ফসলি। গরু ছাগল মহিষ থেকে এখনো এরা দুধ নেয় না। এখনো তারা মনে করে এগুলো গরু ছাগলের বাচ্চাদেরই খাবার। তাই অনেক কিছু আছে যা এক্সপ্লোর করতে হবে। সম্ভাবনা অফুরন্ত তাই এই ক্ষেত্রে লং টার্ম স্ট‍্যাটেজি থাকতে হবে। এনালাইসিস করলে বেরিয়ে যাবে কোনটা সবচেয়ে সুবিধা জনক।

অনেক সুবিধা আছে কিন্তু সবকিছু নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। যেখানে আমরা ভাল আছি, যেখানে আমাদের ক্যাপাসিটি আছে, যেখানে আমাদের টেকনিক্যাল সামর্থ আছে সেইখানে আমাদেরকে আগে হাত দিতে হবে।

কম্বোডিয়াতে সরকারের সাথে আপনার কাজ এবং ব্যক্তিগত ব্যবসা বাণিজ্য ও উদ্যোগ বিষয়ে কিছু বলুন?

আকতারুজ্জামান শানু : এই দেশে আমার একটি এনজিও আছে। এই এনজিও এর নাম সেভ দ্যা আর্থ কম্বোডিয়া। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা সরকারের সাথে কাজ করি। এর আগে আমি কাজ করতাম ইনডিভিজ্যুয়াল। বর্তমানে আমরা মেইনস্ট্রিমিং জেন্ডার ইন এডাপটেশন ইনভেষ্টমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে সরকারের সাথে কাজ করছি। এটি এডিবি এর একটি বড় প্রজেক্ট। এই একটি প্রজেক্টই কম্বোডিয়াতে প্রায় ৫৮৮ মিলিয়ন ডলার ইনভেষ্ট হচ্ছে। এটির একটি টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট প্রজেক্ট আছে যার আমি প্রজেক্ট ম্যানেজার এবং এর টোটাল প্রজেক্টের দায়িত্ব আমাদের হাতে। এর তিনটি কী অ্যাকটিভিটিভ আছে আমাদের। একটি হলা সাব ন্যাশনাল লেভেলে অর্থ্যাৎ বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে ক্লাইমেট রিলেটেড কী পলিসি থাকা দরকার? জেন্ডার রিলেটেড কী পলিসি থাকা দরকার? এছাড়া ক্লাইমেট চেঞ্জ এর জন্যে এদের উপরে কী নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট হচ্ছে? এটির উপরে কীভাবে ইকনোমিক ইমপ্যাক্ট হচ্ছে? এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা খুব গভীরে কাজ করছি। পলিসি সাপোর্ট দিচ্ছি। এছাড়া প্রোগ্রামের গ্রাউন্ড ওয়ার্কে আমরা সাপোর্ট দিচ্ছি। ৮ টি পাইলট আমরা হাতে নিচ্ছি। এই ৮ পাইলটের মাধ্যমে ৪ টি পাইলট এখানে ডেমনস্ট্রেট করবে যে, দ্যা ইকোনমিক্স অব জেন্ডার মেইন স্ট্রিম ইন ক্লাইমেট চেঞ্জ ইনভেষ্টমেন্ট। এটি হলে আমরা বুঝতে পারবো যে, আমরা জেন্ডার মেইন স্ট্রিম এর কথা বলছি কিন্তু এর আর্থিক বেনিফিট টা কী আছে?  এইটার একটি ইন্টারন্যাশনাল টিম এই কাজে ব্যাকআপ দিচ্ছে যাতে এর ফাইন্ডিংস গ্লোবালি রিকগনাইজড হয়। আর তখনই কম্বোডিয়া একটি মডেল হিসেবে দাঁড়াবে। আপনারা হয়তো জানেন, সাউথ ইষ্ট এশিয়ার ইলেকটেড ফোকাল পয়েন্ট জেএফ গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাসিলিটি প্রজেক্টে কাজ করছি। এছাড়া আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসার আগের সপ্তাহে ওয়াশিংটনে একটি কনফারেন্সে গ্লোবাল জেএফ কাউন্সিল মিটিং গিয়েছিলাম। সেখানে ইলেকশন হয়েছে এবং আমি ইলেক্টেড হয়েছি। খুব মজার জিনিস হলো- এখানে কোন কম্পিটিশন ছিল না আমার নাম প্রস্তাবের পরে, যা আমিও প্রস্তাব করিনি। এই কানেকশন এবং সুযোগগুলো দিয়ে আমরা কম্বোডিয়ান সরকারের পলিসি, প্রোগ্রাম এবং প্রজেক্ট লেভেলে ব্যালেন্সড ওয়েতে কাজ করছি। যাতে করে মডেল হিসেবে কোন কিছু দাঁড় করাতে পারি। আরেকটা মডেল আসছে, যাকে আমরা বলি- ইকোনমিক্স অব সাব ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইন দ্যা সাসটেনঅ্যাবল ম্যানার- এটি আরেকটি। তারপরে আবার প্ল্যানিং- হাউ টু সে ইন্ডিকেটর এলাইনিং ইন দ্যা কান্ট্রি ষ্ট্রাটেজি? পলিসি লেভেলে এই সব কাজই আমি করে থাকি।

বাংলাদেশ কম্বোডিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর  প্রেসিডেন্ট আপনি।  এই এসোসিয়েশনের কর্মকান্ড সম্পর্কে জানতে চাই?

আকতারুজ্জামান শানু : এটি খুবই নতুন এবং ছোট্ট প্রতিষ্ঠান। গেলো বছর মাত্র এটি শুরু হয়েছে আমাদের এম্বাসির সহযোগিতায়। এখানে ট্রেড সেমিনার হয়। আমাদের বর্তমান এম্বাসেডর এবং অফিসিয়ালসরা সব সময়ই আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করছিলেন যে, আমাদের কিছু করা দরকার? তাই ওই সেমিনারের পরে আমরা ব্যবসায়ী যারা আছেন সবাই বসে এই প্রতিষ্ঠানের আউটলাইন আমরা করি। তখন সবাইকে নিয়ে একটি কমিটি বানিয়ে এম্বাসিকেও শেয়ার করেছি। এটি এখনো রেজিষ্ট্রেশনের পর্যায়ে আছে অফিসিয়ালি এখনো দাঁড়ায়নি। এটি করার উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশী যারা ইনভেষ্টর আছেন। এটি শুধু ইকোনমিক ইনভেষ্টর না, টেকনিক্যাল ইনভেষ্টরও। বাংলাদেশের টেকনিক্যাল ক্যাপাসিটি সহ অন্য সব ক্ষেত্রে যেসব ক্যাপাসিটি আছে সেগুলোকে এখানে আকর্ষণ করার জন্যে আমরা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরী করার চেষ্টা করছি যেটা দিয়ে বাংলাদেশী যারা গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করছেন সেই ষ্কিল হ্যান্ডগুলো এখানে যাতে আসতে পারেন। গার্মেন্ট ইনভেষ্টরা এখানে আসতে পারেন। এখানে বাংলাদেশের কয়েকটা গার্মেন্টস আছে। যারা এই দেশের গার্মেন্টস এ ইনভেষ্ট করেছেন। তারা সবাই খুব সফলভাবে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। আর যারা কম্পোজিট এবং টেক্সটাইলে আছেন তাদেরকে আমরা বেশি আকৃষ্ট করছি। ফিসারি রাইস সহ প্রভৃতি সেক্টর আছে। শুধুমাত্র প্রাইমারি লেভেলে না, রাইস থেকে যেটা বাই প্রডাক্ট তৈরী করা যায় যেমন, চিপস। যা দিয়ে সরাসরি ব্যবসা করলে লাভ সীমিত কিন্তু বাই প্রডাক্ট তৈরী করতে পারলে লাভ অনেক। ভ্যালু এডিশনের মাধ্যমে কমার্শিয়াল ওয়েতে খুব ভাল ব্যবসা হতে পারে। তাই সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আমরা চিন্তা করছি এবং আশা করবো, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী মহল যৌথ কোন একটা উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা যদি মত বিনিময় করতে পারি তাহলে আরও অনেক অজানা বিষয় জানা সম্ভব হবে। এখানকার প্রকৃতি এবং সম্ভাবনা তাহলে উন্মোচন করা সম্ভব হবে।

ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই দেশে কেমন প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে আমাদের দেশের উদ্যোক্তাদের?

আকতারুজ্জামান শানু : প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আমি বলবো- কম্বোডিয়াতে চাইনীজ, কোরিয়ান, জাপানীজ এরাই মেইন ইনভেষ্টর হিসেবে পরিচিত এখানে। বাংলাদেশের ইনভেষ্টররা এখানে আসতে হবে। তাই তাদের দেখতে হবে কোথায় অন্য দেশের ইনভেষ্টররা নাই। সেই সব জায়গায় কাজ করতে হবে এবং ইনভেষ্টের সময়ে যদি ব্যবসা করা না যায় তাহলে বিক্রি করে ব্যবসা করা যাবে না, তা কিন্তু সাসটেনন করবে না। সুতরাং আমাদেরকে দেখতে হবে ইনভেষ্টের প্রকৃত সুযোগ কোথায় আছে এবং তারপরে দেখতে হবে আমাদের টেকনিক্যাল ক্যাপাসিটি কি আছে? প্রতিটি সেক্টরেই এটির প্রচুর সম্ভাবনা আছে, সেগুলোকে আইডেন্টিফাই করে পরে তা কাজে লাগাতে হবে। চ্যালেঞ্জের মধ্যে বড় বড় ইনভেষ্টররা এখানে আছে- চাইনীজরা আছে এখানে। আরেকটি বড় সুবিধা হলো- এই দেশের সরকারের কাছ থেকে আমরা প্রচুর সুযোগ পাচ্ছি। বাংলাদেশ এম্বাসিও তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় তার সাথে আসা ব্যবসায়ীরা চিন্তা করেছেন এখানে তো বাংলাদেশের এম্বাসি বা কনস্যুলেট কোন কিছু নাই? তাই তারাও ভয় পাচ্ছেন। এই ভয়ের জন্যে ৯০ দশকে মার্কেটটা যে ওপেন হয়নি। সেই আজকের এই ভয়ের মত কোন কিছু কাজ করেছিল কিনা, যা এখন করছে? তবে এম্বাসির সব সহযোগিতা পাচ্ছি। এখানে আমাদের যদি একটি কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসও থাকে তাহলে ব্যবসায়ীরা অনেক নিরাপত্তা অনুভব করবেন।

কম্বোডিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু বলুন?

আকতারুজ্জামান শানু :  ১৯৭৫ সালে এই দেশে পল পট সেন কমিউনিজমের ষ্টাবলিশমেন্টের জন্যে যুদ্ধ শুরু করেন। সেই সময়ের সরকারকে পরাজিত করে পল পট ক্ষমতা দখল করেন। পল পটের কর্মসূচী ছিল শিক্ষিত মানুষদেরকে মেরে ফেলা। তিনি খুবই নিষ্ঠুর মানুষ ছিলেন।

তখন কোন সরকার ক্ষমতায় ছিল?

আকতারুজ্জামান শানু : অন্য সরকার ক্ষমতায় ছিল। এই সরকার না। বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী হুন সেন তখন তিনি দূরন্ত উদ্যোগ নিয়ে পল পটের কাছ থেকে কম্বোডিয়াকে মুক্ত করেন। ভিয়েতনাম তাকে সাপোর্ট করলো এবং বন্ধুপ্রতীমরাও তাকে সমর্থন করলেন। আজকে যে সুন্দর কম্বোডিয়া আমরা দেখছি তার পেছনে সফলতা হলো বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর।

এখানে কি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার?

আকতারুজ্জামান শানু : না- এটি হলো প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকার।

রাজা রানী আছে?

আকতারুজ্জামান শানু : হ্যাঁ- রাজা রানী আছে। কিন্তু বর্তমানে রাণী নাই। কিন্তু রাজা আছেন।

রাজার নাম কী?

আকতারুজ্জামান শানু : নরোদম শিয়ামনি।

কম্বোডিয়ার আয়তন, জনসংখ্যা এবং বিজনেস ভলিউম কেমন?

আকতারুজ্জামান শানু: জনসংখ্যা বর্তমানে ১৫ মিলিয়ন এর কম দেড় কোটির মত। আর আয়তন হলো ৮৪/৮৫ হাজার ষ্কয়ার, ১ লাখ ৮৫ হাজার ষ্কয়ার কিলোমিটার। আমাদের দেশের তুলনায় বড় হলো ৪৪ হাজার ষ্কয়ার কিলোমিটার বা এই রকম। এখানকার মার্কেট তুলনামূলকভাবে ছোট। কিন্তু কম্বোডিয়াকে সাউথ ইষ্ট এশিয়ার হাব হিসেবে চিন্তা করা যায়। কারণ ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালাইলা এবং লাউস এর সাথে ল্যান্ড কানেকশন বেশি আছে। তাই এই দেশ থেকে অনেক কিছু করার সুযোগ আছে। একটা সমাজের জন্যে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান,ওষুধ, শিক্ষা সবকিছুই এখানে আছে। আর এই সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।

কম্বোডিয়া কি ট্যুরিজম কান্ট্রি?

আকতারুজ্জামান শানু: হ্যাঁ- কম্বোডিয়া ইজ এ কান্ট্রি ফর টুরিষ্ট। এখানে সিয়েম রিপ নামে একটি শহর আছে। সেখানে অ্যাংকর টেম্পল আছে। বছরে ৫/৬ মিলিয়ন ট্যুরিষ্ট ঘুরতে আসে এই দেশে। এর বাইরে যে শহরগুলো আছে সেই সব জায়গায়ও প্রচুর ট্যুরিষ্ট আসেন। তাই এই দেশে ট্যুরিজম রিলেটেড সব ধরণের ব্যবসা বাণিজ্য গড়ে উঠছে।

বাংলাদেশ থেকে আইটি এবং এডুকেশন ষ্পেশালিষ্ট রপ্তানীর দারুণ সম্ভাবনা আছে কম্বোডিয়াতে

মনিরুল ইসলাম, রেক্টর, লিংকনউইঙ্ক ইউনিভার্সিটি

আপনি বাংলাদেশি শিক্ষক কিন্তু শিক্ষকতা করছেন কম্বোডিয়াতে। বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের ভাবতে ভাল লাগে। প্রথমে এই বিশ্ববিদ্যালয সম্পর্কে কিছু জানতে চাই?

মনিরুল ইসলাম : আমি এখানে একটি মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি এর রেক্টর। এই ইউনিভার্সিটি এস্টাবলিশ হয়েছে কম্বোডিয়াতে ২০০৮ সালে। আর আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি ২০০৯ সালে। আমি এখানে শিক্ষকতা করতাম এরপরে আস্তে আস্তে বর্তমানে রেক্টর পজিশনে কাজ করছি। কম্বোডিয়াতে বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয় টপ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মধ্যে একটা। এই দেশে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আছে মাত্র তিনটা । একটা রাইফেলস ইউনিভার্সিটি সিঙ্গাপুরের আরেকটি টার্কিশ ইউনিভার্সিটি আছে। আর আমাদের এই মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটি। কম্বোডিয়ার এডুকেশন সিষ্টেম কম্বোডিয়াতে ডেভলপড হচ্ছে।

পাবলিক ইউনিভার্সিটি আছে এখানে?

মনিরুল ইসলাম : বেশ কয়েকটি পাবলিক ইউনিভার্সিটি আছে এখানে। বেস্ট পাবলিক ইউনিভার্সিটি আছে তার নাম  রয়েল ইউনিভার্সিটি। সমস্যা হলো- কম্বোডিয়াতে ১১৮ টি ইউনিভার্সিটি আছে। মাত্র ১৫/১৬ মিলিয়ন পিপলের জন্যে যা অনেক বেশি। এই ১১৮ টি ইউনিভার্সিটি রেজিস্টার্ড, আনরেজিস্টার্ড আরও অনেক ইউনিভার্সিটি আছে। যেগুলোর রেজিস্টেশনের জন্যে আবেদন করা হয়েছে। কারেন্টলি গর্ভমেন্ট চেষ্টা করছে এখন ইউনিভার্সিটিগুলোকে মার্জ করার জন্যে। কারণ অনেক ইউনিভার্সিটি এখানে প্রোগ্রাম চালাচ্ছে কিন্তু তাদের স্টুডেন্ট সংখ্যা অনেক কম, কোয়ালিফাইড লেকচারার নেই, ক্লাসরুম ফ্যাসিলিটিজও ওই ভাবে নেই। তাই স্টুডেন্টরা শিখতে পারছে না। এখানে যে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো আছে। আমরা চেষ্টা করছি সেই পোগ্রামগুলোর উপরে যার মার্কেট রেডি আছে। অর্থ্যাৎ স্টুডেন্টরা পড়াশোনা শেষ করেই যাতে জব করতে পারে। কম্বোডিয়াতে আইটি সেক্টর অনেক দুর্বল। আমাদের উচিৎ বাংলাদেশ থেকে আইটি সেক্টর এখানে ইমপ্রুভ করা।

তার মানে এই দেশে আইটি বিজনেসের অনেক বেশি সম্ভাবনা আছে?

মনিরুল ইসলাম : হ্যাঁ। আইটি সেক্টরের অনেক সম্ভাবনা এখানে। আর এডুকেশন সেক্টরে বাংলাদেশি স্পেশালিস্ট আমরা নিয়ে আসতে পারি এখানে পড়ানোর জন্যে।  এখানে পলিটেকনিক খুব স্ট্রাগল করছে। কিন্তু কেউ পলিটেকনিকে যাচ্ছে না পড়ার জন্যে। এখানকার সরকার ভকেশনাল প্রোগ্রামগুলো ভাল করে চালানোর জন্যে খুব চেষ্টা করছে। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে। কারণ লোকজন এখনো প্রেফার করে ব্যাচেলার ডিগ্রি। লোকজন প্রেফার করে একই সাথে দুইটা ডিগ্রি কমল্পিট করার। তাই তারা একই সাথে দুইটা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করে এবং দুইটা ডিফরেন্ট সাবজেক্ট এ। এই কারণে শেষমেশ যা হয় তারা কোনটাতেই ভাল হতে পারে না। সবকিছুতে তারা অ্যাভারেজ থেকে যায়।

বাংলাদেশ থেকে আইটি প্রফেশনাল বা এডুকেশন স্পেশালিস্টদের প্রসেস করে এই দেশে কাজে লাগানোর কি সম্ভাবনা আছে?

মনিরুল ইসলাম : বাংলাদেশ থেকে আইটি স্পেশালিস্ট আমরা এখানে কীভাবে নিয়ে আসব? আমরা যেটা করতে পারি? এখানে আপনার কোন একজন এসে থাকতে পারে। যিনি এই প্রজেক্টগুলো ধরবেন। বাংলাদেশের প্রথমে শুরু করতে পারেন ফ্রি ল্যান্সার দিয়ে কাজ। বাংলাদেশে এখন প্রচুর ফ্রি ল্যান্সার আছে- যারা কাজ করছে এবং তারা বিখ্যাত হচ্ছে। এখানে আমার পরিচিত একজন ফ্রেন্ড আছে সে জাপানের হয়ে কাজ করেন। এখান থেকে তারা সফটওয়্যার ডেভলপড করেন জাপানের জন্যে। তাই বাংলাদেশ থেকে আমরা যেটা করতে পারি এখানে আপনার একজন থাকবেন যিনি বাংলাদেশ থেকে আইটি প্রফেশনালস ম্যান পাওয়ার ইম্পোর্ট করবেন। এখনো কম্বোডিয়াতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন সেই থিওরী বেইজ। তারা ক্লাসে যায় ২০০ জন স্টুডেন্ট একটা ক্লাসে। লেকচারার ডেলিভারি করছে টেক্সট বুক থেকে। তাদের কোন মার্কেট এবং ইন্ডাষ্ট্রি এক্সপেরিয়েন্স নেই। এই সমস্যার জন্যে স্টুডেন্ট মার্কেটে গিয়ে কাজ করতে পারছে না। তাদের আলাদা ট্রেনিং দরকার হচ্ছে। সেখানে এখানকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো আমরা যা করছি তা হলো- আমাদের প্রোগ্রামগুলো সব ইন্ডাষ্ট্রি বেইজড। তাই বাংলাদেশ থেকে আইটি প্রফেশনালসদের আনার জন্যে এখানে একজন রিপ্রেজেন্টিটিভ দরকার। এখানে বাংলাদেশের কিছু আইটি প্রফেশনালস কাজ করেছেন। তারপরে তারা বিদেশে চলে গেছেন। এই দেশে কমিউনিকেট করার জন্যে একজন রিপ্রেজেন্টিটিভ দরকার। সরকার, বিভিন্ন মিনিষ্ট্রি এবং প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো যাদের আইটি সাপোর্ট দরকার তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যে। সফটওয়্যার ডেভলপার, ডাটা বেজড ডিজাইনার যাদের দরকার তারা ওই প্রতিনিধির মাধ্যমে যাতে বাংরাদেশ থেকে নিয়ে আসতে পারেন। এছাড়া বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচুর ফ্রি ল্যান্সার ডেভলপার আছে তাদের কাছে যাবে। তারা কাজগুলো করবে এবং এখানে পাঠাবে। এই সব যদি এখনই শুরু করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে এখানে আইটি সফটওয়্যার ডেভলপার ফার্ম গড়ে উঠবে এবং এই সব প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশিরা কাজ করবেন। বাংলাদেশ পাকিস্তান ভারত আইটির জন্যে বিশ্বে নাম করা। আমি যখন প্রথম জব পাই তারা আমাকে বলেছেন- তুমি কি ম্যাথ পড়াতে পারবে? তুমি তো বাংলাদেশি? আসলে তাদের ধারণা হলো- বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার এই দিকের মানুষেরা সায়েন্স এবং ম্যাথমেটিকস এ অনেক ভালো।

এখানে প্রফেশনালসদের আনার প্রক্রিয়া কি সহজ?

মনিরুল ইসলাম : বাংলাদেশের প্রফেশনালদের আনা এবং তাদের কাজ করার প্রক্রিয়া আস্তে আস্তে স্মুথ হয়ে যাচ্ছে। কম্বোডিয়াতে কিন্তু এর আগে স্টুডেন্ট ভিসা বলতে কিছু ছিল না। সব ভিসা ছিল বিজনেস ভিসা এবং ট্যুরিস্ট ভিসা। এখন কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসা এবংস্পাউস ভিসা এই সব চালু হচ্ছে। ফরেন ইনভেস্টররা যাতে ভালভাবে আসতে পারে এই দেশে সেই সিষ্টেম উন্নত করা হচ্ছে। এখানে কিন্তু কোন কোম্পানী সেট আপ করা সহজ।

বাংলাদেশি ইনভেস্টররা এখানে আসলে তাদের ভবিষ্যত কী?

মনিরুল ইসলাম : এখানে আসলে হার্ড টাইটেল পাওয়া যাবে না। ল্যান্ড কিনলে তার টাইটেল পাওয়া যাবে না যে, আপনি ল্যান্ডের মালিক। কিন্তু আপনি যদি একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু পারবেন, আবার অফিস ওপেন করতে চাইলেও পারবেন। অফিস ওপেন করলে আপনি যত লোক হায়ার করবেন প্রসিডিউর মেইনটেইন করলে সহজে ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে যাবেন। সবাই লিগ্যালি সবকিছু করছে। শুধুমাত্র সরকার কারো কাছে সম্পত্তি বিক্রি করে না। ল্যান্ড লীজ নেওয়া যাবে সরকারের কাছ থেকে।

আপনি কম্বোডিয়াতে ক্যাননের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এই বিষয়ে কিছু জানতে চাই?

মনিরুল ইসলাম : ছোটবেলা থেকে ফোটগ্রাফি আমার শখ ছিল। প্রথম আমি যখন কম্বোডিয়াতে আসি। এখানে ক্যাননের একটি ফটো কম্পিটিশন হয়েছিল- ক্যানন ফটো ম্যারাথন। আমি তখন এই কম্পিটিশনে যোগ দেই। আমি সেই কম্পিশনে জয় লাভ করি। তারা আমাকে অ্যাপ্রোচ করে এবং আমাকে সিঙ্গাপুরে পাঠায় সেখানে একটা প্রডাক্ট লঞ্জিংয়ের জন্যে। সিঙ্গাপুর ঘুরে যখন এখানে আবার ফেরত আসি তারপরে এদের হয়ে কাজ শুরু করি। এখানে আমার কাজ হলো- আমি প্রডাক্ট লঞ্চ করি। প্রডাক্ট রিভিউ করি এবং  ক্যাননের কিছু কিছু অ্যাসাইনমেন্টে কাজ করি আমি। ক্যাননের জন্যে আমাদের বাংলাদেশেও অনেক বড় অপরচুনিটি আছে। বাংলাদেশে অরিজিনাল ক্যানন ষ্টোর মনে হয় এখনো নাই। ক্যাননের ফটো ম্যারাথন বা বিভিন্ন যেসব ফটো কম্পিটিশন হচ্ছে বাংলাদেশেও ওই জিনিসগুলো ওপেন করা হয়েছে।

বাংলাদেশী গার্মেন্টস টেকনিশিয়ানদের ব্যাপক চাহিদা আছে কম্বোডিয়াতে

ইমাম হোসাইন, কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশী গার্মেন্টস ব্যবসায়ী

আপনি এই দেশে মূলত গার্মেন্টস এবং এগ্রিকালচার বিজনেসের সাথে জড়িত? এখানে আপনার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার কেমন হয়েছে?

ইমাম হোসাইন: আমি ২৩ বছর ধরে কম্বোডিয়াতে বসবাস করছি। প্রথমে এখানে ছোট চাকরি দিয়ে জীবন শুরু করেছিলাম। তারপর সেখান থেকে প্রথমে আমি গার্মেন্টস ষ্টকের ব্যবসা শুরু করি। এরপরে আমি কিছু এগ্রিকালচার ফার্মিং এর সাথে জড়িত হই। আমি কিছু ল্যান্ড খরিদ করে ফার্মিং শুরু করি। আর এখন আমি এই দেশে বাংলাদেশের মত এক জমিতে তিন ফসলী শস্য আবাদের উদ্যোগ নিয়েছি।

এই ২৩ বছরে আপনারা সফলতা কী ব্যবসা বাণিজ্যের?

ইমাম হোসাইন: আমি মনে করি এখানে এসে অনেক কিছু করতে পেরেছি এবং আমার ফ্যামিলি ও বাংলাদেশের জন্যও কিছু করতে পেরেছি। এই দেশের বর্তমানে আমি যে অবস্থায় আছি তাতে বাংলাদেশ থেকে যদি কেউ এসে এই দেশে ব্যবসা বাণিজ্য করতে চায় তবে তার জন্যে অনেক সুযোগ সুবিধা এখানে আছে। যে কোন ব্যবসার জন্যে এই দেশ খুব সহজ। তার কারণ হলো- এখানকার নিয়ম কানুন খুব বেশি না। শুধু ল্যান্ড কিনতে গেলে লোকাল কাউকে ৫১ শতাংশ শেয়ার দিয়ে নিজের নামে ৪৯ শতাংশ রাখতে হয়। এইভাবে কোম্পানি করে ওই ব্যক্তি আবার আদালতে লিখিত দেন তার নামটা শুধু ব্যবহার করা হচ্ছে।

কী পরিমাণ বাংলাদেশি মানুষ এখন কম্বোডিয়াতে অবস্থান করছেন?

ইমাম হোসাইন: বাংলাদেশিদের মধ্যে বর্তমানে এখানে অনেকেই আছেন। বাংলাদেশিদের মধ্যে এখানে আমাদের দুইভাই আছেন তারা গার্মেন্টস করেছেন। এগ্রিকালচারে বাংলাদেশ থেকে ২০০৩ সালে বাংলাদেশি তিনি সরকারি চাকরীজীবী ছিলেন। এই ব্যক্তি সুফি টাইপের মানুষ। হিযরত করার নিয়ত করে তিনি এই দেশে চলে আসেন ২০০৩ সালে।

হিযরত?

ইমাম হোসাইন: জ্বি-হ্যাঁ।

এখানে হিযরত করার সুযোগ কোথায়? অধিকাংশ মানুষই তো বুদ্ধিস্ট?

ইমাম হোসাইন: তিনি আসলে চেয়েছিলেন চায়না বা অন্য কোথাও করার জন্যে কিন্তু তিনি সুযোগ পাননি সেই সব জায়গায় তাই এই দেশে এসেছিলেন ইসলাম প্রচারের জন্যে।

কে তিনি? তার নাম কি?

ইমাম হোসাইন: মামুনুর রশীদ। নারায়নগঞ্জের ভুঁইগড়ে তার আসল বাড়ি। তার সাথে কন্ট্যাক্ট করে অনেকেই একসাথে ল্যান্ড কিনে ফার্মিং করছেন।

তার প্রতিষ্ঠানের নাম কি?

ইমাম হোসাইন: তার প্রতিষ্ঠানের নাম এ এম এশিয়া কম্বোডিয়া। তার নিয়ত ছিল হিযরত করা, এখানে ইসলাম প্রচার করার জন্যে তিনি বাংলাদেশ থেকে এই দেশে এসেছিলেন। কিন্তু ২০১৬ সালে তিনি মারা যান। এখানে আরও অনেকে আছেন। ব্যবসা বাণিজ্য করছেন, সুযোগ সুবিধা আছে যথেষ্ট এই দেশে।

এই দেশে বাংলাদেশের গার্মেন্টস এর মত ষ্কিল ওয়ার্কার অভাব আছে

আবুল খায়ের, কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী

বাংলাদেশ ছেড়ে কেন কম্বোডিয়াতে গার্মেন্টস ব্যবসা করছেন। কীভাবে শুরু করেছিলেন এই উদ্যোগ? আর বর্তমানে আপনার ব্যবসার পরিসর কী?

আবুল খায়ের: ২০০২ সালে প্রথম আমি কম্বোডিয়ায় আসি একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে গার্মেন্টস বায়িং হাউজে। এরপরে আমি লাউস কম্বোডিয়া মালয়েশিয়াতে সেই প্রতিষ্ঠানের কাজ দেখতাম। এরপরে ২০০৯ সালে আমি নিজেই উদ্যোগী হয়ে গার্মেন্টস বিজনেস শুরু করেছি।  কম্বোডিয়াতে প্রাইমারি অবস্থায় একটা ফ্যাক্টরি শুরু করেছি ২০১০ সাল থেকে। এরপরে আমি ২০১৬ সালে আরেকটি ফ্যাক্টরি চালু করেছি। বর্তমানে আমার দুইটা ফ্যাক্টরি। আমি এখানে  ব্যবসা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। যদিও এখানকার ওয়ার্কারদের সেলারী একটু হাই। আমাদের কাষ্টমাররা আমাদেরকে অর্ডারগুলো দেয়  তার দাম বাংলাদেশের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি দেয়। তারাও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

আপনার ওয়ার্কাররা কি বাংলাদেশি নাকি কম্বোডিয়ান?

আবুল খায়ের: আমার এখানে ১২ জন বাঙালি আছেন। তারা সুপারভাইজার মেকানিক্স টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট সাইড দেখেন। আর ওয়ার্কারদের সবাই কম্বোডিয়ান।

আমরা জানি আপনি বাংলাদেশের একজন সিআইপি গার্মেন্টস সেক্টরের। আমাদের দেশে গার্মেন্টস সেক্টরে আপনার উদ্যোগ কী আছে?

আবুল খায়ের: বাংলাদেশের সাভারে আমার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী আছে। সেখানে আমি নীট আইটেম করি। আমি বাংলাদেশকে হেল্প করার জন্যে কম্বোডিয়া থেকে যে প্রফিট বা টাকা আয় করি। তা বাংলাদেশে কন্টিনিউ আমি ইনভেষ্ট করছি।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কম্বোডিয়া সফর থেকে দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্ভাবনা কি বেড়েছে আগের তুলনায়?

আবুল খায়ের: প্রধানমন্ত্রীর সফরে বিজিএমইএ এর প্রেসিডেন্টও এসেছিলেন তাদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন গার্মেন্টস সেক্টরে কীভাবে কী করা যায়? প্রধানত বাংলাদেশের ওয়ার্কার এই দেশে আনতে পারলে ভাল হতো। যেহেতু এখানে ওয়ার্কারদের সেলারি বাংলাদেশের তুলনায় দ্বিগুণ। এছাড়া বাংলাদেশের ওয়ার্কারাও খুবই ষ্কিল। কিন্তু হয়তো তা এখনো কনফার্ম হয় নাই। কিন্তু গার্মেন্টস এর যে অপরচুনিটি এখানে আমি যে বিষয়টি ফোকাস করেছি যে, আমাদের দেশ থেকে একসেসরিজগুলো যাতে আমরা এই দেশে আনতে পারি। যেটা কম্বোডিয়ায় নিজেদের কোন প্রডাক্ট নাই এবং নিজেদের কোন একসেসরিজ নাই। তারা ভিয়েতনাম চায়না থেকে এই সব আনে ম্যাটেরিয়ালস। যে সব বাংলাদেশী ফ্যাক্টরিগুলো লোকালি তৈরি করে। একসেসরিজ এর ব্যাপারে দেখেছি চায়না ভিয়েতনাম বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় প্রাইস কম। আমরা যদি এই মার্কেটাঁ এখানে ধরতে পারি তাহলে কম্বোডিয়ায় আমাদের বিশাল সম্ভাবনা তৈরী হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশে প্রচুর টেকনিশিয়ান আছে এবং খুবই কম বেতনে পাওয়া যায়। তারা এই দেশে আসলে গার্মেন্টস সেক্টরে মেকানিক্স, টেশনিশিয়াস, লাইন চীফ, প্যাটার্ন মাষ্টার এই রকম টাইপের কর্মীর হিউজ ডিমান্ড আছে এই দেশে। আমাদের সরকার যদি ভিসার ব্যাপারে নেগোসিয়েশন করে এবং যদি অ্যাম্বাসি থাকে এখানে তাহলে সহজে বাংলাদেশের টেনিশিয়ানরা এখানে এসে কাজ করতে পারেন। এই সেক্টরে ব্যাপক জব অপরচুনিটি আছে।

আপনার বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এবং এখানকার প্রতিষ্ঠান কী এক্সপোর্ট করেন এবং কোন দেশে এক্সপোর্ট করেন?

আবুল খায়ের: আগে টেশনিশয়ান বলতেই হংকং চাইনিজরা আমাদের দেশে গিয়ে ট্রেইন আপ করতো। কিন্তু আমাদের দেশের লোকের মোটামুটি এখন বিদেশীদের প্রয়োজন হয় না। বাংলাদেশীরা বর্তমানে সমস্ত মেশিন নিজেরা সেটআপ করতে পারে। মেশিন কোম্পানী ক্যাটালগ দিয়ে দেয় তারা নিজেরা সেট আপ করে- বাংলাদেশের ছেলেরা এখন ভাল ট্রেইন আপ এবং বাংলাদেশের ষ্টাফ যারা এখানে আছেন তাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের ফ্যাক্টরিতে আমরা হেল্প এর জন্যে দেই। তারা খুব ভাল এক্সপার্ট। এই টীমগুলো এই দেশে আসলে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারে এবং এই মার্কেটটা কাভার করতে পারে। দ্বিতীয়ত আপনি যে বলেছেন লেভেলের কথা। লেভেলটা সবসময়ই যে দেশে যেই পণ্য উৎপাদন হবে ওই দেশের নামই দিতে হবে। তাই কম্বোডিয়ার পোশাকে আমরা মেড ইন কম্বোডিয়াই লিখি। আর বাংলাদেশে তৈরি হলে মেড ইন বাংলাদেশই লিখি।

বাংলাদেশের জনশক্তি এই দেশে রপ্তানি করতে হলে করণীয় কী আছে?

আবুল খায়ের: আমি বরাবরই বলি- বাংলােেদশের টেকনিশিয়ানরা যাতে এই দেশে আসতে পারে তার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের পাসপোর্ট এর ভ্যালু খুবই কম। এখানে আসলে ভিসা নিতে সমস্যা হয়। অনেক সময় বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন থেকে আসতে দেয় না। সহজে আসতে পারে না। এর কারণ আমাদেও সাথে এই দেশের কোন বিজনেস কন্ট্রাক্ট, কোন এম্বাসি নাই, যে কেউ ইচ্ছা করলে আসতে পারবে না- এই জটিলতা আছে। এই সব জটিলতা দূও করা হলে- এই মার্কেট থেকে আমরা প্রচুর ফরেন কারেন্সি আয় করতে পারবো। আমরা বর্তমানে এই দেশে সীমিত বাঙালি আছি কিন্তু আমরা এই পর্যন্ত এই দেশ থেকে যে পরিমাণ ফরেন কারেন্সি পাঠিয়েছি তা যদি আনুপাতিক হারে দেখা যায় তাহলে অন্য যে কোন দেশের তুলনায় অনেক বেশি।

এই কারেন্সি কি রেমিটেন্স আকারে নাকি ট্যাক্স আকারে?

আবুল খায়ের: রেমিটেন্স আকারে এখান থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে তারপরে ইমিগ্রেশনে যারা টাকা ক্যারি করেন আমরা কাষ্টমসের ক্লিয়ারেন্স নিয়ে টাকা পাঠাই।

কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানি ম্যানুফ্রাকচারিং প্লান্ট তৈরি করতে পারেন

হুমায়ূন কবীর, কম্বোডিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি ওষুধ ব্যবসায়ী

 

এই দেশের আপনার উন্নয়ন উদ্যোগ এবং ব্যবসা বাণিজ্যের শুরু হয়েছিল কীভাবে?

হুমায়ূন কবীর : আমি প্রথমে সিঙ্গাপুরে আসি। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সিঙ্গাপুরের একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতাম। ১৯৯২ সালে তারা আমাকে কম্বোডিয়াতে পাঠায়। কম্বোডিয়ায় তখন ইউএন মিশন জাস্ট শুরু হয়েছে। আমার কোম্পানী এই মিশনে কাজ করার জন্যে আমাকে পাঠায় ১৯৯২ সালে। তখন থেকেই আমি এখানে। ইউএন মিশনে যখন রিপ্রেজেন্টিটিভ হিসেবে কাজ করতাম তখন আমার প্রথম ফার্মাসিউটিক্যাল এর ১ মিলিয়নের অর্ডার ছিল। এই অর্ডার পাওয়ার পরে আমার মধ্যে তাগিদ অনুভব হলো যে, আমি নিজেই একটা ব্যবসা করতে পারি। এরপরেই আমি আমার কোম্পানী ওপেন করি। আমার কোম্পানীর নাম- বিদেশ ট্রেডিং কোম্পানী লিমিটেড। এটি এক্সপোর্ট, ইম্পোর্ট, ডিষ্ট্রিবিউশন, সেলস এর ব্যবসা করে কম্বোডিয়াতে। আমি প্রায় ৭ টা ম্যানুফ্রাকচারের সাথে কাজ করি।

আপনি মূলত ওষুধ ব্যবসায়ী। এই দেশে ওষুধ ব্যবসার গতি প্রকৃতি সম্পর্কে কিছু জানতে চাই?

হুমায়ূন কবীর : আমার কোম্পানির নাম- বিদেশ ট্রেডিং কোম্পানি। বিদেশ বলতে বাংলায় যেটি দেশের বাইরে থাকে তাকে বোঝায়। আর বিদেশ হলো বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করা। তাই আমি এইখানে দুইটাই মিনিং বুঝিয়েছি  যে, আমি একজন বাংলাদেশি কিন্তু বিদেশে বিজনেস করি এবং দেশকে রিপ্রেজেন্ট করি।

ওষুধ ব্যবসায় আপনার সফলতা কতোটা?

হুমায়ূন কবীর : আমি ওষুধ ব্যবসায় খুবই ভাল অবস্থানে আছি। কারণ আমার সাথে ৭ টি ম্যানুফ্রাকচারার এক্সক্লুসিভলি কাজ করছে। প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার এর ব্যবসা হয় আমার প্রতিবছর। ওষুধের মার্কেট সাইজ হলো ১.৫ বিলিয়ন ডলার। আর এই মার্কেটের ৬০ শতাংশ কাভারড বাই ইন্ডিয়ান প্রডাক্টস। এছাড়া আছে ফ্রান্স, চায়না ও কোরিয়া। বাংলাদেশের মেডিসিন কেলমাত্র শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের কোন কোন ওষুধ এখানে আসে?

হুমায়ূন কবীর : বাংলাদেশের বেক্সিমকো, স্কয়ার তাদের প্রডাক্ট দুই বছর যাবৎ ইন্ট্রডিউস করেছে।

ইনসেপ্টা আছে?

হুমায়ূন কবীর :  ইনসেপ্টা, জেনারেল ফার্মাও আছে। মাত্র ২ পারসেন্ট মার্কেট শেয়ার। বড় আকারে তারা এখনো আসতে পারেননি। কারণ বাংলাদেশি প্রডাক্ট এর দাম ইন্ডিয়ার তুলনায় অনেক বেশি। কারণ বাংলাদেশ ইন্ডিয়া থেকে ম্যাটেরিয়াল কেনে। তাই ইন্ডিয়ার মত কম দামে তারা ওষুধ দিতে পারে না। কম্বোডিয়া সেনসেটিভ মার্কেট। এই মার্কেট প্রাইস এবং কোয়ালিটি দুটোকেই খুব গুরুত্ব দেয়। এই কারণেই ইন্ডিয়া এই মার্কেটের ৬০ শতাংশ দখল করে আছে।

আরও কীভাবে বাংলাদেশি ওষুধ কম্বোডিয়াতে রপ্তানি করা যায়?

হুমায়ূন কবীর :  এই দেশে মিনিস্ট্রি অব হেলথ আছে। যারা কোয়ালিটি কন্ট্রোল মেইনটেনন করে। বাংলাদেশি ওষুধ বেশি করে রপ্তানি করতে হলে কোয়ালিটি কন্ট্রোল এখানে পাস করতে হবে। তাদের ল্যাবরেটরি টেস্টে সাকসেসফুল হতে হবে। মেইনলি মিনিস্ট্রি অব হেলথ এবং জাপানীজ অ্যাম্বাসির সাথে টাই আপ করে এখানে কীভাবে কোয়ালিটি কন্ট্রোল করা যায়- তা নিয়ন্ত্রণ করে। বাংলাদেশের ম্যানুফ্রাকচারারদেরকে কোয়ালিটি এবং প্রাইসের উপরে নজর দিলে এখানে তাদের অনেক সম্ভাবনা আছে। এখানে যে বর্তমানে প্রটেনশিয়ালিটি গ্রো করেছে তার জন্যে যথার্থ সময় এখন। বাংলাদেশের ম্যানুফ্রাকচারাদের এই দেশে আসা উচিত এবং এই দেশে ম্যানুফ্রাকচারিং প্ল্যান্ট তৈরী করা দরকার। কারণ এখানে খুবই অল্প সংখ্যক প্ল্যান্ট আছে যারা ২-১০ পারসেন্ট মার্কেট কাভার করতে পারে। ৯০ শতাংশ মেডিসিন আসে বিদেশ থেকে।

এই দেশের জনসংখ্যা তো কম। তাই প্ল্যান্ট করে ব্যবসা করা কী সম্ভব?

হুমায়ূন কবীর :  আমার মনে হয় সেই সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কম্বোডিয়া সফর করেছেন সম্প্রতি। এই সফরের সুবাতাস ইতোমধ্যে বইতে শুরু করেছে কম্বোডিয়ানদের মধ্যে। এই দেশের তরুণরাও বাংলাদেশের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এখন এই দুই দেশের মধ্যে যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে। আমার মনে হয় এটি যদি ভিসা ফ্রি সেতুবন্ধন করা হয় তাহলে দুই দেশের মানুষের জন্যেই তা ভাল হবে এবং এখানে বিনিয়োগ করতে সবাই তাহলে আগ্রহী হবেন ।