নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম ওরফে শিমুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়েছে।
চ্যানেল আই অনলাইনকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গ্রিন রোডের স্টাফ কোয়ার্টারে জানাজা হয় শিমুর। এরপর ৯টার দিকে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় খোকন জানান, আজকে আসরবাদ শিমুর জন্য মিলাদ দেয়া হয়। এসময় শিমুর শ্বশুর, ননদ সহ ওই পরিবারের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। আমাদের দিক থেকেও অনেকেই মিলাদে অংশ নেন। শিমুর দুই সন্তানও সেখানে ছিলো।
খোকন বলেন, শিমুর বাচ্চাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে সবাই চিন্তা ভাবনা করছে। এই নির্মম পরিস্থিতিতে বাচ্চাগুলো খুব অসহায় হয়ে পড়েছে। আজকে আসর বাদ মিলাদ শেষে শিমুর দুই বাচ্চাকে তাদের ছোট খালার বাসায় রেখে এসেছি। শিমুর পরে খালাকেই (ফাতেমা নিশা) বাচ্চা দুটো বেশি পছন্দ করে। তাই আপাতত আমাদের ছোট বোনের কাছেই বাচ্চা দুটো আছে।
সোমবার শিমুর মরদেহ উদ্ধারের রাতেই পুলিশের কাছে আটক হন তার স্বামী সাখাওয়াত আলীম নোবেল। রাতভর জেরার পর হত্যার দায় স্বীকার করে সে। বিষয়টি মানতে পারছেন না দুই পরিবারের কেউই।
খোকন বলেন, আজকে শিমুর শ্বশুর ও তাদের পরিবারের সাথে কথা হলো। তারাও বিষয়টি নিয়ে মর্মাহত। এমন নির্মম ঘটনায় তারাও বাকরুদ্ধ। শিমু-নোবেলের দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে, এগুলো নিয়ে এই মুহূর্তে না ভেবে পরবর্তীতে সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান তারা।
খোকন বলেন, শিমুকে হত্যার দায় স্বীকার করার কথা জেনেই আমরা তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছি। সেই সঙ্গে তার সহযোগী ফরহাদের নামেও মামলা হয়েছে। ওদেরকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিকভাকে স্বীকারোক্তি দিয়েছে, কিন্তু কেন, কীভাবে আমার বোন শিমুকে খুন করা হলো – এ বিষয়ে আমরা জানতে চেয়েছি। পুলিশ আমাদের ধৈর্য্য ধরতে বলেছেন।
রবিবার (১৬ জানুয়ারি) অভিনেত্রী শিমুকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিলো না। অভিভাবকরা নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন কলাবাগান থানায় । পরে জিডিসূত্রে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়।
পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার কেরানীগঞ্জ থেকে বস্তাবন্দি একটি লাশ উদ্ধার করে। শিমুর পরিবারের পক্ষ থেকে পরে লাশটিকে শনাক্ত করা হয়।
১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৫ সিনেমায় অভিনয় করেন শিমু। তিনি কাজী হায়াতের ‘বর্তমান’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন। পরে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষি নজরুল ইসলাম, শরিফ উদ্দিন খান দিপুসহ আরও বেশ কিছু পরিচালকের সিনেমায় কাজ করেন।
কয়েক বছর ধরে একটি বেসরকারি টিভির মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন শিমু। টুকটাক নাটকে কাজ করতেন। পাশাপাশি তার নিজের নাটক নির্মাণের প্রোডাকশন হাউজ ছিল বলে জানা যায়।